নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের লন্ডন সফরে তাঁর সাক্ষাৎপ্রার্থী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনঝি টিউলিপ সিদ্দিক। সূত্রের খবর, তিনি এতদিনকার ‘ভুল বোঝাবুঝি’র অবসান চান। হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ ব্রিটেনের এমপি। তবে দুর্নীতি মামলায় নাম জড়ানোয় সে দেশের মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন টিউলিপ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, আগামী সপ্তাহে মহম্মদ ইউনুস ব্রিটেন সফরে যাচ্ছেন। এই সময় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন হাসিনার বোনঝি টিউলিপ। তিনি চান, সরাসরি দেখা করে তাঁর ও তাঁর মা শেখ রেহানার বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সেই সংক্রান্ত ‘ভুল বোঝাবুঝি’ মিটিয়ে ফেলতে। তবে ইউনুস বা অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে এখনও এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
গত বছরের ৫ আগস্ট বাংলাদেশে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আপাতত নয়াদিল্লির আশ্রয়ে। হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি ব্রিটেনের এমপি। টিউলিপ ও তাঁর মা শেখ রেহানার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনেছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন। সংস্থার দাবি, হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন টিউলিপ ও তাঁর মা ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৭২০০ স্কোয়ার ফুটের প্লট বা জমি নিয়েছেন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন টিউলিপ। তাঁর আইনজীবীদের দাবি, এই অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং এর কোনও ভিত্তি নেই। পরবর্তীতে টিউলিপ দাবি করেন, বাংলাদেশের দুদক এসব অভিযোগ নিয়ে তাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেনি। তাই সবটা তাঁর কাছে ধোঁয়াশা।
দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর গত বছর ব্রিটেনে অর্থসচিব ও মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন টিউলিপ সিদ্দিক। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে আনা কোনও অভিযোগের এখনও প্রমাণ পায়নি ব্রিটিশ সরকার। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ইউনুসের আসন্ন ব্রিটিশ সফরে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান টিউলিপ। এই মর্মে তিনি একটি চিঠি লিখেছেন।
সূত্রের খবর, চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘‘আমি যুক্তরাজ্যের একজন নাগরিক। জন্মেছি লন্ডনে এবং হ্যাম্পস্টেড ও হাউগেটের মানুষদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে দীর্ঘ এক দশক কাজ করেছি। বাংলাদেশে থাকা কোনও সম্পত্তি বা ব্যবসার প্রতি আমার কোনও আগ্রহ নেই। দেশটি আমার হৃদয়ে থাকলেও তা আমার দেশ নয়। আমার দেশ যেখানে আমি জন্মেছি, বড় হয়েছি ও নিজের কেরিয়ার করছি।’’
তিনি আরও লেখেন, ‘‘আমি দুদকের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা লন্ডনে আমার আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে প্রত্যাখ্যান করেছে। স্পষ্টতই ঢাকার একটি এলোমেলো ঠিকানায় চিঠিপত্র পাঠাচ্ছে। এই ফ্যান্টাসি তদন্তের প্রতিটি পদক্ষেপ গণমাধ্যমকে জানানো হয়। তবুও আমার আইনি দলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় না। আমি জানি, তুমি বুঝতে পারবে যে এই প্রতিবেদনগুলো আমার নির্বাচনী এলাকা ও দেশের জন্য আমার সর্বোচ্চ চেষ্টার বিক্ষেপের কারণ হচ্ছে।’’ টিউলিপের আরও দাবি, গত মাসে তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে শুনেছেন। তবে তিনি এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.