Advertisement
Advertisement

Breaking News

বছরভর হাঁচি-কাশি কি অ্যালার্জির কারণেই?

হাঁচি কিন্তু অ্যালার্জির কারণেও হতে পারে৷ এই ধরনের অ্যালার্জি থেকে দূরে থাকতে সতর্ক হন শুরুতেই৷

allergy causes Sneezing across the season
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:August 27, 2016 4:32 pm
  • Updated:June 12, 2018 4:30 pm

পরামর্শ দিচ্ছেন ডাঃ অনিমেষ দেব৷

সকালে ঘুম থেকে ওঠা মাত্রই কিংবা রাতে শুয়ে গায়ে চাদর টানলেই হাঁচি৷ পুরনো বইয়ের তাকে বই খোঁজা, এসি ঘরে থাকা, রাস্তায় বেরনো–হাঁচি যেন কিছুতেই পিছু ছাড়তে চায় না৷ ঠান্ডা লাগার কারণ নেই, তাও হাঁচির দাপট বাড়তেই থাকে৷ এই হাঁচি কিন্তু অ্যালার্জির কারণেও হতে পারে৷ এই ধরনের অ্যালার্জি থেকে দূরে থাকতে সতর্ক হন শুরুতেই৷

Advertisement

হাঁচি, কাশি, অ্যালার্জি:

Advertisement

ঘনঘন সর্দি, কাশি, হাঁচির কারণ অ্যালার্জিও৷ ভাইরাস ইনফেকশন থেকে এই সমস্যা হয়৷ এছাড়াও অ্যালার্জিক রাইনাইটিস থেকেও হতে পারে হাঁচি, কাশি৷ বর্ষাকালে, শীতকালে এই কারণে সর্দি-কাশি হয়৷ এছাড়া ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস থেকেও হতে পারে৷

অ্যালার্জিক রাইনাইটিস দুই ধরনের৷ সিজনাল রাইনাইটিস ও পেরেনিয়াল রাইনাইটিস৷

সিজনাল রাইনাইটিসেই বেশিরভাগ মানুষ আক্রান্ত হয়৷ সারা দেশে ৬০০ মিলিয়ন মানুষ এই অ্যালার্জির সমস্যায় ভুগছেন৷ ধুলো, ফুলের রেণু থেকে এই অ্যালার্জি হয়৷ পেরেনিয়াল রাইনাইটিস সারা বছর ধরেই চলে৷ ঘরে জমে থাকা ধুলো যার মূল কারণ৷ ঘরের ধুলোয় মিশে থাকে বিভিন্ন ফাংগাস, পতঙ্গ যা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস তৈরি করে৷ শ্বাসের মাধ্যমে অ্যালার্জেন্স শরীরে পৌঁছলে অ্যালার্জি হয়, এই অ্যালার্জি যখন ফুসফুসে প্রভাব ফেলে তখনই তাকে বলা হয় অ্যাজমা৷ বাচচাদের দেখা যায় সারাদিন ভাল থাকে, কিন্তু রাতে দেখা যায় আচমকা সর্দি, কাশি, অ্যাজমার লক্ষণ৷ বড়দেরও অ্যাজমার কারণে কাশি হয়৷ এছাড়াও আপার রেসপিরেট্যারি ট্র্যাক ইনফেকশন ও লোয়ার রেসপিরেট্যারি ট্র্যাক ইনফেকশন থেকেও সর্দি, কাশি হয়৷

কীভাবে বুঝবেন:

  • সর্দি-কাশি দীর্ঘদিন ধরে থাকলে তার কারণ অ্যালার্জি কি না বুঝতে প্রথমেই ওই রোগীর আনুষঙ্গিক অন্য রোগ আছে কি না তা সম্পূর্ণ যাচাই করে দেখা জরুরি৷
  • অ্যালার্জিক রাইনাইটিস বা সর্দি, কাশি  হলে দেখতে হবে এছাড়াও তার চোখ চুলকানো, অ্যাজমা, চোখ লাল হয় কি না, গায়ে চুলকানি, নাকে কোনও সমস্যা এবং পরিবারে কারও এই ধরনের অ্যালার্জি আছে কি না– সমস্ত বিবেচনা করা জরুরি৷
  •  পরিবারে কারও বা বাবা-মায়ের অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে তা থেকেও পরবর্তী প্রজন্মের অ্যালার্জি হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি থাকে৷
  • মডিফায়েড স্কিন প্রিক টেস্ট করা অত্যন্ত জরুরি৷ এই টেস্ট করেই বোঝা সম্ভব কী কারণে বা কী থেকে অ্যালার্জি হচ্ছে৷

অ্যালার্জির লক্ষণ:

  • খুব বেশি হাঁচি হতে থাকবে৷
  • নির্দিষ্ট সময় (শীতকাল কিংবা বর্ষাকাল) হাঁচি, কাশির মাত্রা বেশি বাড়়তে থাকবে৷
  • সারা বছর ধরেই হাঁচির কারণ অ্যালার্জি হতে পারে৷ মাঝে মাঝে হাঁচি ভাইরাসের কারণেও হয়৷
  • গা চুলকানো, চোখ জ্বালা, হাঁপানি, চোখ ছলছল, নাক দিয়ে সর্দি জল পড়া৷
  • প্রায়ই মাথার যন্ত্রণা, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া৷
  • চোখের নিচে কালো দাগ৷
  • ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, খুব মোটা হয়ে যায়৷

অ্যালার্জির জন্য দায়ী কী:

  • অ্যালার্জেন্স শরীরের সংস্পর্শে এলে ‘হিস্টামিস’ কেমিক্যাল নির্গত হয়৷ অতিমাত্রায় নিঃসৃত হলে তা থেকে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস হয়৷
  • ভাসমান ধূলিকণা, ঘরে জমে থাকা ধুলো, মাকড়শার জাল, আরশোলা৷
  • বিভিন্ন্ ফুলের রেণু৷
  • কুকুর, বিড়ালের লোম, কটনডাস্ট (বালিশ, বিছানার তুলো)৷
  • বিভিন্ন রকমের খাবার থেকে৷
  • জিনঘটিত কারণ৷

প্রতিকারের উপায়:

  • বাইরের ধুলো থেকে বাঁচতে বেরনোর সময় নাকে ভেজা রুমাল চেপে বেরনো উচিত৷ অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে সকালে বাইরে বেরিয়ে এক্সারসাইজ না করাই ভাল৷
  • ঘরের কার্পেট, বিছানার তোশক পরিষ্কার করা উচিত৷
  • যাঁদের ফুলের রেণু থেকে অ্যালার্জি হয়, তাদের সব সময় ঘরে জানলা, দরজা বন্ধ রাখা উচিত৷ ঘরে এয়ারকন্ডিশন চললে ভাল৷
  • দূষণের কারণে ফুলের রেণু থেকে অ্যালার্জির মাত্রা ক্রমশই বাড়ছে৷
  • বাড়িতে পোষ্য থাকলে সপ্তাহে দু’দিন স্নান করানো উচিত৷
  • কোনও খাবার থেকে অ্যালার্জি হলে সেই খাবার না খাওয়াই ভাল৷
  • বাইরে থেকে বাড়ি ফিরে গা-হাত-পা পরিষ্কার করে ধুয়ে নেওয়া উচিত৷

চিকিৎসা:

  • যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু হবে, তত তাড়াতাড়ি রোগ সারে৷ দেরিতে চিকিৎসা শুরু করলে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস থেকে অ্যাজমা কিংবা অ্যালার্জিক ডার্সাটাইটিস হয়৷
  • লক্ষণ দেখা গেলে প্রথমে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পারিবারিক ইতিহাস, শরীরে অন্য অসুখ হয়েছিল কি না ও কেমন পরিবেশে রোগী থাকে সমস্ত জানানো উচিত৷
  • লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসক নাকে স্প্রে, ও অন্যান্য চিকিৎসা করতে পারেন৷ অ্যালার্জি ধরা পড়লে তার মূল চিকিৎসা স্পেসিফিক ইমিউনোথেরাপি, তিন থেকে পাঁচ বছর ধরে এই ট্রিটমেণ্ট করা হয়৷
  • যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু হবে, রোগ সারবেও তত তাড়াতাড়ি৷ বাচ্চাদের ক্ষেত্রে রোগ সেরে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি৷

এই রোগ ও তার প্রতিকার সম্বন্ধে আরও জানতে ক্লিক করুন epaper.sangbadpratidin.in বা ডাক্তারবাবুকে ফোন করুন এই নম্বরে- 9477792482

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ