Advertisement
Advertisement
ধান

দেশি খাস ধানের শিষে ঝলসা রোগের থাবা, ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকরা

মহাজনের ঋণ শোধ করতে গিয়ে মাথায় হাত কৃষকদের।

Some disease arise in paddy cultivation, Farmers tensed
Published by: Sayani Sen
  • Posted:December 4, 2019 8:23 pm
  • Updated:December 4, 2019 8:24 pm

দেবব্রত দাস, খাতড়া: অনাবৃষ্টির জেরে চলতি বছরে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি বাঁকুড়ায়। তার উপর পুজোর সময় থেকে নিম্নচাপের বৃষ্টি, বুলবুলের ঝড়ের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন বিষ্ণুপুর মহকুমার ধানচাষিরা। এই পরিস্থিতির মধ্যে আবার শোষক পোকার আক্রমণ ও ধসা রোগে বিঘার পর বিঘা জমির ধান গাছের শিস নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে দেশি খাস ধানে বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষি দপ্তর। এই ঘটনায় চাষিদের মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে।

বাঁকুড়া জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মরশুমে জেলার তিনটি মহকুমায় সব মিলিয়ে প্রায় দু’লক্ষ ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় এক লক্ষ ১০ হাজার হেক্টর কম। বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের রাইপুর, রানিবাঁধ, সিমলাপাল, সারেঙ্গার পাশাপাশি খাতড়া, হীড়বাঁধ, ইন্দপুর ও তালডাংরা ব্লকের বেশ কিছু এলাকায় কংসাবতী সেচখালের জল পৌঁছয়। বৃষ্টির জলের অভাব অনেকটাই মেটে সেচের জলে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন ছিল। বৃষ্টির ঘাটতি দেখা যায়। কংসাবতী সেচখালের ছাড়া জলে সেচসেবিত এলাকার জমির ধান কিছুটা রক্ষা পেলেও অন্যত্র ছবিটা ছিল অন্যরকম। পুজোর আগে ভারী বৃষ্টি কিছু এলাকায় জমির ধানকে কিছুটা অক্সিজেন জোগালেও সার্বিকভাবে ক্ষতি কিন্তু হয়েছে।

Advertisement

বাঁকুড়ার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) সুশান্ত মহাপাত্র বলেন, “জেলায় এবার ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার। কিন্তু অনাবৃষ্টির জেরে লক্ষ্যমাত্রা এবার পূরণ হয়নি। ২ লক্ষ ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে এবার ধান চাষ হয়েছিল। কিন্তু পুজোর আগে ও পরে নিম্নচাপের বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় বিষ্ণুপুর মহকুমার পাত্রসায়ের, ইন্দাস, জয়পুর, সোনামুখী, বিষ্ণুপুর, কোতুলপুর ব্লকের বেশ কিছু মৌজায় দেশি খাস ধানে শোষক পোকার আক্রমণ ও ধসার উপদ্রব দেখা দিয়েছে। দেশি খাস ধান গাছে ব্লাইট বা ধসা জাতীয় রোগ হয়েছে। ছত্রাকনাশক ওষুধ প্রয়োগ করার পরেও বিশেষ উন্নতি হয়নি। ফলে দেশি খাস ধানে ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: ঊর্ধ্বমুখী আলু বীজের দাম, চাষের খরচ বাড়ায় মাথায় হাত কৃষকদের]

জেলা কৃষি দপ্তরের আধিকারিক জানান, এবার প্রথমে অনাবৃষ্টি, পরে নিম্নচাপের বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে লাল স্বর্ণ, শতাব্দী, বিএন ২০, দেশি খাস-সহ বিভিন্ন প্রজাতির ধান গাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে। পাশাপাশি শোষক পোকার আক্রমণে দেশি খাসধানের শিষের নিচে ব্লাইট বা শিষ ঝলসা জাতীয় রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। সেচসেবিত এলাকায় সেচের জল পেয়ে ধানগাছ কিছুটা বেঁচেছে। তবে শোষক পোকার উপদ্রবে ফলনের মুখে দেশি খাস ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বহু এলাকায়। সোনামুখী ব্লকের কোচডিহি পঞ্চায়েতের পাথরা গ্রামের চাষি শান্তনু মণ্ডল, সহদেব মণ্ডল বলেন, “অনেক টাকা খরচ করে খাস ধান চাষ করেছিলাম। ভেবেছিলাম ধান বিক্রি করে লাভ হবে। কিন্তু পরিস্থিতি যা লাভ তো দূরের কথা খরচও উঠবে না। ফলনের মুখে ধান শিষের নিচে ধসা জাতীয় রোগ দেখা যাচ্ছে। শিষ শুকিয়ে যাচ্ছে। এরফলে ফলন ভাল হবে না বলে আশঙ্কা করছি।” সুশান্তবাবু অবশ্য বলেন, “দেশি খাস ধানের শিস শুকিয়ে যাওয়ায় ফলন কম হবে। তবে জমি থেকে ধান ওঠার পরেই ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ কতটা তা বলা সম্ভব হবে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ