Advertisement
Advertisement
মিল্ক ফিস

ইলিশের ঘাটতি, বাঙালির রসনাতৃপ্তিতে মিল্ক ফিশ চাষে জোর

নোনাজলের পাশাপাশি পুকুরের মিষ্টি জলেও এই মাছের চাষ সম্ভব।

Milk Fish cultivation in East Medinipur's Haldia
Published by: Sayani Sen
  • Posted:September 7, 2019 5:13 pm
  • Updated:September 7, 2019 5:13 pm

সৈকত মাইতি, তমলুক: মাছ চাষে চাষিদের লাভের মুখ দেখাতে উদ্যোগী পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। ভেনামী চিংড়ির বিকল্প হিসাবে হারিয়ে যাওয়া মিল্ক ফিশ চাষে জোর দেওয়া হচ্ছে। সুদূর অন্ধ্র থেকে আকাশপথে উড়িয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে মিল্ক ফিশের চারা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিস্তীর্ণ অংশজুড়েই নদী কিংবা সমুদ্র উপকূল। কাজেই প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে কাঁথি, দিঘা, খেঁজুরি, নন্দীগ্রাম, ভগবানপুর-সহ বিভিন্ন এলাকাজুড়ে নোনাজলের মাছ চাষ শুরু হয়েছে। উপকূলবর্তী ব্রেকিস ওয়াটারে মাছ চাষের ক্ষেত্রে লাভজনক হিসেবে চিংড়ি কিংবা ভেনামী চিংড়ি চাষকেই বেছে নেন জেলার মৎস্যচাষিরা। কিন্তু বর্তমানে নানা কারণে এই চাষে অনেকটাই ভাঁটার টান। অভিযোগ, ভেনামী চিংড়ি চাষের ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। তাছাড়া দিন দিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে আসায় এই চিংড়ির চাষ বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এতেই উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসন নতুন করে বিকল্প চাষের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দেয়। সেইমতো এবার অন্ধ্রের আদলে রুই, কাতলার পাশাপাশি মিল্ক ফিশ চাষের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।

[আরও পড়ুন: বৃষ্টির ঘাটতি বাঁকুড়ায়, আমন ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা]

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চিংড়ির থেকে অনেকটাই সহজলভ্য এই মিল্ক ফিশ চাষ। আর উৎপাদন খরচ অনেক কম ও চাহিদা বেশি হওয়ায় বাজারও যথেষ্টই ভাল। ফলে চাষিরা নিজস্ব পুঁজিতেই এই চাষ করতে পারেন। তাছাড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকায় এই চাষে ঝুঁকিও যথেষ্ট কম। এক একর এলাকায় মিল্ক ফিশের চাষ করলে মাত্র মাস পাঁচেকের মধ্যেই ২ থেকে ৩ টন মাছ উৎপাদন সম্ভব। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৬ থেকে ৭লক্ষ টাকা। তাই ইতিমধ্যেই এই মাছের চাষে উৎসাহ দিতে প্রশাসনের উদ্যোগেই পরীক্ষামূলকভাবে হেঁড়িয়ার ইড়িঞ্চি ফার্মে ১ একর এলাকাজুড়ে এই মিল্ক ফিশের চাষ শুরু হয়েছে।

Advertisement

Milk-Fish

Advertisement

প্রশ্ন একটাই, কী এই মিল্ক ফিশ? মূলত এই মাছের গায়ের রঙ দুধ সাদা। বিজ্ঞানসম্মত নাম চ্যাণস চ্যাণস। ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ওজনের এই মাছ স্বাদে অনেকটাই ইলিশের মতো। এক সময় স্থানীয় নদীতেই এদের দেখা পাওয়া যেত। কিন্তু কালের নিয়মে আজ প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে মিল্ক ফিশ। পশ্চিমবঙ্গে আবারও এই মাছ চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে কেরল, তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় মিল্ক ফিশ চাষে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

[আরও পড়ুন: জঙ্গলমহলের সমবায়ের উদ্যোগ, ‘মানভূম ঘি’র সুবাস ছড়াচ্ছে বাংলায়]

নোনাজলের পাশাপাশি পুকুরের মিষ্টি জলেও এই মাছের চাষ সম্ভব। সামগ্রিক অঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ (‌সিএডিসি)‌ তমলুক প্রকল্পের আধিকারিক উত্তম লাহা বলেন, “জেলায় চিংড়ি বা ভেনামীর চাষ লাভজনক। তবে বর্তমানে এই মাছের চারা কিনতে হিমশিম কৃষকরা। এমনকী চাষের পরেও তা কেনার লোক বিশেষ পাওয়া যায় না। তাই ক্রেতার অভাবে ব্যবসায় মন্দা মৎস্যজীবীদের। এই পরিস্থিতিতে জেলাজুড়ে সুস্বাদু মিল্ক ফিস চাষের বাড়বাড়ন্ত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ