Advertisement
Advertisement

Breaking News

জানেন, একরত্তি শিশুকে কী কী খাবার খাওয়ানো উচিত?

জেনে নিন বিশেষজ্ঞরা শিশুদের জন্য কী ডায়েট চার্টের পরামর্শ দিচ্ছেন।

Do you know what should be the diet chart of childrens?
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:December 9, 2017 1:09 pm
  • Updated:July 11, 2018 12:42 pm

এই সেদিন বসতে শিখল, আজ টলমল পায়ে এ ঘর ও ঘর। পলকে বেড়ে ওঠার ফাঁকেই শুরু হয়ে যায় খাওয়া নিয়ে দুষ্টুমি। কিন্তু একরত্তির সুস্বাস্থ্য গড়তে কখন প্রথম দেবেন খিচুড়ি-সবজি, কখন মাছ-মাংস? কেমন হবে শিশুর খাদ্যাভ্যাস? ভাগীরথী নেওটিয়া উওম্যান অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার সেন্টারের বিশিষ্ট পেডিয়াট্রিশিয়ান ডা. জিতব্রত রায়ের কাছে খোঁজ নিলেন সোমা মজুমদার।

নিজে নিজে প্রথম পাশ ফেরা, উপুড় হওয়া, একটু ঘাড় শক্ত হতেই বসতে শেখা। কিংবা হামাগুড়ি থেকে টলমল হাঁটা তারপর কচি পায়ে দৌড়াদৌড়ি। সদ্যোজাত থেকে দস্যি হয়ে ওঠার পর্বটা ভীষণ আনন্দের। তবে শিশুর স্বাস্থ্য মজবুত করার সঠিক অধ্যায় এই সময়টাই। তাই জন্মের পর ছ’মাস বয়স থেকে এক-দেড় বছর বাচ্চার সঠিক পুষ্টি ভীষণ জরুরি। আর এই পর্বেই মাতৃদুগ্ধ ছেড়ে দুনিয়ার অজস্র বিভিন্ন স্বাদের খাবার প্রথম চেখে দেখে শিশু। চিনতে শেখে খিচুড়ি, আনাজ সিদ্ধ, সুপ, মাছ, মাংস, ফল ইত্যাদি। সাধারণত এক বছরের পর থেকে শিশুকে সাধারণ খাবারে পুরোপুরিভাবে অভ্যস্ত করে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়। আর ছয় মাস থেকে ১২ মাসের মধ্যে শিশুর পুষ্টির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সময়কে ‘ট্রানজিশন পিরিয়ড’ বলা হয়। এই সময় শুধু সঠিক খাবার খাওয়ালেই হয় না, পাশাপাশি শিশুকে ধীরে ধীরে সব ধরনের খাবার খাওয়ানোর পদ্ধতিও শেখাতে হয়। কিন্তু প্রথমবার টক-ঝাল-মিষ্টির মিশেলে তৈরি বিভিন্ন খাবারের অভিজ্ঞতা নেওয়া কোনও শিশুর কাছেই সহজ হয় না। ফলে বেশিরভাগ অভিভাবকই তাঁর শিশুকে যথাযথ খাবার দিতে নাজেহাল হয়ে পড়েন। তবে অযথা দুশ্চিন্তা না করে শিশু যে খাবার যতটা খেতে চাইছে তাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দিন। তাড়াহুড়ো নয়, ধীরে ধীরে ধৈর্য ধরে আপনার সন্তানের স্বাভাবিক খাবারের অভ্যাস তৈরি করুন।

Advertisement

baby_web

Advertisement

[একগুচ্ছ স্মার্টফোনের দাম কমল, এসে গেল ‘বিগ বিলিয়ন সেল’]

ছ’মাস থেকে সব ধরনের খাবার: শিশুর ৫ মাস থেকে ১২ মাস পর্যন্ত সময়ের খাদ্যাভ্যাসকে ‘কমপ্লিমেন্টারি ফিডিং’ বলা হয়। অর্থাৎ শিশুকে মাতৃদুগ্ধের খাদ্যাভ্যাস থেকে মুক্ত করা। ছ’মাস বয়সের পর থেকে শিশুর মায়ের অর্ধেক ডায়েট নেওয়া উচিত। যেহেতু সাধারণ ছ’মাসের পর মায়ের মাতৃদুগ্ধের পরিমাণ বাড়ে না ফলে এই সময় থেকে যদি অন্য খাবার না দেওয়া হয় তাহলে বাচ্চার শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয়। এমনকী, যদি চার মাসের পর ব্রেস্ট ফিডিং কম হয় তাহলে তখন থেকেই ধীরে ধীরে তরল বা আধা কঠিন খাবার দেওয়া যেতে পারে। তাছাড়া এই সময় থেকে শিশুর শরীরে হজমের উৎসেচক তৈরি হয়। মাড়িও শক্ত হতে শুরু করে। সাধারণত শিশু ছয় মাস থেকে বায়োলজিক্যাল অন্য খাবার খাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে যায়।

কোন খাবার দেবেন: সাধারণত কমপ্লিমেন্টারি ফিডিং দু’রকমের হয়। ১) বাড়িতে তৈরি খাবার এবং ২) বাজারচলতি প্রক্রিয়াজাত খাবার। বাড়ির খাবারের ভ্যারাইটি বেশি এবং ফ্রেশ রান্না করা খাবার বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। অন্যদিকে বাজারে বিক্রিত টিনফুড তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে যায়। শিশুকে অনেকক্ষণ বাড়ির বাইরে থাকতে হলে এই ধরনের খাবারই খিদের চাহিদা অনেকটা মেটায়।

৭-৯ মাসে বাড়ির খাবার: এই সময় শিশুকে চাল ও ডালের তৈরি পাতলা খিচুড়ি দেওয়া যায়। ডালিয়ার খিচুড়িও দেওয়া যাবে। খিচুড়িতে আলু, কুমড়ো, গাজর পুরোপুরি চটকে দিতে পারেন কিংবা এইসব সবজি সিদ্ধ করে চটকে খাওয়ানো যায়। ডিমের কুসুম খাওয়ানো যাবে। ফলের মধ্যে সবেদা দেওয়া যাবে। যদি আপেল সহ্য করতে পারে তাহলে আপেল সিদ্ধ করে দিতে হবে। রুটির মোটা অংশ ছিঁড়ে গরম সবজির সুপে অথবা ডালে ডুবিয়ে নরম করে দিন। এক বছরের আগে বাজারচলতি দুধ না দেওয়াই ভাল। ৯ মাস থেকে দই, ছানা দেওয়া যায়।

 

[সন্তান সারাদিন মুখ গুঁজে স্মার্টফোনে? আত্মহত্যার ঝুঁকি বাড়ছে না তো?]

৯-১২ মাসের মেনু লিস্ট: এই সময় থেকে শিশুকে খাবার পছন্দ করার সুযোগ দিতে হয়। অর্থাৎ স্বাদ রুচিবোধ ৯ মাস থেকেই ধীরে ধীরে তৈরি হয়ে যায়। এই সময় চাল-ডালের অথবা ডালিয়ার খিচুড়ি দিতে পারেন। রুটির মোটা অংশের সঙ্গে পাউরুটি হালকা করে সেঁকে সবজির সুপে কিংবা ডালে ভিজিয়ে খাওয়ানো যায়। সবজি সিদ্ধ করে চটকে অথবা তার নির্যাসের সুপও দিতে পারেন। টক জাতীয় ফল বাদে যে কোনও সহজপাচ্য ফল চটকে খাওয়ানো যায়। ৯ মাস থেকে ১২ মাসের খাদ্যাভ্যাসকে ‘ফ্যামিলি পট ফিডিং’ বলা হয় অর্থাৎ এই সময় পরিবারের সকলের জন্য তৈরি খাবার থেকে শিশুকে কম তেল-ঝাল-মশলাযুক্ত খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস করতে হবে। প্রাণীজ প্রোটিনও এই সময় থেকে খাওয়ানো শুরু করতে হবে। নরম মাছ, মুরগির মাংস সিদ্ধ, চিকেন স্টু দিতে পারেন। খিচুড়ির বদলে মাঝে মাঝে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ফ্যানা ভাত, দুধ ও চাল দিয়ে পায়েস খাওয়ান। ডালের জল না দিয়ে মসুর ডাল সিদ্ধ, আলু-গাজর-পেঁপে সিদ্ধ চটকে হজম করার মতো করে খাওয়াতে পারেন। পাতলা করে সুজি খাওয়ান। নরম বিস্কুট জলে ভিজিয়েও খাওয়াতে পারেন।

একঘেয়ে খাবার দেবেন না: শিশু একঘেয়ে খাবার পছন্দ করে না। বিভিন্ন রকমের পুষ্টিকর সহজপাচ্য খাবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খাওয়ানো উচিত। যে কোনও খাবার সুস্বাদু করতে স্বাদ অনুযায়ী তাতে নুন, চিনি কিংবা গুড় দিতে পারেন। স্বাদবদলে মাঝে মাঝে ঘি বা মাখন ও ব্যবহার করা যাবে। একইসঙ্গে কোন পাত্রে খাবার দেওয়া হচ্ছে, খাবারের স্বাদ, কোন পরিবেশে খাবার দেওয়া হচ্ছে এই সবকিছু শিশুর খাদ্যভ্যাসের সঙ্গে জড়িত। আজকাল টিভি দেখতে দেখতে কিংবা মোবাইল চালিয়ে অভিভাবকদের সন্তানকে খাওয়ানোর প্রবণতা দেখা যায়। যা একেবারেই ঠিক নয়। কারণ কোন পরিবেশে শিশু খাচ্ছে তার উপর তার খাদ্যাভ্যাস নির্ভর করে।

Best-Costumes-Baby-First-Halloween

[দুর্বলতার কারণে বিছানার সুখ ফিকে? জোর বাড়ান আয়ুর্বেদের মাধ্যমে]

ধৈর্য ধরে খাওয়ান: প্রথম প্রথম যে কোনও খাবারই শিশু খেতে চাইবে না। তাই একটু একটু করে খাবারের পরিমাণ বাড়ান। যদি প্রথমে এক চামচ কোনও খাবার খেতে চায় তাহলে তাই দিন। এক চামচ থেকে দু’চামচ, তারপর এক কাপ এইভাবে ধীরে ধীরে খাবারের পরিমাণ বাড়ান। একইসঙ্গে কোন স্বাদের খাবার কিংবা কোন নির্দিষ্ট ধরনের খাবার শিশু পছন্দ করছে সেদিকে খেয়াল রাখুন। তাড়াহুড়ো করে একসঙ্গে অনেকটা খাবার খাওয়াতে গেলে শিশু সবসময় খেতে চাইবে না। ফলে পুষ্টির ঘাটতি থেকে যাবে।

Child_web

ওজন বেশি-কমের চিন্তা: শিশুকে সব সময় ব্যালান্স ডায়েট দিতে হবে। ওজন কম থাকলে তার সঠিক কারণ চিহ্নিত করতে হবে। যদি অপুষ্টির কারণে ওজন কম থাকে তাহলে খাবারের উপর নজর দিন। তবে যদি কোনও নির্দিষ্ট রোগের কারণে শিশুর ওজন কম হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। একইভাবে ওজন বেশি থাকলে তার কারণ চিহ্নিত করা প্রয়োজন। যদি থাইরয়েড বা অন্য রোগের কারণে হয় তার চিকিৎসা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার দেওয়া যাবে না। বাচ্চার খাবারের ২৫% কার্বোহাইড্রেট, ১৫-২০% প্রোটিন ও ১০-১৫% ফ্যাট থাকতে হবে। জল ও অন্যান্য তরল খাবার মিলে সারাদিনে ১ লিটার খাওয়াতে হবে।

[বড়দিন স্পেশ্যাল অন্তর্বাসের এই বিজ্ঞাপন উষ্ণতা বাড়াচ্ছে নেটদুনিয়ার]

খাওয়াবেন না:

  • কোনও খাবার প্রথম ক’দিন খাওয়ার পরই শিশুর অ্যালার্জি হলে অথবা কোনও খাবার রোজ খেতে না চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। জোর করে খাওয়াবেন না।
  • বাচ্চার দেড় বছর পর্যন্ত বাজারচলতি দুধ, গরুর দুধ, টক জাতীয় ফল, বাদাম খাওয়ানো উচিত নয়।
  • আড়াই বছর পর্যন্ত আজিনা মোটো মেশানো কোনও খাবার খাওয়ানো চলবে না।
  • দোকানের খাবার, বেশি তেল-মশলাযুক্ত খাবার তিন বছর পর্যন্ত না খাওয়ানো উচিত।

যোগাযোগ : ৪০৪০৫০০০

আরও জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

[স্তনকে আকর্ষণীয় করতে এই কাজগুলি করেন? সাবধান!]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ