Advertisement
Advertisement

Breaking News

তিলকূট সন্দেশের চাহিদা পূরণ করছেন বিহারের কারিগররা

পিঠে-তিলে জমুক পৌষ পার্বণ।

Til made sweets are in huge demand
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:January 14, 2019 2:44 pm
  • Updated:January 14, 2019 2:44 pm

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল : পৌষের মিষ্টিপ্রেমী মানুষের জন্য মকর সংক্রান্তি মানেই তিলের নাড়ু, তিলের মিষ্টি বা তিলকূট সন্দেশের থাকে চাহিদা। বিশেষ করে সংক্রান্তির পিঠে পরবের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে তিলকূট সন্দেশের নাম। বাড়ির মা-কাকিমাদের হাতে তৈরি তিলের নাড়ু এখনও অমিল বেশিরভাগ জায়গায়। তবে বিহারের গয়া থেকে তিল মিষ্টির কারিগররা এসে সেই চাহিদা মেটাচ্ছেন শিল্পাঞ্চলের সখের মিষ্টিপ্রেমীদের।

বিহারের সেই কারিগররা এখন অস্থায়ী আস্তানা গেড়েছেন সীমান্তের আসানসোলে। দিনরাত এক করে তিলের নানা রকম মিষ্টি মণ্ডার কাজে ব্যস্ত গয়া জেলার পারদর্শী কারিগররা। মকর সংক্রান্তির পরদিনই তাঁরা আবার চলে যাবেন নিজের রাজ্যে। কারণ তিল খাওয়ার উপরে রয়েছে বিশেষ ধর্মীয় আচারবিধি। ধর্মীয় আচার মতে সংক্রান্তির পর এই মিষ্টি খাওয়ার রেওয়াজ নেই বাঙালিদের। সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে আসানসোলের হটনরোড, কুলটির নিয়ামতপুর, বারাবনির দোমাহানি, রানিগঞ্জ বাজার ও জামুড়িয়া বাজারে তাঁবু খাটিয়ে বসেছে তিল সন্দেশের কারখানা। সেখানেই চলছে বিক্রিবাটা। জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে গয়ার কারিগররা এবার নিয়ে এসেছেন সুগার ফ্রি তিলকূট সন্দেশ। সব থেকে বেশি বিক্রি হচ্ছে বিশেষ পদ্ধতিতে গড়া এই সন্দেশটি। কারিগর সতীশ প্রসাদ জানালেন তিলের সুগার ফ্রি মিষ্টি তৈরির পদ্ধতি। এতে সাদা তিলের ব্যবহার বেশি। সুগার ফ্রি তিল সন্দেশ মূলত তৈরি হয় খোয়া দিয়ে। তিল হাল্কা ভেজে নিয়ে গুঁড়ো করে পেটাতে হবে। যত পেটানো হবে, ততই খাস্তা হবে তিলকূট। খোয়া বা সুগার ফ্রি মিষ্টির দাম কেজি প্রতি ২৭০ টাকা করে। কারখানার মালিক সঞ্জীব কুমার জানিয়েছেন, ‘গত ১৫ দিনে সুগার ফ্রি তিলকূট তৈরি হয়েছে ৪০ কেজি। সব বিক্রি হয়ে গিয়েছে।’ এছাড়া চিনির তিলকূট, গুড়ের তিলকূট ও তিলের নাড়ু তৈরি হচ্ছে চাহিদা অনুসারে। চিনির তিলকূট কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকায়। ১ কেজি গুড়ের তিলকূট কিনতে হলে দাম দিতে হবে ২০০ টাকা। কারিগর মিথিলেশ প্রসাদের ব্যাখ্যা, ‘সুগার ফ্রি তিলকূট তৈরি করতে বেশি সময় ও বেশি লোকবল লাগে। তাই দাম বেশি। খোয়ার তিলকূট তৈরি করতে পাঁচজন কারিগরকে একসঙ্গে কাজ করতে হয়। তারপর তার প্যাকেজিং হয়। কারণ, খোয়ার তিলকূটে হাওয়া লাগলে আর খাস্তা থাকে না। নষ্ট হয়ে যায়।’ এবছর তিলের মিষ্টির পসার ভালো জমেছে বলে খুশি সকলেই।

Advertisement

                                   [বেলাশেষের পৌষে পাতে থাক পশ্চিমি পিঠে]

Advertisement

কুলটির গৃহবধূ রনিতা স্যান্যালের কথায়, শুধু বাঙালি নয়, হিন্দি ভাষাভাষীদের মধ্যে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে তিলকূট সন্দেশের। তিলের নাড়ু বাড়িতে তৈরি করা গেলেও তিলকূট তৈরি করা যায় না। এখানে হাতে গরম তিলকূট পেয়ে চাহিদা আরও বাড়ছে। তিনি আরও বলছেন, ‘যেভাবে সুন্দর সুন্দর প্যাকেট তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে, তাতে মকরসংক্রান্তি উপলক্ষে গিফটও দিতে পারছি।’ প্রবীণ দিলীপ চক্রবর্তীর বক্তব্য, সুগারের রোগী হওয়ায় সংক্রান্তিতে এসব মিষ্টি, নাড়ু খাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও খেতে পারতেন না। কিন্তু এবার সুগার ফ্রি খোয়ার তিলকূট সন্দেশ আসায় তিনি তিলের স্বাদ গ্রহণ করছেন নির্ভাবনায়। শুধু রসনাতৃপ্তিতে নয়, খাদ্যশস্য হিসেবে তিল যে কত উপকারী, তা জানালেন চিকিৎসক বাসুদেব সরকার। তিনি বলেন, শীতের শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখে তিল। এর সঙ্গে ভিটামিন, মিনারেলসও আছে। তাই সহজে হজম করতেও সাহায্য করে এই মিষ্টি। বিহারের কারিগররা সারা বছর ধরে বিহারের গয়ায় এই মিষ্টি তৈরি করেন। দিন পনেরোর জন্য বাংলায় আসেন। বিশেষ এই মিষ্টি অন্য কোথাও সারা বছর পাওয়া যায় না। মকর সংক্রান্তির মরশুমে আসানসোলে তিলের রেডিমেড মিষ্টি বাঙালির পিঠেপার্বণে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ