পলাশ পাত্র, তেহট্ট: ভক্তির টানে জগদ্ধাত্রী ভাসানে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় সেজেছিলেন। সেটাই কাল হল। ভাসানের হই-হুল্লোড়ের মাঝে কেউ বা কারা ইট ছুঁড়ে মারে নদিয়ার তেহট্টের এক ব্যক্তিকে। নাক ভেঙে ওই ব্যক্তি ভরতি তেহট্ট মহকুমার হাসপাতালে। কিন্তু কে বা কারা এমন কাজ করল, কেনই বা করল, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনও ধারণা করতে পারছেন না ওই ব্যক্তি। মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছেন তিনি। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
চতুর্ভুজা দেবী স্বপ্ন দিয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়কে। তারপর থেকেই বঙ্গে দেবী জগদ্ধাত্রীর সূচনা করেছিলেন কৃষ্ণচন্দ্র। তাঁর মৃত্যুর প্রায় আড়াইশো বছর পরও তাঁকে স্মরণ করতে মেকআপ, রাজার বেশ, সিংহাসন নিয়ে পুরোদস্তুর রাজা হয়ে উঠেছিলেন তেহট্টের বাসিন্দা আশিস মণ্ডল। শুক্রবার অন্যান্য ট্যাবলোর সঙ্গে ভ্যানে করে কৃষ্ণচন্দ্র হয়ে বছর আটচল্লিশের আশিসবাবুও যাচ্ছিলেন জলঙ্গির দিকে। আচমকাই কেউ বা কারা ইট ছোঁড়ে তাঁর দিকে। আশিসবাবু রক্তাক্ত হন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে তেহট্ট হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার জগদ্ধাত্রী ভাসানের সময় এমন ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। তেহট্ট জগদ্ধাত্রী পুজোর কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক আশিস মণ্ডল শুধু শারীরিকভাবে নয়, আচমকা হামলায় মনেও আঘাত পেয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে তেহট্টে প্রতিমা নিরঞ্জন চলছিল। জিতপুর থেকে এই ক্লাবের প্রতিমা শোভাযাত্রা সহকারে আসছিল। শিবের গাজন-সহ বেশ কয়েকটি ট্যাবলো সামনে ছিল। তাঁরা রাস্তায় নাচ করছিল। মাঝে ছিলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্ররূপী আশিসবাবু। কালীতলায় আচমকা এই সঙের উদ্দেশ্যে ইট ছোঁড়া হয়। নিমেষের মধ্যে জনৈক ভিড়ে মিশে যায়। তাকে ধরা যায়নি। তখন রক্তাক্ত নাক নিয়ে আশিসবাবুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘আমি খুব কষ্ট পেয়েছি। তেহট্টে জগদ্ধাত্রী পুজোর কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক আমি। এখানকার পুজোর জন্য সব সময় ভাবনা চিন্তা করি। সেখানে এইভাবে ইট মারা হবে, ভাবতে পারিনি। ভালবেসে আমি এরকম সাজি প্রতি বছর। এ বছর রাজা কৃষ্ণচন্দ্র সেজে ছিলাম। প্রচুর মানুষ দেখছিল। হঠাৎ সজোরে ইটটা নাকে লাগে। মাথাটা ঘুরছিল। প্রথমেই অতটা বুঝতে পারিনি। নাক দিয়ে গলগল করে রক্ত বের হতে সবাই ছুটে আসে।’
কিন্তু কে বা কারা আশিসবাবুর উপর এভাবে হামলা চালাল, তা কোনওভাবেই বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি। আর তাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছেন আশিস কুমার। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.