Advertisement
Advertisement

সাত-সাতটি ছবির পারিশ্রমিক ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, বিস্ফোরক মনোজ

কিন্তু কেন? একান্ত সাক্ষাৎকারে ফাঁস করলেন অভিনেতা।

Had to return fee for several movies: Manoj Bajpayee
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:August 10, 2018 2:32 pm
  • Updated:August 10, 2018 2:37 pm

অনেকদিন পর মুম্বইয়ে নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মুখোমুখি হলেন মনোজ বাজপেয়ী। মন খুলে বললেন কথা। শুনলেন তপন বকসি।

আজ থেকে বত্রিশ বছর আগে বিহারের পশ্চিম চম্পারণ জেলার অজগ্রাম নারকাটিয়াগঞ্জ থেকে বছর সতেরোর একটি ছেলে দিল্লি পৌঁছেছিল অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। চেয়েছিলেন ‘ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা’য় ভরতি হতে। পরপর চারবার প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর গিয়েছিল আত্মহত্যা করতে। ‘ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা’ হয়নি। আত্মহত্যাও হয়নি। কিন্তু অভিনেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি মনোজ বাজপেয়ী। অনেকদিন পর মুম্বইয়ে মনোজ মুখোমুখি হলেন নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে।

Advertisement

হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পছন্দমতো চরিত্রতেই সীমাবদ্ধ থাকলেন। আফসোস হয় না অনেক অন্য অভিনেতাদের মতো অর্থ বা যশের অধিকারী হলেন না বলে?

Advertisement

সেটা আমি নিজেই তো চাইনি। আমি যে স্বপ্ন নিয়ে বত্রিশ বছর আগে গ্রাম ছেড়ে দিল্লি এসেছিলাম, সেটা ছিল অভিনয়ের প্রতি অবসেশন। অভিনেতা হিসেবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন। শর্ত একটাই ছিল অভিনয় করব মনের আনন্দে। ভরপুর আনন্দে। বাকি সব গৌণ। ওটা ছিল আমার ম্যাডনেস। তার জন্য কতটা পয়সা হবে, ভাবিনি। আজও ভাবি না।

কিন্তু সংসার হয়েছে। মেয়ের বাবা হয়েছেন। মুম্বইয়ের মতো শহরে সেটা চালানোতেই তো পয়সা লাগে?

সেটুকু চালাতে পারি তাই মুম্বইয়ে আছি। তার জন্য আলিশান জীবনে বাঁচতে হবে, তার কী মানে?

[প্রকাশ্যে করণের ‘তখত’-এর ফার্স্টলুক, এক ছবিতে পাঁচ তারকা]

 ব্যান্ডিট কুইনএ অভিনয় করলেও সত্যা ছবিই আপনাকে নামযশ দিল। আপনি হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিষ্ঠা পেলেন। তারপর আপনি অনেক চরিত্র ফিরিয়ে দিয়েছেন। যা সচরাচর অন্য অভিনেতারা করতেন না?

‘সত্যা’ আমাকে রুটি-রুজি দিল। হিন্দি ছবির বিশাল দর্শকের কাছে আমাকে চেনাল। তারপর থেকে অনেক হিন্দি ছবিতে ভিলেন হওয়ার অফার আসতে লাগল। কিন্তু আমি শুধু ভিলেন হতে চাইনি। সুদর্শন নায়কের সামনে ভিলেন হতে চাইনি। অ্যাকচুয়ালি আমার যা চেহারা, যা ইমেজ, তাতে আমাকে প্রযোজক-পরিচালকরা কোন ক্যাটেগরিতে ফেলবেন, তা নিয়ে ওঁরা দ্বিধায় ছিলেন। শেষেমেশ ‘ভিলেন’-এর জন্য বেছে নিলেন। আমি সব অফার ফিরিয়ে দিলাম।

আবার এমনও হয়েছে আপনি সাইনিং অ্যামাউন্টও ফেরত দিয়ে দিয়েছেন?

হুম। সাতটা ছবির পারিশ্রমিক আমি ফেরত দিয়ে দিয়েছি। বলতে পারেন প্রযোজক-পরিচালকরা আমাকে ওঁদের ছবি থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছেন। তিন-চার বছর পর আমার কাছ থেকে সাইনিং অ্যামাউন্ট ফেরত নিয়ে নিয়েছেন। কখনও সেই ছবি হয়নি। কখনও অন্য কোনও ভিলেনকে নিয়ে ওঁরা এগিয়ে গিয়েছেন। (হাসি)

তেইশ বছরের অভিনয় জীবনে নিজের জেদ বজায় রেখেও পার পাননি। খারাপ সময়ে তাও ফেস করতে হয়েছে?

নিজের ইচ্ছায় চললে তেমন সময় আসে হয়তো। ২০০৩-এ ‘পিঞ্জর’-এর জন্য ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেলাম। তারপরে আমার মার্কেট জিরো হয়ে গেল। অসুস্থ হয়ে গেলাম। কোনও কাজ নেই। কেউ ডাকছে না। আবার কাজ পেলাম প্রকাশ ঝা’র ‘রাজনীতি’ থেকে। পাঁচটা চরিত্র আমার সামনে দিয়েছিলেন প্রকাশ। তার থেকে বেছে নিতে হয়েছে। সেই চরিত্রই পরে কাল্ট হয়ে গেল। আবার কাজ পেতে শুরু করলাম। মানে আমার মতে ভাল ছবির চরিত্র বেছে নিয়ে কাজের সুযোগ পেলাম। এভাবেই চলছে।

[শহিদুলের পর কাজী নওশাবা, ছাত্র আন্দোলনের সমর্থন করে গ্রেপ্তার অভিনেত্রী]

আপনার সাম্প্রতিক ছবি সত্যমেব জয়তের সেটে শুনলাম জন আব্রাহাম আপনাকে ইচ্ছা করে লেট নাইট শুটিংয়ে বাধ্য করাতেন মজা করে?

হুম। জন আমাকে জ্বালিয়েছে অনেক। এমনিতে আমি রাত সাড়ে ন’টায় শুয়ে পড়ি। আর ভোর সাড়ে চারটেয় উঠি। তাই চাইছিলাম যে তাড়াতাড়ি যাতে প্যাক আপ হয়ে যায়। আর আমি শুতে যেতে পারি। তাও তো আমার চেহারা দেখে কেউ একজন টুইটার না ফেসবুকে লিখেছিলেন আমাকে ‘চরসি’-র মতো দেখতে। (হাসি) আমাকে চরসখোরের মতো লাগে। ‘জুবেইদা’-তে আমি একজন প্রিন্সের চরিত্র করেছিলাম। একজন নামী সমালোচক লিখলেন অভিনয় ভাল কিন্তু প্রিন্সের মতো লাগল না। সমালোচনার সেই বিরোধাভাসের উত্তর আমি আজও পাইনি।

অভিনেতা হিসাবে যেভাবে আপনি নিজেকে দেখতে চেয়েছেন। সেই হিসাব বাস্তবে বেশিরভাগ সময়ে মেলেনি। আপস করতেও রাজি হননি। এখনকার জেন ওয়াই অভিনেতাদের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

ওঁদের সঙ্গে সবকিছুতে নিজেকে রিলেট করতে পারি না। তবে ওঁদের এন্টারপ্রাইজিং অ্যাটিটিউড বা মনোভাবকে পছন্দ করি। একটা হিট বা ফ্লপ এঁদের কাবু করে না। আমি অভিনয়ের সঙ্গে স্পর্শকাতর ভঙ্গিতে প্রেম করেছি। ফলাফল খারাপ হলে ভেঙে পড়েছি। ওঁদের তা হয় না। ওঁরা এসব ঝেড়ে ফেলে সামনের দিকে এগিয়ে চলেন। হিট বা ফ্লপ, অনুভূতিটাকে পাশে রেখে দিয়ে এগিয়ে যান।

প্রযোজকপরিচালকদের কাছে রোল চেয়েছেন কোনওদিন?

কোনওদিনও না। আমি তো দিল্লিতে থিয়েটার করেছি দীর্ঘদিন। থিয়েটারের ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল। একসময় রামগোপাল ভার্মার কাস্টিং ডিরেক্টর কান্নন আইয়ার আমাকে রামগোপালের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরপর তিনটে ছবি রামগোপালের পরিচালনা বা প্রযোজনায় করলাম। ‘সত্যা’, ‘শূল’, ‘কৌন’। কান্নন আমাকে আসলে নিয়ে গিয়েছিলেন ‘দৌড়’ ছবির জন্য। ঠিক তেমনি কাস্টিং ডিরেক্টর তিগমাংশু ধুলিয়া আমাকে নিয়ে গিয়েছিলেন প্রযোজক-পরিচালক শেখর কাপুরের কাছে। ‘ব্যান্ডিট কুইন’-এর সময়।

 

দিল্লিতে থিয়েটারের সময় ব্যারি জনের কাছে আপনার আর এক সহপাঠীর নাম শাহরুখ খান। শাহরুখের সঙ্গে সম্পর্ক এখনও আছে তো?

থিয়েটারের সময় একসঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি। মুম্বইয়ে ও স্টার হয়ে যাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবে ওর সময় কমে গিয়েছে। আগের মতো দেখাসাক্ষাৎ হয় না। আমি আমার মতো। ও ওর মতো। কিন্তু দেখা হলে অনেক গল্প হয়। কথা হয়।

ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নেপোটিজম বা স্বজনপোষণ নিয়ে একটা অভিযোগ প্রায়ই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আপনি কী বলবেন?

সবসময়েই ছিল। নতুন কিছু নয়। ছিল, আছে, থাকবেও। যে মালিক কোম্পানি চালান, তাঁর ছেলেকেই তো তিনি আসনে বসাবেন। অভিনেতা হিসাবে আমি এটা দেখেছি।

[ফের বলিউড ছবিতে পাওলি, প্রকাশ্যে ‘হালকা’র ট্রেলার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ