বিপ্লব দত্ত,কৃষ্ণনগর: পঞ্চভূতে বিলীন হলেন ভারতরত্ন। পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় হল শেষকৃত্য। রাজনীতির বৈরিতা ভুলে জননেতাকে বিদায় জানাল দেশ। উপস্থিত ছিলেন বিদেশের প্রতিনিধিরাও। কিন্তু তিনি কেবল রাজনীতিবিদ ছিলেন না। ছিলেন একজন কবি, সুবক্তা, উন্নত চিন্তার উদারচেতা মানুষ। এমন মানুষকে শিল্পকৃতি ছাড়া আর কীই বা দেওয়া যেতে পারে শেষলগ্নে? ঠিক তাই করলেন নদিয়ার এক শিল্পী। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে সাতদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। সেই ঘোষণার মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যেই শুধু বল ও জেল পেনের সাহায্যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সাতটি ছবি এঁকে তাঁকে উৎসর্গ করলেন শিল্পী সুজিত মণ্ডল।
নদিয়ার রানাঘাটের কাছে হিজুলিতে বাড়ি শিল্পী সুজিত মণ্ডলের। না, ছবিতে রং-তুলির ব্যবহার নয়, শুধুই বল ও জেল পেনের মাধ্যমে রেখচিত্রে ফুটিয়ে তোলেন বিখ্যাত ও মহান মানুষের বিভিন্ন মুডের ছবি। এর আগে ঋতুপর্ণ ঘোষ, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, মহাশ্বেতা দেবী, ওম পুরী, সুচিত্রা সেন, কালিকাপ্রসাদ, সোমনাথ চট্টোপাধ্যাদের ছবি এঁকেছেন। শিল্পীর বক্তব্য, “এমন ধরনের মানুষেরা জন্ম নেন, মানুষের ভাল করার জন্য। মানুষের পাশে থাকার জন্য।আমরা তাঁদের কাছে থেকে শুধুই নিয়ে যাই। বদলে কিছুই দিতে পারি না। কিন্তু এমন মানুষদের চলে যাওয়ার পর ভীষণ কষ্ট অনুভব করি আমি। জলভরা চোখে ওঁদের ছবি এঁকে উৎসর্গ করে কিছুটা শান্তি পাই। তাই অটলজির সাতটি ছবি তাঁর জন্য সাতদিনের শোক পালনের প্রতীক ভেবে আমি এঁকেছি।”
[রাষ্ট্রীয় স্মৃতিস্থলে শেষকৃত্য সম্পন্ন বাজপেয়ীর, পঞ্চভূতে বিলীন ভারতীয় রাজনীতির ‘অজাতশত্রু’]
ছেলের ছবি আঁকার বরাবরের অভ্যাস। এমন অভ্যাসে অবশ্য আপত্তি নেই বাবা রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল ও মা প্রমীলা মণ্ডলের। বরং এ কাজে তাঁরাও অন্যরকম তৃপ্তি পান। স্ত্রী জয়ন্তী ও ছোট্ট ছেলে অরিশকে পাশে নিয়ে সুজিত বলেন, “বৃহস্পতিবার অটলজির মৃত্যুর খবর শোনামাত্র মন খারাপ লাগে ভীষণভাবে। রাতেই মহান মানুষটার স্মৃতিচারণার জন্য তাঁর ছবি আঁকার সিদ্ধান্ত নিই। শুক্রবার বেলা এগারোটা থেকে দুটো, এই তিনঘণ্টার মধ্যে অটলজির সাতটি ছবি আঁকি। রং-তুলি ব্যবহার করে ছবি তো অনেকেই আঁকেন। তবে পেনের মাধ্যমে ছবি এঁকে তা ফুটিয়ে তোলা একটু কষ্টসাধ্যই বটে।”
নাহ, এই ছবি এঁকে কিছু প্রাপ্তির আশা সুজিতের নেই, তাঁর কাছে একজন বিরাট মাপের মানুষের জন্য এ এক সামান্য শিল্পীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন মাত্র।
[দল নয় দেশই আগে, সংসদে রাজধর্মের পাঠ দিয়েছিলেন বাজপেয়ী]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.