অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: মাত্র সাড়ে চার বছরের স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীকে দুই শিক্ষকের যৌন হেনস্তার অভিযোগে সরগরম গোটা রাজ্য। কাঠগড়ায় জি ডি বিড়লার মতো কলকাতার নামকরা স্কুল। কিন্তু এর মধ্যেই সামনে এল আরও একটি ভয়ানক ঘটনা। এবার মুর্শিদাবাদের রানিনগরের কাতলামারী এলাকায় প্রতিবেশী দাদার লালসার শিকার হতে হল এক শিশুকন্যাকে। তবে ঘটনার বীভৎস্যতা বাড়িয়েছে গ্রেপ্তার হওয়া মোর্তাজা শেখ নামে যুবকের স্বীকারোক্তি। পুলিশ জেরায় ওই যুবক জানিয়েছে, মোবাইলে উত্তেজিত ছবি দেখেই এই ঘৃণ্য কাজ করেছে সে।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার বিকেলে। বাড়ির কাছেই সম-বয়সিদের সঙ্গে খেলা করছিল ওই বালিকা। তখনই মোর্তাজা তাকে এসে বলে, তার মা ডাকছে। না গেলে পরে বকবে। ওই কথা শুনে শিশুটি মোর্তাজার সঙ্গে তাদের বাড়িতে যায়। কিন্তু সেখানে কেউ ছিল না। এরপরই মোর্তাজা শেখ তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষিতা শিশুটির মা জানায়, মেয়ে বাড়িতে এসে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল। কারণ জানতে চাইলে দেখছি সমানে কাঁপছে। সে তখন যে প্যান্ট পড়েছিল সেটিও রক্তাক্ত ছিল। সেটা দ্রুত খুলতেই অবাক হয়ে যাই। কীভাবে এরকম হয়েছে? প্রশ্ন করতেই মেয়ে প্রতিবেশী যুবক মোর্তাজার নাম বলে। কিন্তু খোঁজ করতে গিয়ে তাকে আর পাইনি। সঙ্গে সঙ্গে মেয়েকে গোধনপাড়া ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এরপর ফের বাড়িতে এসে মোর্তাজার মাকে বিষয়টি জানাতে গেলে তিনি বলেন, যেখানে খুশি নালিশ কর। দরকার হলে জমি বিক্রি করে ছেলেকে ছাড়িয়ে আনব। ওই কথা শুনেই মেয়েটির বাড়ির লোক থানায় গিয়ে অভিযোগ জানানো হয়। পরে মেয়েটিকে ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আপাতত সেখানেই সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
অভিযোগ পাওয়ার পরই তদন্তে নামে পুলিশ। এরপর রবিবার ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওইদিনই আদালতে তোলা হলে অভিযুক্তকে তিনদিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখানেই জেরায় চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি মোর্তাজার। বলে, “মোবাইলে দেখা অশ্লীল ছবিই তার মাথা বিগড়ে দিয়েছিল। তখন আর নিজেকে সামলাতে না পেরে মেয়েটিকে তুলে নিয়ে ওই কাজ করেছি।” মোবাইলে এ ধরনের ছবিই যে যুব সমাজকে বিপথগামী করছে, এই ঘটনায় তার এক জ্বলন্ত উদাহরণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.