Advertisement
Advertisement

Breaking News

হোলি হ্যায়! রং খেলুন, কিন্তু সাবধানে

হোলির আগে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক।

Tips for a safe and happy holi
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:March 11, 2017 1:21 pm
  • Updated:July 11, 2018 12:44 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাত পোহালেই দোল। এখনই হাওয়ায় রং উড়ছে। মিশছে ভাং। ভাসছে ভাইরাস। দোলের দিন আপনাকেও কেউ রাঙিয়ে দিতেই পারে। হোক না রংবাজি। কিন্তু একটু বাঁচিয়ে। দোলের দিন কী করবেন আর কী করবেন না? জেনে নিন। পরামর্শ দিচ্ছেন বিশিষ্ট ডার্মাটোলজিস্ট ডা. সন্দীপন ধর, অ্যালার্জি বিশেষজ্ঞ ডা. অনিমেষ দেব ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক ড. সিদ্ধার্থ দত্ত।

এখনকার দিনে যে সকল রং ব্যবহার করা হয়, তাদের কোনওটাই শরীরের জন্য উপকারী নয়। কিন্তু বাজারে ছেয়ে আছে বিষাক্ত কেমিক্যাল মেশানো রং। বাদল নেই আবিরও। তাতে মিশছে মার্কারি সালফাইড। দোলের রঙে মূলত মেশানো হয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল রং, যা বিভিন্ন কারখানায় ব্যবহার করা হয়৷ এছাড়াও মেশানো হয় বিভিন্ন্ মেটাল অক্সাইড৷ তাই এই রংগুলিকে বাদ দিয়ে বেছে নিন ভেষজ রং।

Advertisement

যে সকল রঙে না করা উচিত: কালো, সবুজ, বেগুনি, রুপোলি, লাল, হলুদ কোনও রঙই ভাল নয়। লেড অক্সাইড, কপার সালফেড, ক্রোমিয়াম আয়োডাইট থেকে শুরু অ্যালুমিনিয়াম ব্রোমাইট, মার্কারি সালফাইড, মেটারলিন ইয়ালো সবকিছুই মেশানো থাকে। এগুলির কারণে শরীরে নানা রোগ বাসা বাঁধতে পারে। স্কিন ক্যানসার, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস, বুদ্ধির বিকাশ কমে যাওয়ার মতো রোগও দেখা দিতে পারে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি কিন্তু ত্বকের হয়।

Advertisement

ভাল-খারাপ চিনুন: কেমিক্যাল রং মানেই তার উজ্জ্বলতা বেশি হবে৷ জৈব রং অর্থাত্‍ ফুলের পাপড়ি, বিভিন্ন হার্ব থেকে তৈরি রঙের উজ্জ্বলতা খুব কম হয়৷ খুব চকচকে রঙের দিকে প্রলোভিত না হওয়াই ভাল৷ এছাড়া ভেষজ রঙও ব্যবহার করতে পারেন। মূলত ফুলের পাপড়ি, গাছের মূল, কাণ্ড, পাতা থেকে ভেষজ রং তৈরি হয়৷ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকদিন আগে থেকেই এই পদ্ধতিতে রং ‌তৈরি শুরু হয়েছে৷ অন্যান্য বেশ কিছু সংস্থাও এই পদ্ধতিতে রং তৈরি করেছে। এগুলি ব্যবহার করা অপেক্ষাকৃত ভাল। আনুমানিকভাবে দোলে দেশজুড়ে গত দু’তিন বছরে প্রায় ২৫-৩০ হাজার কেজি ভেষজ রং বিক্রি হয়েছে৷

রঙে অ্যালার্জি
ভেজাল আবির
রঙে যে পরিমাণ ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকে তাতে অ্যালার্জি হওয়াই স্বাভাবিক৷ অনেকেই হয়তো আবির ক্ষতিকর নয় বলে জানেন৷ কিন্তু বাজারে বিক্রি হওয়া আবিরে সিলিকন থাকে৷ এগুলি অ্যাজমা রোগীর ফুসফুসে প্রবেশ করে শ্বাসকষ্ট আরও বাড়িয়ে দেয়৷ সিলিকনের সবচেয়ে সূক্ষ্ম গুঁড়ো আবার ফুসফুসে থেকে গিয়ে পরে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে৷ যাঁদের অ্যালার্জি, অ্যাজমার প্রবণতা আছে তাঁরা কেমিক্যাল মুক্ত ভেষজ রঙের উপর সম্পূর্ণ ভরসা করতে পারেন৷ কিন্তু ভেষজ রং সাধারণত যেসব ফুলের অংশ থেকে তৈরি হয় সেগুলিতে তাঁদের অ্যালার্জি আছে কি না তা আগে থেকে জেনে রাখা উচিত৷ তা না হলে ভেষজ রং ত্বকের সংস্পর্শে এলেই হাঁচি-কাশি শুরু হয়ে যেতে পারে৷

শ্বাসকষ্ট: দোলের দিন অনেকেই অ্যালার্জির তোয়াক্কা না করে হইহুল্লোড়ে মেতে যান৷ পরে শারীরিক অবস্থার অত্যন্ত অবনতি হলে পরিস্থিতি হাতছাড়া হয়ে যায়৷ আজকাল রঙে পেট্রোলিয়াম জাতীয় জিনিস, এসিটোন, জাইলিন, ম্যাগনেশিয়াম সিলিকা, টোলুইন, মিথেলিন জাত মারাত্মক সব দ্রব্য মেশানো হয়৷ এগুলি চোখ, চামড়া, নার্ভাস সিস্টেমকে ক্ষতি করে৷

অ্যালার্জি এড়াতে

  • শুধুমাত্র ভেষজ রং ব্যবহার করুন৷ তবে গুঁড়ো ভেষজ রং থেকেও অ্যালার্জি হতে পারে৷ তাই জলে গুলে রং খেলুন৷
  •  রং যত কম সময় ত্বকের সঙ্গে লেগে থাকে ততই ভাল৷ তাই ত্বকে রং লাগার সঙ্গে সঙ্গেই জল দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে৷
  • রাসায়নিক, পেট্রোলিয়ামজাত দ্রব্য মেশানো বাজারচলতি রঙের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে৷

খেলার আগে কী করবেন আর কী করবেন না:

  •  রং খেলার আগে বডি অয়েল বা সরষের তেল মেখে নিন৷ অ্যালোভেরা ক্রিম অথবা সানসি্ন লোশন অবশ্যই লাগান৷
  •  বিষাক্ত কেমিক্যাল থেকে চুল বাঁচাতে তেল মেখে বাঁধা জরুরি৷ দু’চামচ আমন্ড অয়েল, দু’ফোঁটা ল্যাভেন্ডার এসেন্সিয়াল অয়েল, এক ফোঁটা গোলাপের তেল, তিন-চার ফোঁটা লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে মেখে নিন৷ এই ঘরোয়া টোটকা মাথায় রং বসে গেলে তা ওঠায়৷
  •  ছেলেরা দাড়ি, গোঁফে সরষের তেল অথবা নারকেল তেল লাগিয়ে নিন৷
  •  মুখের রং তুলতে দু’চামচ ময়দা, এক ফোঁটা হলুদের সঙ্গে এক চামচ মধু, দুধ অথবা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে মুখে ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন৷ তারপর ধুয়ে ফেলুন৷
  •  ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে মধু লাগালে উপকার৷

বাড়িতে রং তৈরির রেসিপি: সাধারণত বাড়িতে ভেষজ রং বানানো যাবে গাঁদা, জবা, অপরাজিতা, গোলাপ, পলাশ দিয়ে৷

  • যে রং তৈরি করতে চান সেই রঙের ফুলের পাপড়ি জলে ভিজিয়ে রাখুন৷ তারপর তা মাইক্রোওভেনে ৬০-৭৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় গরম করুন৷ এতে পাপড়ি থেকে রং বেরবে৷ যদিও কিছু ফুলের ক্ষেত্রে একটু বেশি তাপমাত্রাও লাগতে পারে৷
  • পাপড়ি নিঃসৃত রং ট্যালকম পাউডারের সঙ্গে মিশিয়ে নিন৷ এরপর তা শুকিয়ে নিতে হবে৷
  • রং শুকিয়ে গেলে আরও মিহি করার জন্য মিক্সার বা শিলনোড়ায় গুঁড়ো করে নিন৷ রং প্রস্তুত৷

আরও পড়তে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ