সোমনাথ পাল, বনগাঁ: গাইঘাটায় পিকনিক করতে গিয়ে জলে ডুবে বেসরকারি সংস্থার পদস্থ আধিকারিকের মৃত্যু। বনগাঁ থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করল মৃতের পরিবার। তাঁদের দাবি, ভাল সাঁতার জানতেন তিনি। তাহলে কীভাবে জলে ডুবে মারা গেলেন তিনি? যদিও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মদ্যপ অবস্থায় নৌকা চড়তে গিয়ে সম্ভবত নদীতে পড়ে গিয়েছিলেন ওই যুবক।
[ সিটি স্ক্যান রিপোর্ট পেতেই এক সপ্তাহ, রোগীর মৃত্যুতে ধুন্ধুমার বর্ধমান মেডিক্যালে]
মৃত যুবকের নাম অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায়। এক্সসাইড ব্যাটারি কোম্পানি উঁচু পদে চাকরি করতেন তিনি। সোদপুরের ফ্ল্যাটে স্ত্রী, ছেলে ও বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন অর্ঘ্য। তাঁর স্ত্রী চাকরি করেন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, সোমবার আচমকাই কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে গাইঘাটার সোনাটিকাটি গ্রামে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন অর্ঘ্য। দিনভর তাঁর সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ করা যায়নি। সন্ধেবেলা সহকর্মীরাই বাড়িতে ফোন করে জানান, অর্ঘ্য ভরতি বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে। বাড়ির লোকেরা যখন হাসপাতাল পৌঁছান, ততক্ষণে মারা গিয়েছেন তিনি। রাতে বনগাঁ হাসপাতালে মর্গে ছেলের নিথর দেহের সামনে কান্না ভেঙে পড়েন অর্ঘ্যের বাবা। অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায়ের পরিবারের দাবি, যে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে বনগাঁ হাসপাতালে আনা হয়েছিল, সেই অ্যাম্বুল্যান্সের চালক জানিয়েছেন, সোমবার রাতে কয়েকজন মদ্যপ যুবক অর্ঘ্যকে হাসপাতাল নিয়ে চলে এসেছিলেন। চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করার পর, দেহ নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু, শেষরক্ষা হয়নি। ওই মদ্যপ যুবকদের ধরে ফেলেন বনগাঁ হাসপাতালের কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। অ্যাম্বুল্যান্স চালক-সহ তিনজনকে আটক করেছে গাইঘাটা থানার পুলিশ। যদিও ওই যুবকের মৃত্যুকে নিছকই দুর্ঘটনা বলেই মনে করছে তদন্তকারীরা। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, মদ্যপ অবস্থা নৌকায় চড়তে গিয়েই নদীতে পড়ে গিয়েছিলেন অর্ঘ্য।
যদিও দুর্ঘটনার তত্ত্ব মানতে নারাজ অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায়ের পরিবার। গাইঘাটা থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা। মৃতের বাড়ির লোকের বক্তব্য, দিন কয়েক আগে এক সহকর্মীকে টপকে কোম্পানির ডেপুটি ম্যানেজার হয়েছিলেন অর্ঘ্য। ওই সহকর্মীটিই আবার সোমবার গাড়ি ভাড়া করে তাঁকে ও অফিসের আরও কয়েকজনকে গাইঘাটা পিকনিক করতে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে পেশাগত রেষারেষির কারণে অর্ঘ্যকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
[ বাল্যবিবাহ রুখে প্রাণনাশের হুমকির মুখে ছাত্রী, পাশে দাঁড়াল প্রশাসন]