নন্দন দত্ত, সিউড়ি: পরপর তিন কোপ হাঁসুয়ার। তারপরেই প্রেমিকাকে ফোন। জানিয়ে দেওয়া, মিশন সাকসেসফুল৷ স্বামীকে শেষ করার আনন্দে মশগুল দুজনেই। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে প্রেমিকার স্বামীকে খুন করল প্রেমিক। ফের এক মনুয়াকাণ্ড বীরভূমের সদাইপুরে৷ যদিও এমন কাণ্ড ঘটানোর পরই হাতেনাতে ধরা পড়ে গেল অভিযুক্তরা৷
পুলিশ সূত্রে খবর, সদাইপুরের গোপীনাথ পাতরের স্ত্রী সুন্দরী৷ বছর সাতেক আগে দুজনের বিয়ে হয়েছিল৷ এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে দুজনের৷ আদতে ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা সুন্দরীর সঙ্গে প্রতিবেশী বচ্চন ঘোষের একটি সম্পর্ক তৈরি হয়৷ পেশায় রাঁধুনি গোপীনাথ মাঝেমধ্যেই গ্রামের বাইরে যেতেন৷ সেই সুযোগে উভয়ের সম্পর্ক আরও গাঢ় হয়৷ এরপর তারা বিয়ের পরিকল্পনা করে৷ ছেলেমেয়েকে বাবার কাছে ফেলেই বচ্চনের সঙ্গে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল সুন্দরী৷
সেইমতো পরিকল্পনাও ছকে নিয়েছিল দুজন৷ সোমবার সন্ধেবেলা গোপীনাথকে বুড়িগড়ের পাড়ে মদ্যপানের জন্য ডেকে নিয়ে যায় বচ্চন৷ একটু বেশি মদ্যপান করে বেহুঁশ হয়ে পড়ে গোপীনাথ৷ তখনই স্ত্রী সুন্দরী প্রেমিককে বচ্চনকে বলে, স্বামীকে খুন করে দিতে৷প্রেমিকার নির্দেশ পেয়ে কয়েকটি ধাপে গোটা কাজ সারে বচ্চন৷ অচৈতন্য গোপীনাথকে টানতে টানতে করমকাল মাঠে নিয়ে যায় সে৷ এরপর কাছেই খামার বাড়ি থেকে একটি হাঁসুয়া জোগাড় করে৷ গলার নলি লক্ষ্য করে পরপর তিনবার কোপায়৷ তাতেই মৃত্যু নিশ্চিত হয়৷
স্বামী নিহত, খবর জানিয়ে প্রেমিকা সুন্দরীকে ফোন করে৷ এরপরই তারা দেহ লোপাটের পরিকল্পনা করে৷ মাঠে দেহটি পুঁতে ফেলার চেষ্টা করে৷ কাজ শেষ করে ভোরেই সুন্দরীকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করার কথা ভেবেছিল বচ্চন৷ কিন্তু ভোরবেলাই অকুস্থলে গিয়ে একটি মৃতদেহ দেখতে পায় এক বালক৷ আর তাতেই সবটা বানচাল হয়ে যায়৷ ছেলেটি সমস্ত ঘটনা জানিয়ে দেয় গ্রামবাসীদের৷ তারা সকলে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে মাটি খুঁড়ে দেহটি উদ্ধার করে৷ দেহটি গোপীনাথের বলে চিহ্নিত করেন তাঁরা৷
হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় বচ্চন ঘোষ৷ মাত্র দু’ঘন্টার মধ্যেই দুজনকে গ্রেপ্তার করল সদাইপুর থানার পুলিশ। তবে গ্রামবাসীরা তাদের শাস্তির দাবিতে ছ’ঘন্টা দেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখায়। পুলিশি জেরার মুখে দুজনই অপরাধের কথা স্বীকার করেছে বলে দাবি সদাইপুর থানার পুলিশের৷
ছবি: শান্তনু দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.