ছবি: প্রতীকী
অভিরূপ দাস: টানা ৭২ ঘন্টা হয়ে গেল হৃদস্পন্দন থেমে গিয়েছে। এখনও কফিন মেলেনি মাদুরাইয়ের অ্যালেন রজার্সের। ২১২১ কিলোমিটার দূরে কলকাতাতেই বরফ বন্দি হয়ে পড়ে আছে দেহ।
ঘরের ছেলের নিথর দেহকে শেষবারের মতো দেখার অপেক্ষায় পরিবারও। ঘটনার শুরু গত ২২ সেপ্টেম্বর। সকালের দিকে ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয় কলকাতা ট্রাম কোম্পানির ক্যাশিয়ার অ্যালেনের। সহকর্মীরা তাঁকে নিয়ে ছোটেন এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা শারীরিক পরীক্ষা করে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। যেহেতু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয়েছে, তাই দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। এরপর দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে।
বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে তামিলনাড়ুর মাদুরাই থেকে অ্যালেনের একমাত্র কলেজপড়ুয়া সন্তান এবং আত্মীয়রা কলকাতায় আসেন। মৃতদেহ বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দমদম বিমানবন্দরে গেলেই বাঁধে অশান্তি। করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট না থাকায় সিভিল অ্যাভিয়েশনের নিয়ম দেখিয়ে কোনও বিমান সংস্থা দেহ নিতে চাইছে না।
অ্যালেনের আত্মীয় প্রদীপ বলেন, “আমরা পোস্টমর্টেমের পর দেহ আমাদের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাই। কিন্তু এয়ারপোর্টের এয়ারলাইন্স কোম্পানি বলেছে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট না হলে তাঁরা প্লেনে দেহ তুলতে দেবেন না। এদিকে এসএসকেএম হাসপাতাল বলছে, পোস্টমর্টেমের পরে আর কোনও সার্টিফিকেট দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা এখন অথৈ জলে। কি করে দেহ বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাবো বুঝতে পারছি না।”
মৃত অ্যালেনের দেহ আপাতত সিমেট্রির ফ্রিজে। এই ফ্রিজে মৃতদেহ রাখার জন্য প্রতিদিন ৩ হাজার টাকা করে গুনতে হচ্ছে তামিলনাড়ুর মাদুরাই এর বাসিন্দা অ্যালেন রজার্সের পরিবারকে।
অসহায় পরিবার সাহায্য চাইছে প্রশাসনের কাছে। অ্যালেনের ছেলের কথায়, “আমাদের টাকা পয়সা ফুরিয়ে আসছে। যেভাবে হোক দেহ নিয়ে বাড়ি ফিরতে চাই। প্রয়োজনে সড়ক পথে ফিরবো।” এসএসকেএম হাসপাতালের সুপার রঘুনাথ মিশ্র জানিয়েছেন, “পোস্টমর্টেমের পর দেহ নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী পরিবারের হাতে প্যাক করে দেওয়া হয়। তারপর সেই মৃতদেহের কোন করোনা পরীক্ষা করানো হয় না। নিয়ম নেই। মৃতদেহ থেকে করোনা ছড়ায় না। আর এক্ষেত্রে মৃতদেহের ময়নাতদন্তের পর নতুন করে আর কোনও করোনা পরীক্ষা করার নিয়মও নেই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.