Advertisement
Advertisement

Breaking News

‘আমাদের রাস্তা এখন থেকে আলাদা’, শুভশ্রীকে জানিয়ে দিলেন রাজ

রাজের 'নির্দেশ' পেয়ে শুভশ্রী ফ্ল্যাট ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন৷

Let’s part ways, Raj Chakraborty tells Subhasree Ganguly
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:May 29, 2017 4:58 am
  • Updated:July 11, 2018 4:07 pm

ইন্দ্রনীল রায়: শুক্রবার সকালে শুভশ্রীকে তাঁর হাইল্যান্ড পার্কের ফ্ল্যাট থেকে একরকম বের করে দিয়েছেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী৷ সকালে উঠে নাকি রাজ বলেন, “আমি খুব ইমোশনাল মানুষ কিন্তু তোমার সঙ্গে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়৷ আমার নানারকম মানসিক সমস্যা হচ্ছে৷ আমি এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যাচ্ছি৷ তুমিও ফ্ল্যাট ছেড়ে চলে যাও৷ আমার ড্রাইভার তোমায় বাড়ি ছেড়ে আসবে৷ আর প্লিজ পায়ে পড়ছি, দয়া করে তোমার পরিবারের লোক যেন মিডিয়ায় খবরটা না দেয়৷”

[ফের ঘনিষ্ঠ রাজ-মিমি, শুনেই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা শুভশ্রীর]

তবে এটা সবে প্রথম সিন৷ নাটকের সবে শুরু৷ ব্যাপারটা এতটাই বিস্ফোরক যে, ‘কফিহাউস’-এর আজকের পূর্বনির্ধারিত কভার স্টোরিও শেষ মুহূর্তে বদলানো হয়েছে৷ ঘটনার সূত্রপাত আঠারো মে, বৃহস্পতিবার৷ সেদিন সংবাদ প্রতিদিন-এর বিকেলের এডিশনের একটি খবর বেরোয়, যা চাঞ্চল্য ফেলে দেয় গোটা শহরে৷ খবরটির শিরোনাম ছিল ‘রাজ-মিমি-শুভশ্রীর ত্রিকোণ প্রেমে নয়া মোচড় টলিউডে’৷ সংবাদ প্রতিদিন-এর বিকেলের এডিশনেই প্রথম জানা যায়, অশান্তির চোটে আগের দিন রাতে রাগ-অভিমানের বশে গায়ে আগুন দিয়ে সুইসাইড করতে যাচ্ছিলেন শুভশ্রী৷ কারণ, তার একদিন আগে মিমি চক্রবর্তী স্লিপিং পিলস খেয়ে এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে, পরের দিন মিমির বাড়িতে গিয়ে তাঁর দেখভাল করতে শুরু করেন রাজ৷ মিমির বাড়িতে সারা দিন কেন ছিলেন রাজ, সেই নিয়েই শুরু হয় তাঁর আর শুভশ্রীর অশান্তি৷

Advertisement

এর আগে দেবের সঙ্গে ব্রেকআপের পরেও শুভশ্রী অসম্ভব ভেঙে পড়েছিলেন৷ শোনা গিয়েছিল সেই সময় ও এরকম হঠকারী সিদ্ধান্ত তিনি নিতে গিয়েছিলেন৷ এই খবরটা মিডিয়ার বেশ কিছু জন খবরটা জানলেও সেটা লেখা হয়নি৷ এ রকম বিস্ফোরক খবর বেরনোর পর থেকেই এই প্রতিবেদককে রাজ চক্রবর্তী ক্রমাগত ফোন করতে থাকেন৷ ‘সাংবাদিকতার নীতি-আদর্শ নিয়ে দীর্ঘ বক্তৃতা দেন৷ তারপর টুইটারে তাঁর রুচির সাংবাদিকতা কীরকম হওয়া উচিত সেই নিয়েও বক্তব্য রাখেন৷

Advertisement

অন্য দিকে শুভশ্রী একরকম চরিত্র বিরোধীভাবেই ফেসবুক লাইভে এই প্রতিবেদককে আক্রমণ করেন৷ অন্যদিকে মিমি সেই অশান্তির খবর অস্বীকার করেন এক সাক্ষাৎকারে৷ আর রাজ? রাজ এরপর উকিলের সঙ্গে মিটিং করেন ‘সংবাদ প্রতিদিন’-কে চিঠি পাঠাবেন বলে৷ এখানে বলা দরকার, প্রথম যখন রাজ-শুভশ্রীর প্রেমের খবর কাগজে লেখা হয়, তখনও একই রকমভাবে রাজ-শুভশ্রী টুইটারে খবরটি অস্বীকার করেছিলেন৷ অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, জানুয়ারিতে যারা পিসি চন্দ্র গার্ডেনে বিয়ের ভেনু ঠিক করেছিলেন, তাঁরা কোনওদিন সরকারিভাবে তাঁদের সম্পর্কের কথা কিন্তু স্বীকার করলেন না৷
সে যা ই হোক, কাট টু রাজের ফ্ল্যাট৷

সম্বিত ফিরে পেয়ে রাজব্রতা শুভশ্রী, ফ্ল্যাট ছেড়ে যাওয়ার যে আদেশ রাজ দিয়েছিলেন সেটা মেনে নেন৷

টালিগঞ্জে নিন্দুকরা বলেন, শুভশ্রী যখন প্রেম করেন, তখন তা সমস্ত অন্তর দিয়েই করেন৷ কোনও মতেই তিনি তাঁর প্রেমিকদের ছাড়তে চান না, তা সে রাজই হোক বা দেব বা অন্য কেউ৷ তবে শুক্রবার শুভশ্রী রাজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এটা অন্তত পরিষ্কার হয়ে যায়, মিথ্যে দিয়েই এই সম্পর্কের শুরু হয়েছিল৷ শেষ পর্যন্ত মিথ্যের জালেই তা জড়িয়ে গেল৷

[রাজ-শুভশ্রী বিবাদের প্রমাণ দিতে পারবে সিসিটিভি ফুটেজই!]

অনেকে এটাও বলছেন, কোনও মতেই মিমি পুরোপুরিভাবে এই সম্পর্কের ভাঙনের পিছনে মুখ্য ভূমিকা নেননি৷ মিমির এখন ব্যস্ত কেরিয়ার, তাঁর যেমন রোলের অভাব নেই, অভাব নেই অনুরাগীরও৷ ‘পোস্ত’ ভাল চলায় মিমির বাজার এখন খুবই ভাল৷ এমনকী তাঁর পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ‘পোস্ত’-র জন্য হল ভিজিট করতে গিয়ে দর্শক চেঁচিয়ে মিমিকে বলছেন, এমন ছবিতেই তাঁরা আবার মিমিকে দেখতে চান৷ তাই মিমিও এই মুহুর্তে তাঁর টালিগঞ্জ ও বলিউডের কেরিয়ারে আরও বেশি করে মনোনিবেশ করছেন৷ চাইছেন আরও শক্ত করতে তাঁর নিজের জায়গাটুকু৷
যদিও চাইলেই বা কী হবে, টালিগঞ্জের মত, রাজের প্রতি তাঁর চোরা টান আজও যাচ্ছে না৷

mimi-web-1

গত সপ্তাহের মাঝামাঝি একটি ক্যাফের উদ্বোধনে একসঙ্গে দেখা যায় মিমি ও রাজকে৷ প্রথমে রাজ ছবি তুলতে চাননি কিন্তু পরে সেই ছবি ছাপা হয় ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ৷ সেই ছবি দেখে অনেকেরই মনে হয়, তা হলে কি রাজ আর মিমি একসঙ্গে? তখনও সবাইকে ধোঁয়াশায় রেখেছেন রাজ৷ নতুন ধোঁয়াশা৷ পরের দিন তিনি হাজির হন অ্যাক্রোপলিস মলে যেখানে ছিল সোহম-শুভশ্রী অভিনীত ছবি ‘আমার আপনজন’-এর প্রিমিয়ার৷ সেখানে সাংবাদিক এবং ফোটোগ্রাফারদের প্রতি যথেষ্ট আপত্তিকর মন্তব্য করেন রাজ৷ এও বলেন, ‘তোমরা ছবি তুলবে আর আমার বাড়িতে অশান্তি হবে৷ তোমাদের আমি দেখে নেব৷” সত্যি বলতে সেখানে রাজের এই অসভ্যতা সামলান শুভশ্রী৷ সে দিন শুভশ্রী আপত্তি করেননি কিন্তু রাজ একেবারেই স্বচ্ছন্দ ছিলেন না একসঙ্গে শুভশ্রীর সঙ্গে ছবি তুলতে৷ তারপর ফটোগ্রাফারদের আড়ালে অন্য একটি অডিটোরিয়ামে গিয়ে তাঁরা দু’জনে পাশাপাশি বসে ছবি দেখেন৷

ইশ, ফোটোগ্রাফাররা যদি জানত, আসল কাণ্ড হবে এর পরেই৷

প্রিমিয়ারের পর শোনা যাচ্ছে, রাজের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বাড়িতে একটি পার্টি ছিল৷ রাজ সেই পার্টিতে পনেরো-কুড়ি মিনিটের জন্য একা গিয়েছিলেন৷ সেই পার্টিতে ছিলেন মিমিও৷ এরপর সেই পার্টি থেকে বেরিয়ে রাজ পৌঁছন হাইল্যান্ড পার্কে তাঁর ফ্ল্যাটে৷ তখন সেখানে এসে গিয়েছেন শুভশ্রীও৷
রাতে কী ঘটেছিল জানা নেই যদিও৷ তবে পরের দিন সকালেই শুভশ্রীকে রাজ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই সম্পর্কে তিনি আর থাকতে চান না৷ এরপরেই রাজ মিডিয়ায় কীভাবে স্টোরিটা আটকানো যায় তার পরামর্শ দেন শুভশ্রীকে৷

১৮ মে, রাজ-শুভশ্রীর ব্রেকআপের যে স্টোরি বেরোয়, সেটা শোনা যায় দক্ষিণ কলকাতা নিবাসী এক বিতর্কিত বাঙালি প্রযোজক মিডিয়াকে ফোন করে জানিয়েছিলেন৷ এ বার সেই প্রযোজকের নাম করে রাজ বলেন, “ও আগের বার অমুক কাগজগুলোকে ফোন করে জানিয়েছিল এবার যেন তোমার পরিবারের কেউ ওই প্রযোজককে কিছু না জানায়’’৷ ইমোশনাল শুভশ্রী৷ সম্পর্কে একমনা শুভশ্রী রাজের কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে যান৷ একই সেনটেন্সে ব্রেকআপ ও মিডিয়ায় না বলার কথা যে বলা যায়, এটা রাজ যে বলতে পারেন, সেটা ভাবতে পারেননি শুভশ্রী৷ শোনা যায় মার্চ মাসে রাজের হালিশহরের বাড়িতে আশীর্বাদও হয়ে গিয়েছিল তাঁদের দু’জনের৷ তাঁদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মোবাইলে সেই ছবিও রয়েছে৷ রাজের এই সর্বশেষ ঘোষণার পর শুভশ্রী বলেন, তাঁর পক্ষে এই অবস্থায় বাড়ি ফিরে মা-বাবাকে ফেস করে সবকিছু বলা ডিফিকাল্ট হবে৷ এর পর শোনা যায় তিনি যান তাঁর এক বন্ধুর বাড়ি৷ সেখানে নাকি তিনি এক রাত্তির ছিলেন এবং বেশিরভাগ সময়েই অঝোরধারায় কেঁদে কাটিয়েছেন৷

এ ছাড়াও যা যা চাঞ্চল্যকর জিনিস জানা গিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল, ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ খবরটি বেরনোর পরের দিন শুভশ্রী নিজের বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ তার আগের কয়েকদিনও শুভশ্রীর উপর বেশ ধকল গিয়েছেল কারণ রাজ যে মিমির দিকে ঝুঁকছিলেন সেটার আন্দাজ পাচ্ছিলেন ‘ধূমকেতু’-র নায়িকা৷ এমনিতেই তাঁর অ্যাজমা-র প্রবলেম আগে থেকেই ছিল৷ এ ছাড়াও বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর বেরনোর পর তাঁর একটি প্যানিক অ্যাটাক হয়৷ ব্যাপারটা এতটাই সিরিয়াস হয়ে ওঠে যে, তাঁর হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়, এমনকী মুখও কাঁপতে থাকে৷ এমন সময় তাঁর বাড়ির লোকজন ফোন করেন রাজকে৷ হবু স্বামীর মতোই পুরো চিকিৎসার দায়িত্ব নেন তিনি৷

rraj-web

বাড়ি ঢুকেই বলেন, তিনি ডাক্তারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন কিন্তু শুভশ্রী যেন কোনও মতেই হসপিটালে না যান৷ কারণ গেলেই মিডিয়া খবর পেয়ে যাবে৷ শুভশ্রীর ও রকম শারীরিক অসুস্থতার মধ্যেও রাজের এই মিডিয়া-ভীতির কথা শুনে অবাক হয়ে যান শুভশ্রীর পরিবারের লোকজন৷ সে দিন রাতে শুভশ্রীর ডায়মন্ড সিটির বাড়িতে অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করা হয়৷ সারারাত অক্সিজেন দেওয়া হয় শুভশ্রীকে৷ ভবানীপুরের এক বন্ধু ডাক্তার সবকিছুর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন৷ ডাক্তারের সিক্রেসি রাখতেই তার নাম লেখা হল না, যদিও তার বাকি সব ডিটেলস ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর অফিসেই রয়েছে৷ শোনা যাচ্ছে সেই ডাক্তার কিছু মানুষকে জানিয়েওছেন তাঁর এই সেলিব্রিটি পেশেণ্টের কথা৷

অন্য দিকে শনিবার রাতে সাউথ সিটিতে তাঁর দিদির বাড়িতে ফিরে যান শুভশ্রী৷ রবিবার সন্ধে পর্যন্ত তিনি তাঁর পরিবারকে তাঁর সঙ্গে রাজের ব্রেকআপের কথা বলতে পারেননি৷ এই মুহূর্তে তাঁর পাশে অবশ্য তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা নিবিড়ভাবে রয়েছেন৷ মিডিয়াতে এটাও বেরিয়েছিল, রাজের পরের ছবি, যা ভেঙ্কটেশ ফিলমের প্রযোজনা করার কথা, সেই ছবিতে মিমিকে নেওয়ার জন্যই নাকি এত সব কাণ্ড হল৷ কিন্তু আদৌ তা নয়৷ হ্যাঁ, এখনও যা ঠিক আছে, রাজের সঙ্গে ছবি হওয়ার কথা এসভিএফ-এর কিন্তু তার জন্য শুভশ্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙতে হবে, এমন কন্ডিশন কোনও দিনও দেওয়া হয়নি ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের তরফ থেকে৷

অন্য দিকে এটাও শোনা যাচ্ছে, রাজের এ রকম মানসিক অবস্থা জানার পর তাঁর উপর তিন-চার কোটির লগ্নি করার ব্যাপারে একটু হলেও সন্দিহান সেই প্রযোজক সংস্থা৷ যদিও ফাইনাল ডিসিশন নেবেন শ্রীকান্ত নিজেই৷ একদিকে রাজ, যিনি তাঁর মিষ্টি স্বভাবের জন্য ইন্ডাস্ট্রিতে সবার প্রিয়৷ এবং সত্যি কথা এটাই, এই মুহূর্তে পরিচালক রাজ চক্রবর্তীকে খুব দরকার ইন্ডাস্ট্রির৷ অন্য দিকে শুভশ্রী এর আগে দেবের সঙ্গে ব্রেকআপের পর নিজের কেরিয়ারের যথেষ্ট ক্ষতি করেছিলেন৷ তাঁর অভিনয় ক্ষমতাও যথেষ্ট কিন্তু তিনি সেই অভিনয় ক্ষমতার প্রতি সুবিচার করেননি, এমনটাই মনে করে ইন্ডাস্ট্রি৷ আর এই ত্রিকোণ প্রেমের তৃতীয় কোণ হলেন মিমি চক্রবর্তী, যিনি এই সময়ের অন্যতম সেরা হিরোইন৷ যাঁর সামনে রয়েছে অরিন্দম শীলের ‘ধনঞ্জয়’-এর মত ছবি৷ তিনি ভেঙ্কটেশ ফিল্মস-এরও প্রিয় পাত্রী৷ আমরা ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ প্রথম দিন থেকেই চেয়েছি রাজ এবং শুভশ্রীর এই প্রেমের যেন মধুরেণ সমাপয়েত্‍ ঘটে৷

এখনও আমরা তাই আশা করছি৷ কিন্তু শুক্রবার সকালের ঘটনার পর থেকে এই ‘রাজকাহিনী’ এমন বাঁক নিয়েছে যে, বিয়ের সানাইয়ের আওয়াজ ক্রমেই দূরে সরে যাচ্ছে৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ