Advertisement
Advertisement
Bangladesh

ফের মন্দিরে হামলা, ইউনুসের বাংলাদেশে আতঙ্কে সংখ্যালঘুরা

ভিটেমাটি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করছেন হিন্দুরা।

Hindus flee Bangladesh locality after temples attacked

ছবি- সংগৃহীত

Published by: Suchinta Pal Chowdhury
  • Posted:November 30, 2024 10:13 am
  • Updated:November 30, 2024 9:06 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের বাংলাদেশে আক্রান্ত হিন্দুরা। শুক্রবার নমাজের পরই চট্টগ্রামের তিনটি মন্দিরে দলে দলে হামলা চালায় কট্টরপন্থীরা! শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে পদ্মাপারে বিপন্ন হিন্দুরা। তাঁদের বাড়িঘরের পাশাপাশি ভাঙচুর করা হয়েছে হিন্দু উপাসনালয়গুলোতেও। চট্টগ্রামের এই ঘটনায় নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে হিন্দুদের মনে। তাই ভিটেমাটি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, এবার কি ‘হিন্দুশূন্য’ হয়ে যাবে মহম্মদ ইউনুসের বাংলাদেশ? 

হিন্দু নিপীড়ন, ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারিতে এখন উত্তাল বাংলাদেশ। একদিকে যেমন প্রতিবাদে পথে নেমেছেন হিন্দুরা অন্যদিকে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে মৌলবাদীরা। জানা গিয়েছে, শুক্রবার চট্টগ্রামে ইসকনের বিরুদ্ধে মিছিল হয়। তার পরই জুম্মার নমাজ শেষ হতেই স্লোগান দিতে দিতে হিন্দু মন্দিরের দিকে এগিয়ে যায় বিএনপি ও জামাতের কট্টরপন্থীরা। হরিশচন্দ্র মুনসেফ লেনের শন্তনেশ্বরী মাতৃ মন্দির, শনি মন্দির ও শন্তনেশ্বরী কালিবাড়ি মন্দিরকে নিশানা করে তারা। ইট-পাটকেল ছুড়ে ভাঙচুর চালানো হয় মন্দিরগুলোও। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে হিন্দুদের বাঁচায়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনারও কোনও চেষ্টা করেনি। যে এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে সেখানে ৯০ শতাংশই হিন্দু। সূত্রের খবর, মন্দিরে হামলার পরই সেখানকার বেশ কিছু বাসিন্দা প্রাণ বাঁচাতে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। পরবর্তী হিংসার আশঙ্কায় তাঁরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করছেন।

Advertisement

হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচার বেড়ে গিয়েছে। চলতি নভেম্বর মাসে তা আরও লাগামছাড়া হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। হামলায় এখনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ২০০টি হিন্দু মন্দির। গত ৫ নভেম্বর ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন চট্টগ্রামের এক মুসলিম ব্যবসায়ী। ইসকনকে ‘জঙ্গি সংগঠন’-এর তকমা দেন তিনি। যার পরই স্থানীয় হিন্দুদের বিক্ষোভে কার্যত রণক্ষেত্রের রূপ নেয় চট্টগ্রাম। সেই বিক্ষোভ দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এর মাঝেই ইসকন মন্দিরের সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভু ওরফে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা আনা হয়েছে। খারিজ হয়েছে জামিন। এর পরই ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে হাই কোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। কিন্তু মামলা খারিজ হয়ে গিয়েছে আদালতে। ফলে আরও ক্ষোভ বেড়েছে মৌলবাদীদের মধ্যে।

গত ২৫ নভেম্বর বিকালে চিন্ময় প্রভুকে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ২৬ তারিখ চট্টগ্রামের আদালতে তোলা হয় তাঁকে। শুনানি শেষে জামিন খারিজ হয় এই হিন্দু সন্ন্যাসীর। চিন্ময়কে আদালতে পেশের আগে থেকেই ভিড় জমতে শুরু করেছিল আদালত চত্বরে। জামিন খারিজ হতেই গোটা এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। প্রিজন ভ্যান আটকে চলতে থাকে বিক্ষোভ। হিন্দুদের বিক্ষোভ থামাতে লাঠিচার্জের পাশাপাশি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। উত্তাল এই পরিস্থিতিতে মৃত্যু হয় চট্টগ্রামে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) সাইফুল ইসলামের। এই আইনজীবীর মৃত্যুতে ইসকনকে দায়ী করছে মৌলবাদীরা। হিন্দু সন্ন্যাসীর গ্রেপ্তারি ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ইউনুস সরকারকে কড়া বার্তা দিয়েছে ভারত। উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ব্রিটেনেও। কিন্তু হিন্দুদের হাজারো বিক্ষোভ-প্রতিবাদের পরও পরিস্থিতি যে একটুও বদলায়নি তা এই মন্দিরের হামলাতেই ফের প্রমাণ হয়ে গেল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement