সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাবান সরিয়ে রেখে মুখ পরিষ্কার করার জন্য আমরা সাধারণত বেছে নিয়ে থাকি কোনও ব্র্যান্ডেড ফেসওয়াশ। শুধু তাই নয়, ত্বক উজ্জ্বল করতে স্ক্রাবারও ব্যবহার করেন অনেকে। বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে আবার বডিওয়াশের চলন রয়েছে ভালই। কিন্তু জানেন কি কীভাবে এই ফেসওয়াশ কিংবা বডিওয়াশ আপনার ও গোটা সমাজের ক্ষতি করছে?
না, দোষটা আমার বা আপনার নয়, ফেসওয়াশ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির। ত্বক যাতে আরও উজ্জ্বল হয় আর ফেসওয়াশ কিংবা স্ক্রাবারটি দেখতে আরও আকর্ষণীয় হয়, সেই কারণে সংস্থাগুলি এর মধ্যে প্লাস্টিক মেশায়। আরও ভালভাবে বললে, মাইক্রোপ্লাস্টিক অথবা মাইক্রোবিডস মিশে থাকে ফেসওয়াশে। যার আয়তন হয় ১ মিলিমিটার থেকে ৫ মিলিমিটারের মধ্যে। অর্থাৎ কোনওভাবেই এগুলি খালি চোখে দেখা যায় না। ফেসওয়াশ ব্যবহারের পর জল দিয়ে মুখ ধুলেই নর্দমা দিয়ে বেরিয়ে যায় সেই মাইক্রোপ্লাস্টিকও। এভাবেই সমস্ত আবর্জনা জমা হয়ে নদীতে কিংবা সাগরে গিয়ে মেশে। এবার খাবার ভেবে ভুলবশত সেই মাইক্রোবিডস খেয়ে ফেলে নদীর মাছ। ঘুরে ফিরে সেই মাছ যখন আপনারই পাতে এসে পৌঁছায় তখন আপনার পেটেও অজান্তে ঢুকে পড়ে মাইক্রোপ্লাস্টিক। যাতে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে আপনার পাচন তন্ত্র। অর্থাৎ চক্রাকারে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনছেন আপনি।
দিল্লির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৬টি ব্র্যান্ডের ১৮টি প্রসাধনী দ্রব্য কিনে একটি পরীক্ষা চালায়। সেসব দ্রব্য দেশের সর্বত্রই পাওয়া যায়। পরীক্ষায় দেখা যায় ২৮ শতাংশ প্রসাধনী দ্রব্যেই মিশে রয়েছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। যার মধ্যে ৫০ শতাংশ ফেসওয়াশ এবং ৬৭ শতাংশ ফেসিয়াল স্ক্রাবারে মাইক্রোবিডস বেশ উজ্জ্বল। ফেসওয়াশ ও স্ক্রাবার ছাড়াও টুথপেস্ট এবং শ্যাম্পুর মতো নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীতেও মিলেছে এই বিষাক্ত প্লাস্টিক। এগুলি ত্বকের টিস্যুর ক্ষতি করে বলেই জানাচ্ছেন গবেষকরা। গোটা বিষয়টি নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে।
প্রসাধনী দ্রব্যে প্লাস্টিক বর্জন করার ডাক দিয়েছিলেন দিল্লির এক আইনজীবী। আমেরিকা, ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় প্রসাধনীতে মাইক্রোবিডস নিষিদ্ধ। এর আগে এ বিষয়ে কেন্দ্রকে পদক্ষেপ করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের তরফেও। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি। আর তাই ফেসওয়াশ ব্যবহার করে মানুষ অজান্তেই নিজের বিপদকে আমন্ত্রণ জানিয়ে চলেছে আজও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.