Advertisement
Advertisement

গুপ্তচর হয়ে বাজিমাত আলিয়ার, কেমন হল মেঘনা গুলজারের ‘রাজি’?

হলে যাওয়ার আগে অবশ্যই জেনে নিন।

'Raazi' movie review: Alia projects lady ‘Mata hari’ perfectly
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:May 11, 2018 4:40 pm
  • Updated:November 3, 2020 8:27 pm

সুপর্ণা মজুমদার: যুদ্ধ। দেশের জন্য প্রাণ দিতে হবে। প্রাণ নিতেও হবে। অথচ কেউ জানতে পারবে না। এমন জীবন বাঁচতে হবে যা পুরোটাই মিথ্যে। আবার এই মিথ্যের মধ্যে দিয়েই সত্যকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। দেশ তোমার জন্য কিছু করবে না। কিন্তু তোমায় দেশের জন্য করে যেতে হবে। এমন সৈনিক তুমি যে শহিদ তো হবে, কিন্তু মৃত্যুর পর তেরঙ্গাও জুটবে না। এমন জীবনকেই বেছে নিতে ‘রাজি’ হয়েছিল সেহমত। কেন? দেশের জন্য। বাবার জন্য। তার ফেলে যাওয়া কাজের দায়িত্ব নিজের নরম কাঁধেই নিয়েছিল সে। নিজেকে তৈরি করেছিল সমস্ত পরিস্থিতির জন্য। তাকে শেখানো হয়েছিল সমস্ত কিছু। শিখেছে সে। দায়িত্ব পালনও করেছে। দেশকে সবার আগে রেখেছে। কিন্তু ভিতরের মানুষটাকে আস্তে আস্তে হারিয়েছে। কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে এসেছে বটে কিন্তু ফেলে আসা বাঁধন আর ছিঁড়তে পারেনি। গ্লানির আগুনে সারাজীবন পুড়েছে। দেশ, জাতি, উন্নত, অনুন্নত, অধিকার, লড়াই- এ সবের বাইরেও একটা জীবন বলে বস্তু রয়েছে। সেটাই তুলে ধরেছেন পরিচালক মেঘনা গুলজার।

Advertisement

সত্যি ঘটনা অবলম্বনেই ‘কলিং সেহমত’ লিখেছিলেন হরিন্দর সিক্কা।  মেঘনা তাঁকে নিজের মতো করে পর্দায় তুলে ধরেছেন। তাঁর সঙ্গে চিত্রনাট্য লিখেছেন ভবানি আইয়ার। হ্যাঁ, পর্দার গল্পে কিছু প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে। যেমন শ্বশুরবাড়ির বিশ্বস্ত পরিচারক আবদুলকে এতটা দূর তাড়া করে মারল সেহমত। আবার গাড়ির মধ্যেই চাবি পেয়ে গেল সে! এমনকী রাস্তা দিয়ে এতটা দৌড়ে গেল সে, অথচ কেউ তাকে দেখতে পেল না! এতটা কাকতালীয় ব্যাপার মানতে একটু কষ্ট হয়। তবে সাতের দশকের কাশ্মীর ও পাকিস্তান যেভাবে ক্যামেরায় উঠে এসেছে, তাতে সিনেমাটোগ্রাফার জে আই প্যাটেলের ভূমিকা প্রশংসনীয়।

Advertisement

[পরতে পরতে রহস্যের ইঙ্গিত, ট্রেলারেই কৌতূহল বাড়াচ্ছে ‘গুডনাইট সিটি’]

নিজের এক সাক্ষাৎকারে আলিয়া বলেছিলেন, তাঁর ও মেঘনার চরিত্রে অদ্ভুত মিল রয়েছে। সে কারণেই বোধহয় সেহমত হয়ে উঠেছেন তিনি। মেলোড্রামা করার চেষ্টা করেননি আলিয়া। রক্তমাংসের মানুষ হয়ে উঠেছেন। সেই সেহমত হয়েছেন, পরিচিত মানুষকে দেখেও যার চোখের পলক পড়ে না, আবার বিপদে পড়ে তার নিঃশ্বাস আটকে আসে। কারও প্রাণ নিতে হাত না কাঁপলেও, বুক কেঁপে ওঠে। ভিতরটা ঝাঁজরা হয়ে যায়। গুলি না চললেও রক্ত ঝরে। এ ছবি সেহমতেরই। এমন এক সৈনিক যে নিজের সমস্ত কিছু সঁপে দেয় দেশকে। ফেরে শূন্য হাতে রিক্ত জীবন নিয়ে। ভিকি কৌশল কেবল ইকবাল হিসেবে নিজের ভূমিকা পালন করেছেন। বহুদিন বাদে বড়পর্দায় এসে নিজের জাত চিনিয়েছেন রজিত কাপুর। সোনি রাজদান ছবিতেও কেবল আলিয়ার মা হয়েই থেকে গিয়েছেন।বলিউডি সিনেমায় গান থাকেই। আর মেয়ের ছবির জন্য বহুদিন বাদে কলম ধরেছেন গুলজার। প্রত্যেকটি গান যেন লেখকের জাদুকাঠির ছোঁয়ায় নতুন করে প্রাণ পেয়েছে। শংকর-এহসান-লয় সুবিচার করেছেন গুলজারের শব্দের।

[আলতা পায়ের আলতো ছোঁয়া রাজবাড়িতে, রাঙা বউ হয়ে উঠছেন শুভশ্রী]

কথায় বলে শত্রুকে মারার সময় তাঁর চোখের দিকে তাকাতে নেই। সেখানে অন্তিম মুহূর্তে প্রাণের আকুতি ফুটে ওঠে। মনে  মায়ার জন্ম হয়। ব্যস শেষ করে দাও নিমেষে। কিন্তু সে প্রাণেরও তো মূল্য রয়েছে। সেও তো কোনও না কোনও আদর্শ নিয়ে লড়ছে। বন্দুক থেকে যতবার গুলি বেরিয়ে শত্রুর বুক ফুঁড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে কারও সন্তান, প্রেমিক, বন্ধু, ভাই বা স্বামীর রক্ত ঝরছে। একই রক্ত উলটোদিকের মানুষটার বুকেও তো বইছে। মৃত্যু হচ্ছে বিবেকের। মানুষ তো! রোবট নয়। সবকিছু দিতে ‘রাজি’ হলেও রিক্ততা তো থেকেই যায়।

[অবসাদের গ্রাসে কিশোরী জায়রা, ভেবেছিলেন আত্মহত্যার কথাও]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ