Advertisement
Advertisement
বৃদ্ধা

জোটেনি অ্যাম্বুল্যান্স, বাধ্য হয়ে মাকে কাঁধে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেন রাম-লক্ষ্মণ

এনআরএস হাসপাতালে ভরতি ছিলেন সুন্দরবনের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধা।

Two youth carried their mother by arm from Kolkata to Sunderban
Published by: Sayani Sen
  • Posted:November 13, 2019 8:45 pm
  • Updated:November 13, 2019 9:02 pm

দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: একে অর্থাভাব। তার উপর আবার বুলবুলের দাপট। জোড়া ফলায় গাড়ি চড়িয়ে সদ্য হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়া মাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে অসুস্থ মাকে কাঁধে করে দোলনায় চাপিয়ে ট্রেনে চড়ালেন সুন্দরবনের বাসিন্দা রাম এবং লক্ষ্মণ নামে দুই যুবক। নদী তীরবর্তী বুলবুল বিপর্যস্ত গ্রামে মেলেনি গাড়ি। তাই আবারও কাঁধে চাপিয়ে মাকে বাড়ি নিয়ে গেলেন ‘সুপুত্র’। মাকে এত কষ্ট করে বাড়ি নিয়ে গিয়ে যেন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন দুই ভাই। তাঁরাই এখন গোটা গ্রামের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাধানগর গ্রামের রমণী মণ্ডল গত ১৫ দিন যাবৎ অসুস্থ। তিনি ভরতি ছিলেন কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতালে। বুধবার হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু অসুস্থ মাকে চিকিৎসা করানোর পর হাতে টাকা ছিল না তাঁদের। তাই অ্যাম্বুল্যান্স বা অন্য কোনও গাড়ি জোগাড় করা তাঁদের পক্ষে কার্যত অসম্ভব হয়ে ওঠে। কিন্তু সবে সুস্থ হয়ে ওঠা মাকে তো আর বাড়ি না নিয়ে গেলে চলবে না। তাই ভাবনাচিন্তা করতে শুরু করেন তাঁরা। বাধ্য হয়ে দোলনায় করে কাঁধে চাপিয়ে নিলেন দুই ছেলে।  রাম, লক্ষ্মণ নামে ওই দুই যুবক বলেন, “হাসপাতাল থেকে কাঁধে চাপিয়ে শিয়ালদহ পর্যন্ত নিয়ে আসি মাকে। তারপর ক্যানিংয়ের ট্রেনে উঠি। ফের কাঁধে চাপিয়ে নিয়ে আসি একটা মোটর ভ্যানে। সেখান থেকে নদী পার করে গ্রামের বাড়ি ফেরার কথা। কিন্তু নদী পার করে শুনলাম রাস্তায় এত গাছ পড়ে রয়েছে যে ভ্যানে করে যাওয়া যাবে না। তবে অসুস্থ মাকে হাঁটতে দিইনি। কাঁধে করে বাড়ি নিয়ে গিয়েছি। সময় বেশি লাগল ঠিকই কিন্তু মা যথেষ্ট সুস্থভাবে বাড়ি ফিরেছেন।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: সৎ বাবার যৌন লালসার শিকার মেয়ে, লাগাতার ধর্ষণে গর্ভবতী নাবালিকা]

বর্তমান যুগে বেশিরভাগ মানুষই হয়ে গিয়েছেন আত্মকেন্দ্রিক। প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ে ছুটতে ছুটতে নিজের বাবা-মাকেও ভুলে যান অনেকেই। দায়দায়িত্ব এড়িয়ে নিজেকে নিয়ে দিব্যি সুখে বাঁচেন তাঁরা। সেই দায়িত্বজ্ঞানহীন মানুষগুলিকেই মিথ্যে প্রমাণ করলেন সুন্দরবনের রাম-লক্ষ্মণ। যেকোনও পরিস্থিতিতে বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে চলাই যে জীবন, সেই আপ্তবাক্যকেই যেন বাস্তব রূপ দিলেন তাঁরা। ছেলেদের এই কর্মকাণ্ডে খুশি বৃদ্ধা মা। কষ্ট করে মানুষ করা ছেলেরা যে প্রকৃত অর্থে মানুষ হয়েছেন, তাই যেন শেষ জীবনে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা জোগায় তাঁকে।

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ