Advertisement
Advertisement
রুদ্রপ্রসাদ হালদার, কুন্তল কাঁড়ার

‘ভাবিনি কুন্তলের সঙ্গে ফিরতে পারব না’, কাঞ্চনজঙ্ঘা জয়ী রুদ্রপ্রসাদের গলায় আক্ষেপ

রুদ্রপ্রসাদ হালদারের সঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ায় পা রেখেছিলেন কুন্তল কাঁড়ারও৷

Climber Rudraprasad Halder opens up on Kuntal Kanrar's death
Published by: Sayani Sen
  • Posted:May 18, 2019 5:35 pm
  • Updated:May 18, 2019 5:56 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সদ্যই বরফের চাদরে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘার শিখর ছুঁয়েছেন চার বাঙালি৷ উচ্চতা কম হলেও, দুর্গমতার নিরিখে পর্বতাভিযানের ইতিহাসে এই জয় যেন এক অনন্য নজির৷ কিন্তু জয়ের আনন্দই এখন রূপ নিয়েছে বিষাদে৷ কারণ, এখনও নিখোঁজ বিপ্লব বৈদ্য এবং কুন্তল কাঁড়ার৷ খারাপ আবহাওয়ার কারণে তাঁদের উদ্ধার সম্ভব হয়নি৷ এদিকে, পাহাড় জয় করে আপাতত কাঠমাণ্ডুতে রয়েছেন বাকি দু’জন৷ সেখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা জয়ের অভিজ্ঞতা জানালেন রুদ্রপ্রসাদ হালদার৷ এদিকে শনিবার হাওড়ার বালিতে পর্বতারোহী কুন্তল কাঁড়ারের বাড়িতে যান মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

[ আরও পড়ুন: শিকার উৎসবে দাঁতালের হামলা, অযোধ্যার শিমুলবেড়া জঙ্গলে প্রাণে বাঁচলেন ৪ জন]

৪ এপ্রিল কাঞ্চনজঙ্ঘার পথে রওনা দেন সোনারপুর আরোহী ক্লাবের বিপ্লব বৈদ্য, রুদ্রপ্রসাদ হালদার, হৃদয়পুরের বাসিন্দা এবং মাউন্টেন কোয়েস্ট ক্লাবের সদস্য রমেশ রায়, ইছাপুরের শেখ সাহাবুদ্দিন ও হাওড়া ডিস্ট্রিক্ট মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের কুন্তল কাঁড়ার। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন পূর্বা, মিংমা, দাওয়া তেম্বা, দাওয়া সিরিং এবং দাওয়া নামের পাঁচ জন দক্ষ শেরপা। ১০ মে ক‍্যাম্প-২ তে পৌঁছান পর্বতারোহীরা৷ তাঁরা ঠিক করেন ১১ মে বিশ্রাম নেবেন৷ তার পরের দিন ক‍্যাম্প-৩ পৌঁছে যাবেন বলে স্থির করেন। কিন্তু বাদ সাধল খারাপ আবহাওয়া৷ তাই সেদিন ক‍্যাম্প-২ তেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর ১৩ মে ক‍্যাম্প-৩-তে পৌঁছান পর্বতারোহীরা৷ পরেরদিন ভোরে শুরু করেন ক্যাম্প ফোর অর্থাৎ সামিট ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে যাত্রা। মঙ্গলবার বিকেলে শুরু হয় ‘ফাইনাল অ্যাটেম্পট’৷ বুধবার সকালে কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ায় পা রাখেন চার বাঙালি৷

Advertisement

[ আরও পড়ুন: ফের আত্মহত্যা বিশ্বভারতীতে, হস্টেল থেকে উদ্ধার ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ]

এতক্ষণ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল৷ বিপত্তি ঘটল পাহাড় থেকে নেমে আসার সময়৷ অক্সিজেন শেষ হয়ে যাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন কুন্তল কাঁড়ার এবং বিপ্লব বৈদ্য৷ আচমকাই রুদ্রপ্রসাদ শুনতে পান কাঁপা কাঁপা গলায় কুন্তল বলছেন, ‘‘রুদ্র আমায় একটু শুতে দে না। প্লিজ, একটু ঘুমোতে দে না আমায়।’’ বুঝতে একটুও সমস্যা হয়নি তাঁর যে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে৷ তবে সেই সময় রুদ্রপ্রসাদ এতটাই অসুস্থ ছিলেন যে কুন্তলকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি৷ সময় যত গড়াচ্ছিল, ততই যেন হাই অল্টিচিউড সিকনেসের লক্ষ্মণ স্পষ্ট হচ্ছিল কুন্তলের মধ্যে৷ রুদ্রপ্রসাদের সঙ্গে ছিলেন পূর্বা শেরপা৷ প্রায়শই বলে যাচ্ছিলেন তিনি ওই সময়ে কুন্তলের পাশে থাকলে হয়তো মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়তে হত রুদ্রপ্রসাদকেও৷ তাও সহযাত্রীকে ছেড়ে আসতে হবে, ভাবতে পারেননি সফল পর্বতারোহী৷ কিন্তু রুদ্রপ্রসাদ বুঝতে পারেন ক্রমশই পরিস্থিতি ঘোরালো হচ্ছে৷ তাই বাধ্য হয়ে কুন্তলকে ছেড়ে নিচে নেমে আসতে শুরু করেন৷ ভেবেছিলেন নিচে নেমে কুন্তলকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করবেন৷

Advertisement

[ আরও পড়ুন: শেষ দফার আগেও রাজনৈতিক উত্তেজনা, শাসকদলের সন্ত্রাসের শিকার বিরোধীরা]

কিন্তু টানা খারাপ আবহাওয়ায় হেলিকপ্টার পাড়ি দিতে পারেনি৷ তাই এখনও বিপ্লব বৈদ্য এবং কুন্তল কাঁড়ারের দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি৷ পর্বতারোহীর পরিবার এখনও কুন্তলের দেহের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন৷ এদিকে মাকালু অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ এক বাঙালি পর্বতারোহী দীপঙ্কর ঘোষ৷ তাঁর তল্লাশিতে শনিবারও যেতে পারল না হেলিকপ্টার। এদিন বেস ক্যাম্প থেকে ক্যাম্প ২-র উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল উদ্ধারকারী হেলিকপ্টারের। কিন্তু পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় তা সম্ভব হল না। সূত্রের খবর, স্থানীয় টুংলিংটানে অপেক্ষা করতে হবে হেলিকপ্টারকে। অন্য একটি দলে হাঁটাপথে ওঠার কথা ছিল শেরপাদের। সেই পথও আপাতত বন্ধ। ফলে ২১, ২২ মে-র আগে কোনওভাবেই নতুন করে তল্লাশি শুরু করা সম্ভব হবে না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ