Advertisement
Advertisement
দিলদার

মৃত্যুর জবাব ইভিএমে, পঞ্চায়েত ভোটে নিহত দিলদারের স্মৃতি নিয়েই ভোটদান পরিবারের

পঞ্চায়েত ভোটে নিহত দিলদারের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে জলঘোলা হয়েছিল৷

Dildar Khan, died during Panchayet poll, his wife casts vote peacefully
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 29, 2019 9:53 pm
  • Updated:April 29, 2019 9:53 pm

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ভোট এলেই দু দিন আগে থেকে ঘুম উবে যেত দিলদার খানের। দিনরাত ভোট কেন্দ্রের চারপাশে পড়ে থাকতেন। দলকে জেতাতে হবে, ভোটারদের আনতে হবে। সেই ভোটই প্রাণ কাড়ল দিলদারের৷

আবার ভোট এসেছে। এখন ঘুম উবে গিয়েছে দিলদারের স্ত্রী লুৎফা বিবির। গত বছর মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হয়েছেন দিলদার। স্বামীর কথা ভেবে এখন আর ঘুম আসে না। ভোটের আগে স্বামীর কথা ভেবে ফের দু’চোখে জলের ধারা। স্বামীর মুখ মনে করে কোলের ছোট মেয়েটাকে নিয়ে সোমবার ভোট দিলেন লুৎফা। সঙ্গে ছিলেন দিলদারের মা আঙুরা বিবি। তাঁর কথায়, নিজের ভোটটা নিজে  দিয়ে মনে কিছুটা শান্তি মিলল। তবে বড় ছেলের অকাল মৃত্যুর জ্বালা কবরে যাওয়ার আগে মিটবে না।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ভোটের দিনই কোলে এল ‘মমতা’, প্রিয় নেত্রীর নামে মেয়ের নামকরণ তৃণমূল কর্মীর]

২০১৮, এপ্রিল। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের পর্ব৷ এমনই বৈশাখে সূর্যের তেজের মত বীরভূম জুড়ে রাজনৈতিক উত্তাপ। সিউড়ি-১ ব্লক অফিসের দিকে মনোনয়ন জমা দেওয়ার মিছিল এগোতেই হঠাৎ বোমার ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারদিক। মুহূর্মুহূ গুলির শব্দ। প্রাণ যায় দিলদার শেখের। মর্গে দেহ রেখেই শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক তরজা৷ দিলদার কার? কোন দলের কর্মী? দিলদারের বাবা তহিদ শেখ হাসপাতালে দাঁড়িয়ে প্রথমে নিজেদের বিজেপি সমর্থক বলে দাবি করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতির ১৮০ ডিগ্রি বদল৷ জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল দিলদারের বাবাকে পাশে বসে দাবি করেন, পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিনের তৃণমূল কর্মী।

Advertisement

[আরও পড়ুন: প্রথমবার গণতন্ত্রের উৎসবে শামিল, ভোট দিলেন ১ হাজার পাক শরণার্থী]

বছর ঘুরে ফের এল লোকসভা নির্বাচন। গত বছরের কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় বাহিনী কড়িধ্যা পঞ্চায়েত এলাকায় রুটমার্চের সময় দিলদারের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে আশ্বস্ত করেছিল। কিন্তু সেদিনের সেই দুঃসহ স্মৃতি যেন ভুলতে পারছেন না কড়িধ্যা পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা। দিলদারের ভিটে ভাট্টিপাড়ার বাসিন্দারা অবশ্য ঠিক করেছিলেন, ঘরের ছেলের খুনের সঠিক জবাব হবে বুথে গিয়ে নিজের হাতে ভোট দিয়ে। তাই দাদার কথা মাথায় রেখে দিলদারের ভাই সামশের খান সকালেই হাজির হন কড়িধ্যা বিদ্যানিকেতনের ১৯২ নম্বর বুথে। বিক্ষিপ্ত অশান্তির মধ্যেও ভোটদান করে দিলদারের বাবা তহিদ খান বলেন, ‘ছেলেকে আর ফিরে পাব না। তবে প্রার্থনা করব, আমার মত কোনও বাবাকে যেন সন্তানহারা না হতে হয়।’ এদিকে ভোট পর্ব শেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে কড়িধ্যা। কারণ, নিজের হাতে তারা ভোট দিতে পেরেছেন। এবং নির্বাচন হয়েছে রক্তপাতহীন।

ছবি: শান্তনু দাস

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ