Advertisement
Advertisement

নবদ্বীপ, শান্তিপুরের থেকে কেন আলাদা দাঁইহাটের রাসযাত্রা?

মহাপ্রভু থেকে মহাভারত, বৈচিত্রের নানা দিক।

This is why Dainhat rasjatra is different from Santipur and Nabadwip
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 2, 2017 4:05 pm
  • Updated:November 2, 2017 4:05 pm

ধীমান রায়, দাঁইহাট: রাজ্যের দ্বিতীয় প্রাচীনতম পুরসভা। বাংলায় মহাভারতের লেখক কাশীরাম দাসের জন্মস্থান। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, নেতাজির বহু স্মৃতির সাক্ষী ভাগীরথী তীরের দাঁইহাট। এত মণি-মানিক্যের বাইরেও দাঁইহাটের আলাদা পরিচিতি দিয়েছে তার রাস উৎসব। কাছাকাছি নবদ্বীপ এবং শান্তিপুরের থেকে কোনও অংশ কম যায় না এই শহরের রাসযাত্রা।

[আলতাফ মিঞার হাতে গড়া রাসচক্রেই উৎসবের বোধন কোচবিহারে]

Advertisement

DAINHAT-RAS.jpg-2

Advertisement

দাঁইহাটের রাস উৎসব বহু প্রাচীন। প্রায় ৫০০ বছর পুরনো রাস উৎসব। কেন এই শহরের রাস এত পরিচিত? ইতিহাসবিদরা বলেন, ভাগীরথীর তীরে এই এলাকা এক সময় জঙ্গল ছিল। প্রায় ৭০০-৮০০ বছর আগে এমন পরিবেশ শুরু হয়েছিল শক্তির সাধনা। কাপালিক, তান্ত্রিকরা নিয়মিত আসেন। তারা সাধনা করতেন। শাক্তধর্মের প্রভাব ছিলই। তারপর ধীরে ধীরে ছবিটা বদলাতে থাকে। চৈতন্যদেবের আবির্ভাবের পর বৈষ্ণবধর্মের ছোঁয়া লাগে কাটোয়ার অদূরের এই জনপদে। জানা যায় নবদ্বীপের শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু দাঁইহাটের উপর দিয়ে গিয়েছিলেন কাটোয়ায়। উদ্দেশ্য সন্ন্যাস গ্রহণ করা। এরপর শাক্ত ঔ বৈষ্ণব ধর্মের মিলনক্ষেত্র হয়ে ওঠে দাঁইহাট। পাশাপাশি এই এলাকায় কাঁসা, পিতলের কারবার চলত। জলপথে হত বাণিজ্য। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আগে ওলন্দাজরা এসেছিল দাঁইহাটে। এমনকী এখানে বর্গী হামলার কথা ও জানা যায়। তখন এই অঞ্চলের নাম ছিল ইন্দ্রাণী পরগনা। এই ইন্দ্রাণী পরগনা ছিল কাটোয়া গঙ্গা তীরবর্তী অঞ্চল হতে অগ্রদ্বীপ পর্যন্ত। তখন ছোট ছোট গ্রাম নিয়ে ছিল এই ইন্দ্রাণী। একটি প্রবাদ বাক্য আছে। বারো হাট তেরো ঘাট, যে বলতে পারবে তার বাড়ি দাঁইহাট। যেমন একাইহাট, বিকিহাট, মণ্ডলহাট, ঘোষহাট, পাতাইহাট, পানুহাট, দাঁইহাট ইত্যাদি। রাসের বিবর্তনের পাশাপাশি পুজোর সংখ্যাও বেড়েছে। বর্তমানে বাড়ির পুজো এবং বারোয়ারি ৫৪টি পুজো কমিটি রাস উৎসব পালন করে।

[মরশুমের প্রথম তুষারপাত ছাঙ্গুতে, উচ্ছ্বসিত পর্যটকরা]

দাঁইহাটের রাস আসলে ছিল পট পূর্ণিমা। মানে ছবি এঁকে পুজো হত। পরের দিকে সন্ধ্যার সময় তেলের প্রদীপ দেখে বানানো হত দেবীমূর্তি। মা শবশিব, মা বড় কালী, উগ্রচণ্ডী এই সব জাগ্রত দেবীর আরাধনা হত। পাশাপাশি কৃষ্ণ কালী, রাইরাজা, বকাসুর বধ, মাতঙ্গীমাতা প্রভৃতি পুজো দাঁইহাটে একসময় সুপরিচিত ছিল। এখনকার রাস পূর্ণিমা আগের চেয়ে অনেক সুসজ্জিত। পুজোর বাজেট বেড়েছে। এখন মণ্ডপ, আলো, বাদ্য ও প্রতিমার জমকই আলাদা। পাশাপাশি ভাঙা রাস বা প্রতিমার নিরঞ্জনও নজরকাড়া। এসবের টানে কাটোয়া মহকুমার পাশাপাশি বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকা, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া থেকে কৌতুহলীর আসেন দাঁইহাটে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ