Advertisement
Advertisement

Breaking News

বহমান

সৌমিত্র-অপর্ণার ‘বহমান’ যাত্রা হোঁচট খায় চিত্রনাট্যে

সিনেমা হলে যাওয়ার আগে জেনে নিন কেমন হল ছবিটি।

Read the review of Soumitra-Aparna's movie Bohomaan
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:November 30, 2019 1:49 pm
  • Updated:November 30, 2019 3:49 pm

চারুবাক: সৌমিত্র-অপর্ণা জুটির প্রায় হারিয়ে যাওয়া ক্যারিশমাকে ‘ক্যাশ’ করে সম্ভবত অনুমিতা দাশগুপ্তের ‘বহমান’ ছবির পরিকল্পনা। সেই ক্যারিশমার বেশ কিছু উচ্চারিত বা অনুচ্চারিত মুহূর্ত তৈরিও করতে পেরেছেন পরিচালক। তাঁদের পঞ্চাশ বছর আগের রোম্যান্টিকতার জাদু এখনও পুরনো প্রেমের মতোই নস্টালজিক লাগবে বয়স্ক দর্শকের কাছে। কিন্তু আজকের দর্শক কি সেভাবে রিলেট করতে পারবেন সেই স্মৃতির সঙ্গে?

সেটার জন্যই অপর্ণার ছেলের চরিত্রে সুব্রত এসেছে চিত্রনাট্যে কিছুটা মাদার ফিক্সেশন নিয়ে। কিন্তু মায়ের প্রাক্তন প্রেমিক অধ্যাপক সেলিমকে তার অপছন্দের কারণ হিসেবে জোরাল যুক্তি খাড়া করতে পারেনি। চরিত্রটি ব্রাত্যর সুঅভিনয় সত্ত্বেও কেমন শেকড়হীন লাগল। সেই তুলনায় স্ত্রী জয়িতার চরিত্র আজকের সময়ের কাছে অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য। নিজের মা এবং শাশুড়ি মায়ের সঙ্গে তার বন্ধুত্বের মতো স্বাভাবিক সম্পর্কটা আজকের প্রজন্ম রিলেট করতেই পারে। পঞ্চাশ বছরের পুরনো প্রেম, দু’জনের আবার দেখা হওয়া, ভাল লাগার জল-হাওয়া পেয়ে লতার মতো তরতরিয়ে বেড়ে উঠতে পারে। কিন্তু সেই প্রস্ফুটনের কাজটি বড় অগোছালভাবে করছেন অনুমিতা। সঠিক জল-হাওয়া দিতে পারেননি। সুব্রতর চরিত্রকে প্রায় ব্ল্যাক ভিলেন করে ফেলেছেন। ফলে শেষ পর্বে তাঁর মানসিক পরিবর্তনটা আচমকা ও কারণহীন মনে হয়।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: ঝুলিতে বাংলাদেশের পাঁচটি জাতীয় পুরস্কার, এপারের দর্শকের মন কাড়তে পারবে ‘একটি সিনেমার গল্প’? ]

কিছু দর্শকের কাছে অন্তিম পর্বটি শুধু আকস্মিক নয়, অস্পষ্টও লাগতে পারে। চিত্রনাট্যের বিন্যাসে এই পর্বটির আরও একটু বিস্তার প্রয়োজন ছিল। সেলিম ও মাধুরী দু’জনেই দু’জনার প্রতি অতীত সম্পর্কের নিভে যাওয়া আগুনকে জ্বলিয়ে তুলতে যে রসায়নের প্রয়োজন ছিল সেটি চিত্রনাট্যের ভিস্যুয়ালে কোথায়? শুধুই সংলাপ নির্ভর এবং মাত্র দু-একটি মুহূর্তে শুকনো দৃষ্টি বিনিময়, ব্যাস।

Advertisement

চিত্রনাট্যের এই দুর্বলতা ডিঙিয়ে অনুমিতা পরিচালনার কিছু কিছু কাজে নৈপুণ্যের ছাপ রেখেছেন অবশ্যই। যেমন- সেলিমের ঘরে ঢিমে লয়ে ঠুমরি শোনা ‘কেটেছে এ কোন বিরহের বেলা’ গানটির উপযুক্ত ব্যবহার, অতীত ও বর্তমানকে একই ফ্রেমে সাদা-কালোয় উপস্থাপনা ও লালনের গানটির পরিবেশ রচনা। বুঝতে অসুবিধা হয় না। অনুমিতার প্রয়োগ ভাবনায় ঝালক রয়েছে। কিন্তু সেগুলির সুষম ব্যবহার করতে পারেননি। এবং তিনি বাজারি ভাবনারও বিরোধী। হয়তো আরও ভাল লাগত যদি তিনি চিত্রনাট্যটিকে আরও সুবিন্যস্ত করতে পারতেন। তবে তাঁর প্রয়াসকে খাটো করছি না। ভবিষ্যতের সাবধানবাণী উচ্চারণ করছি শুধু। 

অভিনয়ে অপর্ণা-সৌমিত্র জুটির চোখে এখনও পুরনো সময়ের ঝিলিক উপলব্ধি করা যায়- এটা তাঁদের দু’জনার ম্যাজিক। অর্পিতা বেশ মানানসই বড়লোক বাড়ির বউ হিসেবে। ব্রাত্যর অভিনয় নিশ্চয়ই ভাল। কিন্তু তিনি দুর্বল চিত্রনাট্যের বলি। সোহাগ সেন তাঁর নিজস্ব স্টাইলেই স্বাভাবিক। তবে একটা কথা, পঞ্চাশ বছর আগে কলকাতার কোনও বুকস্টলে মুরাকামির বই দেখেছি বলে তো মনে পড়ছে না।

[ আরও পড়ুন: বাংলা সিনেমায় ‘প্রতিবাদী স্বর’ এখনও আছে, প্রমাণ করল ‘সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে’ ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ