Advertisement
Advertisement
রোগা

সাইজ জিরোর দিন শেষ, সহজ উপায়ে বদলে ফেলুন চেহারা

ওজন বাড়াতে চান? জেনে নিন চিকিৎসকদের পরামর্শ।

Here are some tips to fat
Published by: Sayani Sen
  • Posted:March 28, 2019 9:11 pm
  • Updated:March 28, 2019 9:11 pm

অতিরিক্ত রোগা হলেও কিন্তু বিপদ। ওজন কমাতে যেমন বেগ পেতে হয় তেমনই ওজন বাড়ানোও সোজা কথা নয়। খেয়ে ওজন বাড়ানোর টিপস দিলেন আর এন টেগোর হসপিটালের বিশিষ্ট ডায়েটিশিয়ান দীপা মিশ্র। শুনলেন জিনিয়া সরকার

মোটু নাকি পাতলু! দু’দিকেই সমস্যা। ওজন যখন সীমাহীনভাবে বাড়তে থাকে তখন শরীরে একের পর এক রোগ বাসা বাঁধতে শুরু করে। তাই সব ক্ষেত্রেই চিকিৎসকদের নির্দেশ, ওজন কমাতে হবে। অন্যদিকে অত্যধিক রোগাও কিন্তু মোটেই ভাল লক্ষণ নয়। ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম হলে খুব বেশি সুস্থ থাকা যায় তা কিন্তু একেবারেই নয়। বরং হিতে-বিপরীত হতে পারে। তাই যাঁরা খুব রোগা তাঁদের ওজন বাড়ানো জরুরি। সেক্ষেত্রে সহজ দাওয়াই খেয়ে মোটা হওয়া। পাশাপাশি নিজেকে রোগা ভেবে উদাসীন না থেকে চেহারার ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।

Advertisement

রোগা হলেও বিপদ
১. অতিরিক্ত রোগারা খুব কমজোরি হয়ে পড়ে। অল্পেতেই দুর্বল হয়ে যায়। মেটাবলিক রেট কমে যায়। ফলে হজম ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে।
২. খুব বেশি শারীরিক চাপ বহন করার ক্ষমতা কমতে থাকে।  ক্লান্তি ভাব দেখা যায়।
৩. শরীরের সৌন্দর্য হ্রাস পেতে থাকে।
৪. শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি অত্যন্ত কমে যায়।
৫. অল্পবয়সি মহিলারা খুব রোগা হলে সন্তান ধারণে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: বয়ঃসন্ধিতে সন্তানকে নিয়ে সমস্যা? পরম যত্নে বশে আনুন অবুঝ কৈশোর]

রোগা কি না চিনুন
একজনের ওজন স্বাভাবিক রয়েছে নাকি তার চেয়ে কম তা বুঝতে তাঁর বিএমআই কত তা জানা দরকার। বডি মেটাবলিক ইনডেক্স ২০-২৩ এর মধ্যে থাকলে তা স্বাভাবিক ধরে নেওয়াই যায়। কিন্তু কারও যদি বিএমআই ১৮.৫-এর কম থাকে সেক্ষেত্রে তাঁকে ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম বলা হয়। মেপে নিন-ওজন/ উচ্চতা (মিটার)৷ 

যখন চিন্তার
ওজন যদি হঠাৎ করেই কারও কমতে থাকে সেক্ষেত্রে দেখতে হবে তাঁর শরীরে কোনও অসুখ রয়েছে কি না। অনেক সময় ডায়াবেটিসের কারণেও হঠাৎ ওজন কমে যেতে দেখা যায়। এছাড়া এমনও হতে পারে যাঁদের পরিবারে সকলের শারীরিক গঠনই খুব রোগা প্রকৃতির সেক্ষেত্রে রোগা হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার হতে পারে। তবে অবহেলা না করে রোগার মোকাবিলায় ঠিক মতো খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত দরকার।

খেয়ে মোটা হতে
সাধারণত যাঁদের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম তাঁদের উচিত ব্রেক ফাস্ট, লাঞ্চ, ডিনার ছাড়াও আরও তিনবার অল্প অল্প করে খাওয়া। সাধারণত বিএমআই ১৮-র কম হলে রোজ অন্ততপক্ষে ৫০০ কিলো ক্যালোরি ডায়েট মেপে খাওয়া জরুরি। স্বাভাবিকভাবে মাসে দেড় থেকে দু’ কেজি ওজন বাড়লে বুঝতে হবে তাঁর ডায়েট ঠিক হচ্ছে। এটাই স্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধির হিসাব।

[ আরও পড়ুন: চুলচেরা চিড় অচিরেই ডেকে আনতে পারে বিপদ]

ব্রেক ফাস্টে থাকুক
দুধ-ডিম অবশ্যই রাখুন। চিজ, ছানা খাওয়া যেতে পারে। দুধে ওটস মিশিয়ে খেলে উপকার। এছাড়া পাউরুটি, হাতে গড়া রুটি খান। স্যান্ডউইচ বা এমনি পাউরুটি খেলে তাতে সাধারণ বাটার না মাখিয়ে পিনাট বাটার লাগিয়ে খেলে উপকার। এই বাটার বেশি স্বাস্থ্যকর। এতে শরীরে খারাপ ফ্যাটের আধিক্য হয় না।

ব্রেক ফাস্ট ও লাঞ্চের মাঝে
এই সময় ফল বা ফলের রস খেলে উপকার। বিশেষ করে কলা, আম, রোগাদের জন্য খাওয়া ভাল। এছাড়া যেকোনও ফলের রস বা মিল্ক সেক খাওয়া যায়। শিশুদের জন্য মিল্ক সেক অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। প্রয়োজনে ফল দিয়ে মিল্ক সেক বানিয়ে তাতে বিভিন্ন ড্রাইফ্রুট বা বাদাম, কিশমিশ মিশিয়ে খান। এছাড়া ছাতুর সরবত রোগাদের বডি মাস বাড়াতে অত্যন্ত উপকারী।

দুপুরে খান
ওজন কম থাকলে ভাত খেলে কোনও সমস্যা নেই। পাশাপাশি ভাত হাই কার্বোহাইড্রেট ফুড তাই ওজন বাড়াতেও সাহায্য করে। ভাতের সঙ্গে বিভিন্ন সবজির তরকারি খেলে উপকার। এতে স্বাস্থ্যকর ক্যালোরি থাকে। তবে আলু খেতে হবে। আলু ভাতে, আলু ভাজা, আলু সিদ্ধ কিংবা তরকারিতে – সে যেভাবেই হোক আলু খান। রোজ মাছ ও ডিম খাওয়া যেতে পারে। সয়াবিন অয়েল বা অলিভ অয়েল খেলে উপকার। সিদ্ধ সবজি খেলে সেক্ষেত্রে অলিভ অয়েল উপরে ছড়িয়ে দিয়ে খেতে পারেন। রোজ দই খান। তবে চিকেন বা মটন রোজ নয়। সপ্তাহে ১ দিন খাওয়া যেতে পারে।

সন্ধেবেলায় অল্প করে
ক্যালোরি বাড়াতে সাহায্য করে এমন খাবার খেতে হবে। সেক্ষেত্রে সন্ধে বেলায় কাস্টার্ড, অল্প তেলে বাড়িতে বানানো চাউমিন, চিড়ের পোলাও, উপমা খাওয়া যেতে পারে।

[আরও পড়ুন: শান্তির নিদ্রা চান? ঘুম দিবসে নেটিজেনরা বাতলে দিলেন কয়েকটি উপায়]

রাতে কম
রাতে খুব বেশি না খাওয়াই উচিত। হাতে গড়া রুটি অথবা ভাত, সঙ্গে তরকারি বা ডাল খান। খুব পেট ভরে না খাওয়াই ভাল। সকালে ব্রেকফাস্ট খেতে দেরি হলে সেক্ষেত্রে খালি পেটে না থেকে চা-বিস্কুট বা দুধ-কেক খেতে হবে। তারপর ব্রেকফাস্ট করুন।

যা ইচ্ছে তা-ই নয়
রোগা মনে করে যদি কেউ যত ইচ্ছে ফাস্টফুড, ভাজা খাবার বেশি করে খেতে থাকেন তাতে কিন্তু ক্ষতিই বেশি। অনেকেই মনে করেন হয়তো বেশি করে মাখন, তেলে ভাজা খাবার, চাউমিন, পাস্তা, পেস্ট্রি, মেয়োনিজ খেলে তাড়াতাড়ি মোটা হয়ে যাবেন, তা কিন্তু নয়। এই খাবার থেকে শরীরে খারাপ ফ্যাটের মাত্রা বাড়তে থাকে যা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা, রক্তচাপ বাড়ায় ও নানা রোগ ডেকে আনে। তাই রোগা হলেও এই ধরনের খাবার খাবেন না। খেতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবার। খাওয়ার পাশাপাশি পেশির শক্তি বাড়াতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করতে হবে। সেক্ষেত্রে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ , সিটআপ, ওঠবোস করে যে ধরনের ব্যায়ামগুলি রয়েছে তা করা যেতে পারে। হাঁটা, সাঁতার কাটা এগুলি করা চলবে না। এতে খুব দ্রুত ক্যালোরি বার্ন হয়। আরও রোগা হয়ে যেতে পারেন।

পরামর্শ: ৯০৫১৯৩৯৩৯৩

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ