Advertisement
Advertisement
বনগাঁর মৃন্ময়

নিত্যদিনের অভাবকে সঙ্গী করেই মৃন্ময়ী গড়ছে বনগাঁর মৃন্ময়

শৈল্পিক ছোঁয়াকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিতে চায় মৃন্ময়।

Class 8 student fights poverty, gets recognition for Durga idol
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:September 20, 2019 1:16 pm
  • Updated:September 20, 2019 1:16 pm

নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগা:  কথাতেই রয়েছে, ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়| অভাবের সংসার| বাবা ভ্যান-রিকশা চালক| মা বাবুদের বাসায় পরিচারীকার কাজ করেন| দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন জোগাড় করতেই হিমশিম খেতে হয় তাদের| তার ওপর আবার দুই সন্তানের পড়াশোনা|  দরমার বেড়ার বাড়িতে অভাব আর অশান্তি যেন নিত্য দিনের রোজনামচা| আর ঠিক এই পরিস্থিতির মধ্যেও কাদা-মাটি সহযোগে নিঁখুত হাতে মৃন্ময়ী গড়ে তুলছে খুদে মৃন্ময়।  

[আরও পড়ুন: পাঁচ টাকায় পোশাক, দুঃস্থদের কাছে যেন কল্পতরু শিলিগুড়ির ‘তারুণ্য’ বিপণী ]

ছেলে বেলায়  মাটির পুতুল নিয়ে উঠানে খেলতে খেলতে হঠাৎই ঠাকুর-দেবতার মূর্তি গড়ে পরিবার এবং পাড়া-প্রতিবেশীদের তাক লাগিয়ে দিয়েছিল বনগাঁর বিস্ময় বালক মৃন্ময়| সেই থেকে শুরু| অভাব অনটনকে নিত্যসঙ্গী করে মৃন্ময়ের জীবনে কেটে গিয়েছে আরও আটটা বছর| তবুও অভাব হার মানাতে পারেনি মৃন্ময়ের অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে, প্রতিভা আর শিল্পী মনকে| মৃন্ময়ও থেমে থাকেনি| মা দূর্গার চিন্ময়ীরূপকে মৃন্ময়ী করে ফুটিয়ে তুলতে বদ্ধ পরিকর মৃন্ময়। বয়স ১৩। তাতে কী? হাতের কাজ একেবারে নিখুঁত। আর তাই বোধহয় এই খুদে মৃৎশিল্পীর বানানো প্রতিমা এবার পূজিত হবে মন্ডপে। দীর্ঘ অনুশীলনের জন্য মাত্র ১৩ বছর বয়েসেই মৃন্ময়ের গড়া প্রতিমা দেখলে অবাক হতে হয়।

Advertisement

Advertisement

বনগাঁর দীনবন্ধু নগরের বাসিন্দা পেশায় ভ্যান চালক মঙ্গল বালা। ছেলে মৃন্ময়, মেয়ে চৈতালী  আর স্ত্রী স্বপ্না বালাকে নিয়ে ছোট সংসার মঙ্গল বাবুর। মৃন্ময় বর্তমানে স্থানীয় নিউ বনগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনির ছাত্র| পড়াশোনায় ছেলের মনোযোগ থাকলেও আর্থিক সঙ্গতি নেই, বলেন মৃন্ময়ের বাবা মঙ্গল। ছেলেবেলা থেকেই প্রতিভাবান মৃন্ময়| ছেলে মেয়ের চাহিদা মেটানোর মতো রোজগার নেই বাবা মঙ্গল আর মা স্বপ্না দেবীর। শত অভাব থাকা স্বত্ত্বেও কখনও ছেলে মৃন্ময়ের ইচ্ছাশক্তি আর শিল্পী মনে বাধা দেননি মঙ্গলবাবু। এত দিন পর স্বীকৃতি মিলেছে| স্বল্প টাকার বিনিময়ে মৃন্ময়ের তৈরি প্রতিমা যাবে বেশ কয়েকটি পূজা মন্ডপে| আনন্দে চোখে জল বাবা-মা’র।

[আরও পড়ুন: শিল্পীর হাত ধরে এবার সোনায় মুড়বে উত্তর কলকাতার এই পুজো মণ্ডপ]

দিন রাত এক করে আপন মনের মাধুরি মিশিয়ে মায়ের মৃন্ময়ীরূপ গড়ে চলেছে মৃন্ময়| দীনবন্ধু নগরের বাড়িতেই চলছে ক্ষুদে শিল্পী মৃন্ময়ের প্রতিমা গড়ার ব্যস্ততা| দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে মিলেছে শিল্পীর স্বীকৃতি। হয়তো এক দিন ঘুচে যাবে অভাব। কিন্তু শুধুই টাকা রোজগার নয়।  শৈল্পিক ছোঁয়াকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিতে চায় মৃন্ময়। কিন্তু নিত্যদিন অভাব তাড়া করে ফেরে তাদের| মেলেনি কোনও সরকারী সাহায্যও। তবুও অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে ভর করে এগিয়ে যেতে চায় মৃন্ময়। অভাব অনটনকে জয় করে শিল্পের ছোঁয়া দিয়েই মানুষের ভালোবাসা জয় করতে চায় বনগাঁর এই ক্ষুদে শিল্পী।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ