সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আওয়ামি লিগ সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর চূড়ান্ত অচলাবস্থা চলছে বাংলাদেশে। এই পরিস্থিতির মাঝেই বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান জানিয়ে দিয়েছেন, পরবর্তী সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তৈরি করা হবে। মঙ্গলবার দুপুরে রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহাবুদ্দিনের উপস্থিতিতে এই বিষয়ে বৈঠকে বসতে চলেছে সেনা। যেখানে ৩ সেনা প্রধানের পাশাপাশি উপস্থিত থাকবেন বিএনপি, জামাতের মতো রাজনৈতিক দলগুলি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে প্রধান কে হতে চলেছেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তালিকায় উঠে আসছে একাধিক নাম।
জাতীয় নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে সবার আগে উঠে আসছে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুসের নাম। সেনা শাসন সরিয়ে ‘দেশ গড়তে’ এই ইউনুসকে চেয়ে ভিডিও বার্তা দিতেও দেখা গিয়েছে আন্দোলনকারী ছাত্রদের। একটা সময়ে শেখ হাসিনাকে ‘রক্তচোষা’ বলে আক্রমণ করেছিলেন এই অর্থনীতিবিদ। এর পর এক মামলায় ৬ মাসের কারাদণ্ড হয়েছিল ইউনুসের। বর্তমানে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চাইছেন ছাত্ররা। ইউনুস নিজে অবশ্য এই বিষয়ে মুখ খোলেননি। তবে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে ভারতের অবস্থানকে ‘দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী তালিকায় দ্বিতীয় যে নাম উঠে আসছে তিনি বিএনপি প্রধান তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। বিরোধী নেত্রী হিসেবে হাসিনা সরকারের কোপে পড়ে ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল জিয়ার। ২০১৮ সালে এক ঘুষ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহাবুদ্দিন। যদিও ৭৮ বছর বয়সি খালেদার শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো নেই। তবে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী তালিকায় তাঁর নামও উঠে আসছে। এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক জিয়াও রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে। ইনি খালেদা জিয়ার পুত্র। দুর্নীতি মামলায় হাসিনা সরকারের কোপে পড়ে ব্রিটেনে পালিয়ে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক। সরকার পতনের পর বাংলাদেশে ফিরে আসছেন তিনি। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে রয়েছেন বাংলাদেশের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর আবদুর রৌফ তালুকদারও।
তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে প্রধানমন্ত্রী আসনে যেই বসুক না কেন বাংলাদেশ পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে ভারত। সোমবার এই গোটা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে আয়োজিত বৈঠকে হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রিন্সিপাল সচিব পিকে মিশ্র, ‘র’-এর প্রধান রবি সিন্হা এবং গোয়েন্দা বিভাগের (আইবি)-র ডিরেক্টর তপন ডেকা। মঙ্গলবার সকাল এই ইস্যুতে সর্বদল বৈঠকও হয় সংসদে। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বৈঠকে সব দলের প্রতিনিধিদের সামনে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। আরও একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সংসদেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখতে পারেন জয়শঙ্কর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.