সুপর্ণা মজুমদার: দেশজুড়ে মূর্তি ভাঙার রাজনীতি চলছে। রেহাই পায়নি পশ্চিমবঙ্গও। মূর্তি ভাঙার এই হুজুকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাবাসাহেব আম্বেদকরের মূর্তি। এছাড়াও দেশের একাধিক স্থানে দলিতরা বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ এর বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এই অভিযোগে বৃহস্পতিবার হৃদয়পুর স্টেশন চত্বরে অবরোধ করল হৃদয়পুর আম্বেদকর মিশনের সদস্যরা। অবরোধের জেরে বেশ কিছুক্ষণ শিয়ালদহ-বনগাঁ এবং শিয়ালদহ-হাসনাবাদ শাখার ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়।
[পেনশন না ভালবাসা! কিসের টানে তিন বছর মায়ের দেহ আগলে রাখলেন শুভব্রত?]
অফিস টাইমে এই বিক্ষোভ হওয়ায় বেশ দুর্ভোগের মুখে পড়েন নিত্য যাত্রীরা। কেবল ট্রেনলাইনের যাত্রীরা নন ভোগান্তি পোহাতে হয় সড়ক পথের যাত্রীদেরও। কারণ হৃদয়পুর স্টেশনের লেভেল ক্রসিং পেরিয়েই যশোহর রোডের দিকে যেতে হয় যাত্রীদের। তবে আম্বেদকর মিশনের সদস্যদের অভিযোগ, ২০১৮ সালে শুরু থেকেই দেশে মূর্তি ভাঙার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। ত্রিপুরায় লেনিন, কেরলে মহাত্মা গান্ধী, তামিলনাড়ুতে পেরিয়ার থেকে কলকাতায় শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মতো ব্যক্তিত্বের মূর্তি ভাঙা হয়েছে। মাইকেল মধুসূদনের মূর্তিতে কালি প্রলেপ দেওয়া হয়েছে। আর এই হিড়িকে সবচেয়ে বেশি আম্বেদকরের মূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁদের। এমনকী, ২০১৭ সালে বিরাটিতেও আম্বেদকরের মূর্তি ভাঙা হয়েছে। এর প্রতিবাদেই সরব হয়েছেন তাঁরা। আর অবরোধের মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন। মিশনের দাবি, মূর্তি ভাঙার এই অপরাধে শামিল ছিলেন তাঁদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
[মানসিক অবসাদে ছাদ থেকে ঝাঁপ, মৃত্যু উঠতি মডেলের]
এদিকে শোনা গিয়েছে, গুজরাটে কর্মরত মতুয়া সম্প্রদায়ের শ্রমিককে পিটিয়ে মারার প্রতিবাদে শিয়ালদহ বনগাঁ শাখার বিভিন্ন রেল স্টেশনে বিক্ষোভ ও রেল অবরোধ করা হয়েছে। ফলে এদিন বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে বনগাঁ শাখার যাত্রীদের। অবরোধ উঠে যাওয়ার পরও অনেক ট্রেন দেরিতে চলছে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই সুপ্রিম কোর্টের ‘এসসি/এসটি প্রিভেনশন অফ এট্রোসিটি অ্যাক্ট’-এর সংশোধনকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে দেশের একাধিক স্থান। বিভিন্ন জায়গায় দলিতরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। রাস্তা অবরোধ করা হয়। ঘটনায় অন্তত দশজন প্রাণ হারান। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনা নামাতে হয়। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং জানান, ‘এসসি/এসটি প্রিভেনশন অফ এট্রোসিটি অ্যাক্ট’ যাতে বর্তমানে রূপেই থাকে তার জন্য ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছে কেন্দ্র। কিন্তু পরে আবার কেন্দ্রের উদ্বেগ বাড়িয়ে দলিত আইনে স্থগিতাদেশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিম কোর্ট। দশ দিন পর মামলাটির ফের শুনানি হবে বলে জানায় শীর্ষ আদালত।
[মা ফিরে আসবেন, বিশ্বাসে ৩ বছর মৃতদেহ ফ্রিজে ‘মমি’ করে রাখল ছেলে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.