Advertisement
Advertisement

Breaking News

মেয়ের সঙ্গে প্রেম করে বিপাকে, প্রেমিকার মাকেই বিয়ে করতে হল যুবককে

অনেকেই মমতাজের ভয়ে তটস্থ।

Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 20, 2018 11:01 am
  • Updated:July 20, 2018 11:01 am

অর্ণব আইচ: মেয়ের সঙ্গে প্রেম করতে দেখেই কবজা করেছিল মা। শেষ পর্যন্ত যাকে শাশুড়ি হিসাবে মনে মনে ভাবতে শুরু করেছিলেন কুড়ি বছরের তরুণটি, তাকেই মেনে নিতে হল স্ত্রী বলে। আর যে কিশোরীটিকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন, সে-ই হয়ে গেল তাঁর ‘মেয়ে’।

[একুশের সভা উপলক্ষে হাওড়া স্টেশনে গ্রিন করিডর, মোতায়েন অতিরিক্ত বাহিনী]

Advertisement

বড় জটিল হিসাব। কিন্তু গত দু’বছর যে এই জটিল জালেই জড়িয়ে পড়েছিলেন নারকেলডাঙার যুবক মহম্মদ তনবির। আর যখন এই জাল থেকে বেরোলেন, তখন কাটা গেল তাঁর দুই কান। নারকেলডাঙা নর্থ রোডে কুড়ি বছরের বড় স্ত্রী তার স্বামীর দুই কান কেটে নেওয়ার ঘটনায় উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। স্ত্রীর চেয়ে কুড়ি বছরের ছোট স্বামী তনবিরের অভিযোগ, এত কিছুর পিছনে রয়েছে তাঁর স্ত্রী মমতাজের টাকার ‘গরম’। আর এই টাকা আসত সুদের কারবার থেকে। সুদের টাকা বাকি থাকলেই রাস্তায় বেরিয়ে তাণ্ডব চালাত নারকেলডাঙার মমতাজ। যে ব্যক্তি ঋণ নিয়েছেন, তাঁর উপর চলত অত্যাচার। এই অত্যাচার ও মারধরে শামিল হত মমতাজের দুই বোন ও দুই শাগরেদ। এমনকী, নিজের দাপট দেখাতে এলাকার মহিলাদের মারধর করতেও ছাড়ত না ওই মহিলা। বৃহস্পতিবারও আতঙ্ক কাটেনি নারকেলডাঙা নর্থ রোডের বাসিন্দাদের। অনেকেই মমতাজের ভয়ে তটস্থ। আবার কয়েকজন উগরে দিয়েছেন এই অভিযোগ ও ক্ষোভ।

Advertisement

এদিন নারকেলডাঙা ব্রিজের অদূরে নিজের বাড়িতে বসে আতঙ্কিত মহম্মদ তনবিরও। স্ত্রী মমতাজ তাঁর দুই কান কাটার পর কাপড়ে জড়িয়ে নিয়ে চলে গিয়েছে। মাঝেমধ্যে কেঁদে উঠে তনবিরের মা ফতেমা বলছেন, “যদি কান দুটো রেখেও যেত, হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে জোড়া লাগাতে বলতাম ডাক্তারবাবুদের।” তনবির জানান, তাঁর সঙ্গে মমতাজের বিয়ে হওয়ার কোনও কথাই ছিল না। তিনি ও মমতাজের কিশোরী মেয়ে একে অপরকে ভালবাসতেন। ‘আন্টি’ তাঁকে একদিন ডেকে পাঠায়। দু’জনের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলে। বার কয়েক যাতায়াতের পর পানীয়র সঙ্গে মাদক মিশিয়ে অচেতন করে দেওয়া হয় তাঁকে। তাঁর সঙ্গে মমতাজ এমন আচরণ করে, যা একেবারেই ‘শাশুড়িসুলভ’ নয়। তনবিরের দাবি, তাঁকে ব্ল্যাকমেল করা হয়। এর পর তাঁকে দিয়ে জোর করে সই করানো হয়। সই করার পর তিনি বুঝতে পারেন, তিনি ‘আন্টি’ মমতাজের ‘পঞ্চম’ স্বামী।

তনবিরের দাবি, এর আগেও মমতাজের চারবার বিয়ে হয়েছে। প্রথম পক্ষের কন্যাই ছিল তাঁর বান্ধবী। যদিও আরও কয়েকজনের সঙ্গেও সম্পর্ক ছিল মমতাজের। বিয়ের পর থেকে তনবিরকে প্রায় প্রত্যেকদিন জোর করে মদ্যপান ও মাদক জাতীয় বস্তু খাওয়াত মমতাজ ও তার বোনরা। এমনকী, শারীরিক সম্পর্কের জন্য ওই যুবককে ওষুধও খাওয়ানো হত। খাটানো হত ফাইফরমাস। আঘাত করা হত হাতে। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মায়ের কাছে পালালেই মমতাজের দুই বোন ও দুই সঙ্গী তাঁকে গিয়ে ধরে আনত। বিয়ের সময় স্বামীকে দু লক্ষ টাকা দিয়েছিল মমতাজ। তনবিরের বাবা তাজ মহম্মদ জানান, ‘বউমা’র চাপে তিনি তিন লাখ টাকার সম্পত্তি মমতাজের পরিবারকে দিতে বাধ্য হন। তাঁদের প্রত্যেককে ওই বাড়ি থেকে বের করে দেয় মমতাজ।

তনবির ও এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, একশো টাকা ধার দিয়ে মাসে ২০ শতাংশ সুদ নিত মমতাজ। টাকা ফেরত না দিলে দিনে একশো টাকা জরিমানা। সাধারণত এলাকার নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষরাই প্রয়োজেন ঋণ নিতেন। সেই টাকা ফেরত না পেলেই মমতাজ তার বোন ও সঙ্গীদের নিয়ে তাণ্ডব চালাত। যাঁরা টাকা ধার নিতেন, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে তাঁদের উপর চলত অত্যাচার। মমতাজের ভাই ও বোন প্রোমোটিং করেন। তাঁদের মাধ্যমেও এলাকায় দাপট বজায় রাখত মমতাজ। অনেকের ধারের বহু টাকা জমে যেত। শেষ পর্যন্ত সেই টাকা আদায়ের জন্য সম্পত্তি বিক্রি করতেও বাধ্য করত বলে অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের। যদিও পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, মমতাজের উপর আসা অভিযোগগুলি যাচাই করা হচ্ছে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

[লালগোলায় পাকড়াও মাদক পাচারকারী, উদ্ধার কোটি টাকার হেরোইন]

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ