সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: শ্যালিকাদের সামনেই স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলা থানার মেহমানপুরের রামকৃষ্ণপল্লীতে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে এই সন্দেহেই স্ত্রীকে খুন করে ওই ব্যক্তি। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, ১৭ বছর আগে মেহমানপুরের রামকৃষ্ণপল্লীর বাসিন্দা পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি শিবু কর্মকারের সঙ্গে বিয়ে হয় বেহালার পর্ণশ্রীর বাসিন্দা মধুমিতার। মধুমিতা একটি হাসপাতালে নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করতেন। বিয়ের পর থেকে স্বাভাবিক ছন্দেই চলছিল দাম্পত্য জীবন। একটি পুত্রসন্তানও সন্তানও হয় তাঁদের। কিন্তু সম্প্রতি শিবু মধুমিতাকে সন্দেহ করতে শুরু করেন। সন্দেহের জেরেই স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে ক্রমশ দুরত্ব বাড়তে থাকে। স্ত্রীর প্রতি সন্দেহ এতটাই তীব্র হয় যে গত তিনমাস ধরে ওই দম্পতি আলাদা থাকতে শুরু করেন। তাঁদের বারো বছরের ছেলে ইমন কিন্তু তার বাবার সঙ্গেই থাকত। মধুমিতা থাকতেন পর্ণশ্রীতে তাঁর এক দিদির বাড়িতে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে ক্রমশঃ অবনতি হওয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদের মামলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল দুই পরিবারই।
রবিবার ছিল ছেলে ইমনের জন্মদিন। তাই ছেলেকে দেখার জন্য দুই দিদি পারমিতা গাঙ্গুলি ও দীপান্বিতা শী কে সঙ্গে নিয়ে শনিবার রাতে মধুমিতা মেহমানপুরে স্বামীর বাড়িতে যান। অভিযোগ, বাড়িতে ঢুকতেই স্বামী ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে মধুমিতার ওপর। দিদিরা বোনকে বাঁচাতে গেলে শ্যালিকাদের ঠেলে ফেলে দিয়ে স্ত্রীকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে শিবু। বোনকে বাঁচাতে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন তাঁরা। স্থানীয় মানুষজন তা শুনে ছুটে আসেন। কিন্তু ততক্ষণে কাজ সেরে চম্পট দিয়েছে অভিযুক্ত। স্থানীয় বাসিন্দারা আক্রান্ত মধুমিতাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে বজবজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন । পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত স্বামীকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.