Advertisement
Advertisement

Breaking News

ইলিশ

বরিশালের অলিগলিতে অসময়ে মিলছে প্রচুর ইলিশ, দামও নাগালের মধ্যে

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই সময়ে ইলিশের সরবরাহ, ধারণা গবেষকদের।

Availablity of Hilsa at this season in Barishal makes people happy
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:January 19, 2020 5:13 pm
  • Updated:January 19, 2020 5:13 pm

সুকুমার সরকার, ঢাকা: মরশুম নয়, তবু এই সময়ে বাংলাদেশের বরিশালের পাওয়া যাচ্ছে প্রচুর ইলিশ। নগরীর অলিগলিতেও ইলিশ ফেরি করা হচ্ছে। আকৃতিও বড়, দামও নাগালের মধ্যে। প্রায় এক সপ্তাহ ইলিশের এমন প্রাচুর্যে খুশি ভোজনরসিক ও বিক্রেতারা। স্থানীয় নদনদীতে এই সময়ে ইলিশই ধরা পড়ছে বলে জানাচ্ছেন মৎস্যজীবী। অসময়ে এখানে ইলিশ পাওয়াটা অস্বাভাবিক ব্যাপার। তবে বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তর ও ইলিশ গবেষকরা এই সময় ইলিশ প্রাপ্তিতে ‘সেকেন্ড সিজন’ ফিরে আসার সম্ভাবনা বলে মনে করছেন।

রবিবার বরিশালের পোর্ট রোড মৎস্যদপ্তরে দেখা গেল, সেখানে প্রচুর ইলিশের সরবরাহ। ব্যবসায়ীরা ইলিশ কেনাবেচায় ব্যস্ত। ক্রেতার সংখ্যাও তুলনায় অনেক বেশি। সকলেই ইলিশ ওঠার খবর পেতেই বাজারে হাজির হয়ে গিয়েছেন। ব্যবসায়ী মহম্মদ জহির বলেন, “জানুয়ারি মাসে এত ইলিশ গত ১৫ বছরে দেখা যায়নি। শনিবার প্রায় ৫০০ মণ ইলিশ উঠেছে এখানে। বিভিন্ন আকারের পাইকারি দাম ছিল প্রতি মণ ২৫ হাজার টাকা এবং এক কেজির দাম ছিল ৩২ হাজার টাকা।” এই হিসাবে মোটামোটি ভাল আকারের ইলিশ মাছের দাম পড়েছে ৬২৫ টাকা থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে। যা সাধারণের নাগালেই। ব্যবসায়ীরা জানান, ইলিশের মূল মরশুম সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস। সেসময় যে দাম হয়, আজকের সঙ্গে তার তেমন কোনও পার্থক্য নেই।

Advertisement

[আরও পড়ুন: আন্দোলনে মিলল সাফল্য, ঢাকার দুই পুরনিগমের ভোট পিছিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন]

বরিশাল মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমলচন্দ্র দাস বলেন, “কয়েকদিন ধরে বেশি পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ছে। এ বছর শীতে মাছের আকারও ভাল। ইলিশের ভরা মরশুম মূলত সেপ্টেম্বর-অক্টোবর। চলমান পূর্ণিমার জো’তে যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে ইলিশের ‘সেকেন্ড সিজন’ আবার ফিরে এসেছে। গত ১৫-২০ বছর এভাবে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে ইলিশ পাওয়া যায়নি।” মৎস্য দপ্তরের এক কর্মকর্তার কথায়, “২০০২ সালের আগে এ মরশুমে মৎস্যজীবীদের জালে বেশি ইলিশ ধরা পড়ত। সে অবস্থা হয়তো আবার ফিরে আসছে। অফ সিজন সত্ত্বেও গত পাঁচ দিন ইলিশের সরবরাহ ব্যাপক। রবিবার ৫০০ মণ ইলিশ উঠেছে পোর্ট রোডের মোহনায়।” বরিশাল মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি অজিত দাস জানিয়েছেন, শীতে আগে এত বড় ইলিশ দেখা যায়নি। এবার অসময়ে ইলিশ বেশি দেখা যাচ্ছে। এর সঙ্গে খোকা ইলিশও ধরা পড়ছে বলে তিনি স্বীকার করেন। প্রবীণ এই মৎস্য ব্যবসায়ীর ধারণা- জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ইলিশের মরশুমে পরিবর্তন হতে পারে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: মায়ানমার সফরে শি জিনপিং, রোহিঙ্গাদের প্রত্যর্পণ নিয়ে চিন্তায় বাংলাদেশ!]

এই ব্যাপারে চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইলিশ গবেষক আনিসুর রহমানের বক্তব্য, শীতে এভাবে ইলিশ পাওয়া ভালো খবর। তাঁর ধারণা, বিভিন্ন সময় ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রজনন ও বড় হওয়া নিরাপদ করায় নদ-নদীতে ইলিশ বেড়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে সারা বছরই ইলিশ পাওয়া যাবে। এইগবেষক জানান, অসময়ে ইলিশ পাওয়া নিয়ে মৎস্য অধিদপ্তরও তার মত জানতে চেয়েছে। তাদের তিনি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, এটা ‘ইলিশের সেকেন্ড সিজন’ হতে পারে। এই অবস্থা ধরে রাখতে হবে। খোকা ইলিশ নিধন বন্ধ এবং মা ইলিশ রক্ষা করতে পারলে নতুন সিজনে ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়বে বলে আশা ওই গবেষকের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ