ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকে সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগ জমা পড়েছে ১১৫টি। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পদ, উপাসনালয় মিলিয়ে মোট ২ হাজার ১০টি হামলার অভিযোগ জমা পড়েছে। গত কয়েকমাস ধরে ওপার বাংলা হিন্দু নির্যাতন লাগামছাড়া হারে বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু এই অত্যাচারের কথা অস্বীকার করে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার বার বার বলেছে, দেশের পরিস্থিতি শান্ত। কিন্তু এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করে ইউনুস সরকার কার্যত মেনে নিয়েছে বাংলাদেশে বিপন্ন সংখ্যালঘুরা।
আজ শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসের কার্যালয়ের তরফে প্রতিবেদন দিয়ে জানানো হয়েছে, গত বছর জুলাই বিপ্লবের পর বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলার অভিযোগ তদন্ত শেষে পুলিশ ১১৫টি মামলায় অন্তত ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করা করেছে। প্রেস উইং জানিয়েছে, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ দাবি করেছে যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর মোট ১ হাজার ৭৬৯টি সাম্প্রদায়িক হামলা এবং ভাঙচুরের কাণ্ড ঘটেছে। এই হামলা, ভাঙচুর এবং লুটপাটের ঘটনাগুলোতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জীবন, সম্পদ ও উপাসনালয় মিলিয়ে ২ হাজার ১০টি অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ এ বিষয়ে পরিষদের প্রস্তুত করা অভিযোগের তালিকা সংগ্রহ করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযোগে উল্লিখিত ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
এছাড়াও প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতিটি স্থান ও প্রতিষ্ঠান পুলিশ সরেজমিন পরিদর্শন করেছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ দায়ের করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্তের ভিত্তিতে নিয়মিত মামলা, সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এবং প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পরিষদের অভিযোগ ছাড়াও পুলিশ ৫ আগস্ট ২০২৪ থেকে ৮ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক হিংসার ১৩৪টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এসব অভিযোগে পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে সাড়া দিয়েছে। এসব অভিযোগে অন্তত ৫৩টি মামলা দায়ের হয়েছে এবং ৬৫ জন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশজুড়ে যেকোনও সাম্প্রদায়িক হামলার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ধর্ম, বর্ণ, জাতি ও লিঙ্গ নির্বিশেষে মানবাধিকারের প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। পুলিশ সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অভিযোগ গ্রহণের জন্য একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করেছে। তারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কোনো সাম্প্রদায়িক হিংসার অভিযোগ এলে পুলিশ সদর দপ্তরের একটি ফোকাল পয়েন্ট সেই অভিযোগ পরিচালনা করছে। প্রতিটি অভিযোগ সমাধানে পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.