সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “আমরা ছয় জন ছিলাম৷ প্রায় ১২০০ পাথর নিক্ষেপকারী আমাদের ঘিরে ধরেছিল৷ যদি গুলি চালানোর আদেশ দিতাম অনেক বিক্ষোভকারী প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারত না৷ তা না করে জিপে ওই বিক্ষোভকারীকে বেঁধে অনেক প্রাণ বাঁচিয়েছি৷” এই বক্তব্য ভারতীয় সেনার মেজর লিটুল গগৈর৷ অসাধারণ সাহসিকতা ও উপস্থিত বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে সেদিন বেশ কয়েকটি প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন তিনি৷ তবে তাঁর এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেন একাংশ ‘বুদ্ধিজীবী’৷ জঙ্গি ও মাওবাদীদের মানবাধিকার ‘ক্ষুণ্ন’ হলে যাঁদের চোখের জল বাঁধ মানে না, সেই ‘বুদ্ধিজীবী’রাই জওয়ানদের রক্ত দেখতে পান না৷
[ইরান থেকেই অপহৃত কুলভূষণ, স্বীকার প্রাক্তন পাক গুপ্তচরের]
কাশ্মীরে পাথর নিক্ষেপকারীদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে সেনা। তা আটকাতেই এই অভিনব পন্থা নিয়েছিলেন মেজর গগৈ। জিপের সামনে তিনি বেঁধে দিয়েছিলেন এক কাশ্মীরি যুবককে। তারপর সতর্ক করা হয়েছিল পুরো মহল্লাকে। এপ্রিলের মাঝামাঝি নাগাদ এ ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। তীব্র সমালোচনা হয় মেজরের এ পন্থা নিয়ে। তদন্তের নির্দেশও দেয় সেনা। যদিও এরপরই পুরস্কৃত করা হয় ওই মেজরকে।
সমালোচনার জবাবে মেজর গগৈ জানিয়েছেন, ঘটনার দিন বদগাঁও জেলার একটি নির্বাচন কেন্দ্রে স্বল্পসংখ্যক আইটিবিপি জওয়ান ও নির্বাচন আধিকারিকদের ঘিরে ধরে পাথর নিক্ষেপকারীরা৷ তাঁদের বাঁচাতে মেজর গগৈ ও তাঁর টিম ঘটনাস্থলে যায়৷ সেখানে ফারুক দার নামের ওই যুবক জনতার সামনে উসকানিমূলক ভাষণ দিচ্ছিলেন৷ তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে দারকে জিপের সামনে বেঁধে ফেলা হয়েছিল৷ উল্লেখ্য, প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও অসীম ধৈর্য্য ও সাহসের সঙ্গে কাজ করা ও প্রাণ বাঁচানোর জন্য মেজর গগৈর প্রসংশা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু৷
[ইগলুতে থাকতে চান? ভারতের এই শহরেই পাবেন এমন সুযোগ]
এদিকে এই ঘটনার পর পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন ওই কাশ্মীরি যুবকও। প্রথমে তাঁকে পাথর নিক্ষেপকারী ভাবা হলেও পরে তাঁর পরিচয় জানা যায়। ফারুক দার নামে এই যুবকের প্রশ্ন, তিনি কি পশু যে তাঁকে এভাবে জিপের সামনে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা যায়? তাঁর আরও প্রশ্ন, দেশের কোন আইন এ কাজকে বিধিসম্মত হিসেবে গণ্য করল। তাঁর আক্ষেপ, এই কাজকে যদি আইনসম্মত হিসেবে ধরা হয়, তাহলে তো আর বলার কিছু থাকে না। ‘আমি তো আর বড় অফিসারদের সঙ্গে ছড়ি হাতে যুদ্ধ করতে পারব না’, কটাক্ষ ওই যুবকের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.