নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: মোটা টাকার বিনিময়ে রক্ত বিক্রি চক্রের পাণ্ডা এক মহিলা-সহ দুজনকে গ্রেপ্তার করল বনগাঁ থানার পুলিশ। বুধবার বনগাঁ থানার শক্তিগড় এলাকা থেকে অপর্ণা অধিকারী ও উত্তম দাস নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বনগাঁ মহকুমা আদালতে পাঠালে বিচারক উত্তম দাসকে ৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিনামূল্যে রক্ত এনে অসহায় রোগীর আত্মীয়দের কাছ থেকে রক্ত কিনে আনার নাম করে মোটা টাকা নিয়েই চলছিল চক্র।
ধৃতকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে বিভিন্ন নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতালের এক শ্রেণির কর্মীদের যোগসাজশে এই রক্ত বিক্রি চক্র চলছিল৷ মূলত নার্সিংহোমে ভরতি কোনও রোগীর জরুরি রক্তের প্রয়োজনের সুযোগ নিয়ে চলত এই কারবার। সূত্রে জানা যায়, কোন রোগীর রক্তের প্রয়োজন হলে রাজ্যের যে কোনও সরকারি ব্লাড ব্যাংক থেকে তার পরিজনরা ক্রেডিট কার্ড-সহ সংগ্রহ করলে তার জন্য কোনও অর্থ লাগে না। যদি কোনও কার্ড না থাকে তাহলে দিতে হয় ১০৫০ টাকা। রক্তের কারবারিরা তাদের কাছে মজুত রাখে ক্রেডিট কার্ডগুলি। রক্তের প্রয়োজন হলেই রোগীর আত্মীয়দের নার্সিংহোমগুলির অসাধু কর্মীরা যোগাযোগ করতে বলে ওই দালালদের সঙ্গে। দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেই তারা রক্ত কিনে আনার নাম করে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা নেয়। ফের ক্রেডিট কার্ড নিয়ে রোগীর আত্মীয় সেজে বিনা পয়সায় রক্ত এনে দিয়ে মোটা টাকা মুনাফা করে দালালেরা। তারপর টাকা ভাগাভাগি করে নিত নিজেদের মধ্যে। দীর্ঘদিন ধরে বনগাঁ ব্লাড ব্যাংকে একই কারবার চালাচ্ছিল ধৃতরা।
বুধবার ধৃত অপর্ণা অধিকারী কার্ড নিয়ে রক্ত আনতে গেলে সন্দেহ হয় বনগাঁ ব্লাড ব্যাংকের কর্মীদের। পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাকে জেরা করে বনগাঁর শক্তিগড় থেকে উওম দাসকে গ্রেপ্তার করে৷ ধৃত উত্তম জেরায় স্বীকার করে তার সঙ্গে আরও অনেকই এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। ধৃত জানিয়েছে, বনগাঁর একাধিক নার্সিংহোমে রক্তের প্রয়োজন হলেই তাদের ফোন করে যোগাযোগ করিয়ে দেয় রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে৷ রক্ত এনে দিলে তাদের মেলে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। বাকিটা নেয় নার্সিংহোমের লোকেরা বলে জানায় ধৃত। থানায় বসে নিজের অপরাধের কথা নিজের কান ধরে কবুল করে ধৃত।
[মাঝ রাস্তায় দাউদাউ করে জ্বলছে খড়বোঝাই লরি, দেখুন ভিডিও]
স্থানীয় সুব্রত অধিকারী বলেন, “সম্প্রতি আমার বোনের সিজার হয় একটি নার্সিংহোমে৷ জরুরি রক্তের প্রয়োজন হয়েছিল। এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে। দ্রুত রক্ত পেয়ে সেই দালালকে দিতে হয় দেড় হাজার টাকা। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কার্ড দেখিয়ে রক্ত নিয়ে গিয়ে বাইরে বিক্রির খবর অনেক দিন ধরেই তাদের কাছে আসছিল। তাই সন্দেহজনক ভাবে ওই মহিলাকে ধরা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আর কারা যুক্ত আছে ধৃতদের সঙ্গে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.