বিপ্লব দত্ত, কৃষ্ণনগর: দেনার দায়। স্ত্রীকে খুনের পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন স্বামী। মৃত দম্পতির নাম বাপি চক্রবর্তী ও ঝুমা চক্রবর্তী। সকালে দরজা ভেঙে মৃত বাবা-মাকে দেখতে পান বড় ছেলে বিপ্লব। নিজেই পাড়ার লোকদের খবর দেন। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার কল্যাণী পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের নতুনপল্লি এলাকায়। কল্যাণী থানার পুলিশ দেহদুটি উদ্ধারের পর জওহরলাল নেহেরু হাসপাতালে পাঠিয়েছে। গোটা ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাজারে মোটা টাকা দেনা ছিল বাপিবাবুর। তা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন ওই ব্যক্তি। সংসারেও শান্তি ছিল না। এনিয়ে মাধেমধ্যেই স্ত্রীর সঙ্গে বচসা লাগত। বুধবার রাতে তেমন কিছুই ঘটে থাকবে। তার জেরেই স্ত্রীকে খুনের পর আত্মঘাতী হয়েছেন বাপি চক্রবর্তী। এমনটাই দাবি প্রতিবেশীদের। মৃত দম্পতির ছেলেদের সঙ্গে কথা বলে একই তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে।
বাপী চক্রবর্তীর বড় ছেলে বিপ্লব জানিয়েছেন, তাঁরা দু’ভাই। দু’জনেই পড়াশোনা করেন। বাড়িতে একমাত্র রোজগেরে বাবা বাপি চক্রবর্তী। বেশ কিছুদিন ধরে দেনার ভারে প্রায় জর্জরিত তিনি। বাড়িতে সবসময় অশান্তি লেগেই থাকত। বুধবার রাত দু’টো নাগাদ পিসি তাঁকে ফোন করে জানান, বাবা মাকে মেরে ফেলেছে। ঘুম চোখে এই খবর শুনে বাবা-মায়ের ঘরে বেশ কয়েকবার ধাক্কাও দিয়েছেন। তবে কোনও সাড়া না পেয়ে ফের ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। এদিকে সকাল আটটা বেজে গেলেও বাড়িতে বাবা-মায়ের কোনও শব্দ না পেয়ে ফের দরজা ধাক্কাতে শুরু করেন তাঁরা। রাতে পিসির ফোনের কথা মনে পড়লে প্রতিবেশীদের ডেকে দরজা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেন। দেখেন বাবা বাপিবাবু সিলিংফ্যানের সঙ্গে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন। মা ঝুমাদেবীর নিথর শরীর পড়ে আছে বিছানায়। মাকে খুনের পরই আত্মঘাতী হয়েছেন বাবা। এমনটাই দাবি দুই ছেলের। ক্রমবর্ধমান দেনার চাপে যে অবসাদ বাপিবাবুকে গ্রাস করেছিল, এই ঘটনা তারই ফল। প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে তদন্তে নেমেছে কল্যাণী থানার পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.