Advertisement
Advertisement

Breaking News

কী রহস্য কালী মূর্তিতে? কেন মা নগ্নিকা?

বাংলার শান্ত দেবদেবীর আলয়ে কালী নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী।

This is why goddess Kali shun robes
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 19, 2017 6:31 am
  • Updated:September 26, 2019 5:45 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলার অন্যান্য দেবদেবীর নিরিখে কালীমূর্তি একেবারেই স্বতন্ত্র। এ ভূমি অসুর সংহারী দেবী দুর্গাকেও ঘরের মেয়ে উমা করে নিয়েছে। অসুর বধের মূর্তি পূজিতা হলেও মনে মনে সে জানে, মেয়ে এসেছে বাপের বাড়ি। এহেন বঙ্গভূমিতেই যে কালীমূর্তির পূজার প্রচলন আছে তা বেশ অন্যরকম। একদিকে খড়্গ, নরমুণ্ড, রক্তের মতো অনুষঙ্গ, অন্যদিকে বরাভয় প্রদানকারিণী মা। আবার তিনি বিবসনাও। এরকমই বৈপরীত্যের সমাহার কালী মূর্তিতে।

[  দস্যুর তেজ আর রাজার ইচ্ছে, দুইয়ের যোগসূত্রে এই কালীক্ষেত্রর প্রতিষ্ঠা ]

Advertisement

কিন্ত কেন এই রহস্য ঘিরে আছে কালীমূর্তিকে? বাংলার প্রায় সব দেবদেবীই বসন পরিহিতা। সালঙ্কারা। মা কালীকেও বিভিন্ন অলঙ্কারে সাজানো হয়। তবে বরাবর তাঁর নগ্নিকা রূপই পূজ্য। প্রসাদী ভক্তিগীতিতে তাই মাকে বসন পরার আর্তি শোনা যায়। এছাড়া কোনও কোনও রূপে কালী ভয়ংকরী, যেমন ছিন্নমস্তা। আবার কোথাও তাঁর মাতৃভাবের প্রকাশ। দশমহাবিদ্যা বলে যে দশজন সিদ্ধা দেবী, তাঁদের প্রথমজন হলেন কালী। এই কালীর বিভিন্ন রূপের সন্ধান পাওয়া যায়। যথা, দক্ষিণাকালী, ভদ্রকালী, সিদ্ধকালী, গুহ্যকালী প্রভৃতি। এর মধ্যে দক্ষিণাকালী রূপটিই বাংলায় বেশিমাত্রায় পুজো পায়। এই মূর্তিতে মায়ের একহাতে ছিন্ন নরমুণ্ড ও খড়্গ। অন্যহাতে বরাভয়। মায়ের গাত্রবর্ণ মেঘের ন্যায় এবং তিনি দিগম্বরী। কেন এই কালি মূর্তি নগ্ন?

Advertisement

দশভুজা মহাকালী, অন্যরকম দেবীদর্শন ইংলিশবাজারে ]

কালী শব্দের উৎপত্তি কাল থেকে। কাল-এর স্ত্রীলিঙ্গ কালী। কাল বলতে বোঝায় সময়। অর্থাৎ অতীত-বর্তমান ও ভবিষ্যতকে যিনি কলন করেন তিনি মহাকাল। আর সেই মহাকালের নিয়ন্ত্রক যিনি, তিনিই মহাকালী। সাধক কমলাকান্ত ভট্টচার্যের গানে তাই পাই, ‘সদানন্দময়ী কালী মহাকালের মনমোহিণী, আপনি নাচ আপনি গাও মা আপনি দাও মা করতালি।’ এই গানেই আর একটু এগিয়ে কমলাকান্ত বলেন, ‘আদিভূতা সনাতনী শূণ্যরূপা শশীভালী, ব্রহ্মাণ্ড ছিল না যখন মুন্ডুমালা কোথা পেলি?’ এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই দেখা যায়, আসলে কালী অনন্তের প্রতীক। ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির আগে মুণ্ডমালা পাওয়ার তাই প্রশ্ন উঠছে না। এ আসলে মানুষের অহং ছিন্ন করার প্রতীক। তাঁর এক হাতে তাই খড়্গ। সেই খড়্গের আঁকা চোখ প্রজ্ঞার প্রতীক। অন্য হাতে বরাভয়। এই কল্পিত রূপেই শক্তির দ্বিবিধ রূপের সমাহার। একদিকে তা বিনাশী, অন্যদিকে তা সৃষ্টিরও প্রতীক বটে।

চক দিয়ে তৈরি ৩ ইঞ্চি কালীর প্রতিমা, তাক লাগানো কীর্তি স্কুল পড়ুয়ার ]

এই আদিশক্তি বা আদ্যাশক্তি ‘সময়ের থেকেও উচ্চতর’। কাল থেকে কালীর উৎপত্তি ধরলে, তা আসলে সময়ের সীমানা পেরনো এক ধারণা। সেই অনন্তকে কোনও জাগতিক বস্ত্রের আবরণে আবৃত করা যায় না। দেবী তাই নগ্নিকা। আবার কোনও কোনও মতে বলা হয় কালী শক্তির প্রতীক, শক্তিকেও কোনও বসন বা আচ্ছাদনে আবদ্ধ করা যায় না।  তাই নগ্নিকা হিসেবেই কালীর ধারণা গড়ে উঠেছে। তবে ব্যাখ্যা যাই হোক না কেন, কালীমূর্তি যে বাংলার শান্ত দেবদেবীর আলয়ে ব্যতিক্রমী তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ