৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে হদিশ মিলেছে বেশ কয়েকটি গোপন কক্ষেরও।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতেই ঘাতকের গুলিতে লুটিয়ে পড়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। প্রাণ হারিয়েছিলেন তাঁর পরিবারের অন্যান্য় সদস্যরা। অতীতের রক্তভেজা মুজিবের স্মৃতি বিজড়িত সেই বাড়িই এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ‘বিপ্লবী’দের হামলায় ভেঙে গুঁড়িয়ে গিয়েছে বাড়িটির সামনে অংশ। লুটপাট করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ভিতরের বহু জিনিস। কিন্তু বাড়ি নিয়ে মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। এখন অনেকেই সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন। অনেকের দাবি, এই বাড়ির নিচেই নাকি ছিল আওয়ামি লিগের ‘আয়নাঘর’! হদিশ মিলেছে বেশ কয়েকটি গোপন কক্ষেরও। সব মিলিয়ে ৩২ নম্বর ধানমন্ডিতে সুড়ঙ্গ রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে মুজিবের বাড়ির নিচের অংশের একাধিক ছবি (যদিও এই ছবিগুলোর সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক)। ছাত্র-জনতার দাবি ধানমন্ডির এই বাড়ির নিচে নাকি বহুতলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, মাটির নিচে একাধিক তলা রহস্যজনকভাবে জলে পরিপূর্ণ! অনেকেই কৌতূহলী হয়ে নিচে নামার চেষ্টা করেছিলেন। তিনতলা পর্যন্ত নিচে নামার পর এটি মূলত একটি পার্কিং এরিয়া বলে মনে হয়েছে তাঁদের। তবে এর নিচে আরও একাধিক তলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তাঁরা। তিনতলার নিচের ফ্লোরগুলো জলে ভর্তি থাকায় কেউ সেখানে নামার সাহস করেননি। কিন্তু জল স্বচ্ছ হওয়ার কারণে নিচে যাওয়ার সিঁড়িগুলো স্পষ্টভাবে দেখা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। যা ইঙ্গিত করে নিচে আরও ভবন রয়েছে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদমাধ্যমে বলেন, “বাড়ির নিচে আমরা কয়েকটি কক্ষের সন্ধান পেয়েছি। কিন্তু সেখানে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি। কারণ পুরোও জায়গাটা জলে ভরা। এটি খুবই সন্দেহজনক। এই বাড়ির নিচতলার পাঁচতলা কাঠামোতে আওয়ামি লিগ তাদের নিজস্ব বাহিনী দিয়ে আর একটি আয়নাঘর তৈরি করেছিল।” ছাত্র-জনতারও দাবি, “এই গোপন কাঠামো সম্ভবত আয়নাঘর হতে পারে। যেখানে গোপনে নির্যাতন চালাত শেখ হাসিনার বাহিনী। ডিজিএফআই এবং ডিবির আড়ালে হাসিনা ও তার দল আওয়ামি লিগ আর একটি নতুন আয়নাঘর তৈরি করেছে।” তাঁরা বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকেই বাংলাদেশজুড়ে ভাঙা হয় বঙ্গবন্ধুর মূর্তি। কোথাও হাতুড়ি মেরে তো কোথাও ক্রেন দিয়ে একের পর এক মূর্তি গুড়িয়ে দেওয়া হয়। কালি লেপে দেওয়া হয় মুজিবের ছবিতে। সেবারও আক্রমণের মুখে ইতিহাসের এক মাইলফলক হয়ে থাকা মুজিবের বাড়ি। ধানমন্ডির এই বাড়িতেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে অভ্যুত্থানকারী সেনাদের গুলিতে নৃংশসভাবে খুন হয়েছিলেন মুজিবর। তিনি একা নন, প্রাণ গিয়েছিল স্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেলের। দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামালও খুন হয়েছিলেন। বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান মুজিবের দুই কন্যা, হাসিনা এবং রেহানা। কিন্তু স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়িই এখন ভেঙে গুঁড়িয়ে গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.