সুবীর দাস, কল্যাণী: এলাকায় উন্নয়ন হয়নি। রাস্তা নেই, জোটেনি পানীয় জল। তাই ভোটও দেবেন না। এমনই ঠিক করেছিলেন রানাঘাটের চাকদহের ইটাপুকুরের বাসিন্দারা। সেইমতো পোস্টার, ব্যানার নিয়ে বয়কটেও নেমেছিলেন। কিন্তু সোমবার সকালেই এলাকার চিত্র বদলে গেল। ভোট দেওয়ার পর দুহাতে দুদলের দেওয়া টিফিন নিয়ে বাড়ি ফিরলেন গ্রামবাসীদের অনেকেই। তাতেই বাকিদের সংশয় বাড়ল। ভোট বয়কট নাকি ভোট দিতে হবে? এই দোলাচলেই বাকি দিনটা কাটল গ্রামের অন্যান্য বাসিন্দাদের।
রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের (Ranaghat Lok Sabha Constituency) চাকদহ ব্লকের তাতলা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনস্থ ইটাপুকুর এলাকা। গ্রামে অনুন্নয়নের ছাপ স্পষ্ট। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এলাকায় পানীয় জলের সংকট, রাস্তার বেহাল দশা-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প থেকে পিছিয়ে এলাকা। ফলে বঞ্চিত তারা। তাই চব্বিশের নির্বাচনে (2024 Lok Sabha Election) আর অংশ নিতে চাননি। ‘রাস্তা নেই, জল নেই, আমাদের ভোটও নেই’ – এই পোস্টার দেখা গিয়েছিল ইটাপুকুরে। সুজিত মণ্ডল নামে গ্রামের এক যুবক বলেন, প্রশাসনের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেও সুরাহা মেলেনি। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পরও হেলদোল নেই তারও।
কিন্তু সোমবার, ভোটের দিন এই গ্রামে দেখা গেল অন্য চিত্র। সুজিতের দাবি, রাজনৈতিক দলের নেতারা সকালে তাঁদের প্রতিবাদী পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছেন। তাঁর কথায়, ”দেখুন আমাদের দাবি পূরণ করার ক্ষমতা নেই প্রশাসনের কর্তাদের। অথচ আমরা ভোট বয়কট (Vote Boycott) করে যে পোস্টার দিয়েছি, তা ছিঁড়ে আমাদের প্রতিবাদ মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। লজ্জাজনক পরিস্থিতি!”
এদিকে, যমুনা দলুই, মায়া মণ্ডলরা জানাচ্ছেন, তাঁরা ভোট দিয়েছেন। তার পর দুবাক্স টিফিনও পেয়েছেন। তৃণমূল আর বিজেপি, দুই শিবির থেকেই খাবার দেওয়া হয়েছে। বোঝানো হয়েছে, ভোট দিলে টিফিন পাওয়া যাবে। তাই গোটা গ্রাম ভোট বয়কটের ডাক দিলেও তাঁরা কয়েকজন ভোট দিয়েছেন। মায়া মণ্ডলের কেউ কেউ আবার বুঝতেই পারছেন না যে ভোট দিতে যাবেন কি না। তাঁর চেনাশোনা কয়েকজন ভোট দিলেও গ্রামের বাকিরা যে এনিয়ে উচ্চবাচ্যই করছেন না। ‘যেতে পারি, কিন্তু কেন যাব’ – এই সংশয়েই দিনভর কাটিয়ে দিলেন তিনি। সবমিলিয়ে দিনশেষে ইটাপুকুর গ্রামের ছবিটা মিশ্র। একদিকে বয়কট, আরেক প্রান্তে হইহই করে ভোট উৎসব।
ভিডিও দেখুন:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.