বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: নিজের দু’বছরের ছেলে অনবরত কেঁদেই চলেছে। বারবার বারণ করা সত্ত্বেও কিছুতেই থামছিল না সে। মারধর করাতেও কাজ হয়নি। উলটে আরও জোরে কান্নাকাটি শুরু করে খুদে। রাগের বশে এরপরই ছেলের গলা টিপে ধরে মা। ছেলে অচৈতন্য হয়ে পড়তেই ঘর ছাড়ে বধূ। বাড়ি থেকে বেরিয়ে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেয় সে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার চাকদহে।
জানা গিয়েছে, চাকদহ থানার মদনপুরের পশ্চিম শান্তিনগর এলাকায় বাপের বাড়ি বন্দনা রায় ভগৎ নামে ওই মহিলার। বন্দনাদেবীর শ্বশুরবাড়ি উত্তর চব্বিশ পরগনার ইছাপুরে। স্বামী গঙ্গা ভগৎ একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী। ওই দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে। দিন পাঁচেক আগে ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি গিয়েছিলেন বন্দনাদেবী। বধূর স্বামী পরে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে যান। চাকদহে ছিলেন বন্দনাদেবী ও তাঁর ছেলে। সেখানেই ছেলের কান্নায় অতিষ্ঠ হয়ে ছেলের গলা টিপে ধরেন বধূ। এরপর ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন বন্দনাদেবী। তবে ওই খুদে সুস্থই রয়েছে। তবে শুধুমাত্র এই সামান্য কারণেই কি সন্তানকে খুন করার চেষ্টা করেছিলেন ওই বধূ? উঠছে প্রশ্ন।
মৃতার বাবা দিলীপ রায়ের কথায়, ‘আমার মেয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছিল। বিগত দু’বছর ধরে চিকিৎসাও চলছিল। ও অল্পতেই রেগে যায়। ঘটনার দিন সন্ধেয় নাতি কান্নাকাটি করছিল, মেয়ে ওকে চুপ করানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু নাতি চুপ না করায় ওকে মারধর করে মেয়ে। এরপর গলা টিপে ধরতেই নাতি অচৈতন্য হয়ে পড়ে। সেই সময় আমরা নাতির জ্ঞান ফেরাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লে আমাদের অলক্ষ্যে মেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।’ পরে মদনপুর স্টেশনের কাছ থেকে বন্দনাদেবীর দেহ উদ্ধারের পর গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। পুলিশের অনুমান, ছেলে অচৈতন্য হয়ে পড়তেই বন্দনা দেবী ভেবেছিলেন তার মৃত্যু হয়েছে। সেই কারণেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.