Advertisement
Advertisement

Breaking News

Ghatal

কন্যাসন্তানকে চলন্ত বাসে ফেলে রেখে নেমে গেলেন মদ্যপ বাবা! ঘাটালের ঘটনায় শোরগোল

বাসে বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে বসেছিলেন মহিলা, তিনিই পুলিশের সাহায্য নিয়ে উদ্ধার করেন।

Drunken father left his daughter into running bus and escaped in Ghatal, later rescued | Sangbad Pratidin

ছবি: প্রতীকী

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:October 17, 2021 6:42 pm
  • Updated:October 17, 2021 7:40 pm

শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: এ যেন সেই বিখ্যাত লেখক রবার্ট লিন্ডের বিখ্যাত ‘ফরগেটিং’ রচনার বাস্তব সংস্করণ। লিন্ডের রচনায় এক মদ্যপ (Drunk) পিতা নিজের শিশু সন্তানকে প্যারাম্বুলেটরে চাপিয়ে মদের দোকানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বেমালুম ভুলে গিয়েছিল নিজের সন্তানের কথা। আকণ্ঠ মদ্যপান করে সন্তানকে ছেড়েই দিব্যি হাসতে হাসতে বাড়ি ফিরেছিল সেই মদ্যপ। ঠিক একইভাবে মদ্যপ অবস্থায় নিজের কন্যাসন্তানকে চলন্ত বাসে এক মহিলার কোলে বসিয়ে রেখে নেমে গেল বাবা! শনিবার এই ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের (Ghatal)। নেশা কাটতেই বাবা হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াল নিজের সন্তানকে। তবে বছর খানেকের শিশুটি কিন্তু দাসপুর পুলিশের হাত ঘুরে এই মুহূর্তে ঘুমোচ্ছে হাসপাতালের বেডে।

Advertisement

দাসপুর পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ পাঁশকুড়া স্টেশন থেকে মাছ বিক্রি করে বাসে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন জগন্নাথপুর গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী রেবতী ভুঁইঞা। একই বাসে নিজের মাসখানেকের মেয়েকে নিয়ে উঠেছিলেন দাসপুরের নবীন মানুয়া গ্রামের বাসিন্দা শ্রীমন্ত রাউত। গ্রামে মদ্যপ হিসাবেই পরিচিত শ্রীমন্ত। একসময় মেয়েকে সামলাতে পারছেন না বলে রেবতীদেবীর কোলে বাচ্চাটিকে বসিয়ে দেয় শ্রীমন্ত। রেবতীদেবীও আগ্রহ ভরে কোলে নেন শিশুটিকে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: স্বামী ও সতীনের অত্যাচারে জর্জরিত গৃহবধূ, ‘রেহাই’ পেতে তিন সন্তানকে নিয়ে ঝাঁপ দিলেন ক্যানালে]

এরপর বাস ঘাটাল-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের মেছোগ্রাম মোড়ে থামলে হঠাৎই নেমে যায় শ্রীমন্ত। বাসটি স্টপেজ ছেড়ে চলতে শুরু করে। কিন্তু মেয়েকে নিতে ফিরে আসেনি বাবা। ফলে শিশুকে নিয়ে বেজায় মুশকিলে পড়ে যান রেবতীদেবী। বাধ্য হয়ে মাস কয়েকের বাচ্চাটিকে নিয়ে নিজের বাড়িতে আসেন তিনি। বিকেলে ফের মেছোগ্রাম মোড়ে তিনি যান বাচ্চার বাবার খোঁজে। কিন্তু কোথাও শ্রীমন্তর কোনও খোঁজ না পেয়ে বাচ্চাটিকে নিয়ে পাঁশকুড়া থানার দ্বারস্থ হন রেবতীদেবী। পাঁশকুড়া পুলিশের পরামর্শ মেনে শিশুটিকে নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় দাসপুরে থানায় যান রেবতীদেবী। দাসপুর থানার পুলিশ শিশুটিকে দাসপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি করে। রেবতীদেবীর কাছে পুরো ঘটনা জেনে শিশুটির বাবা মায়ের খোঁজ শুরু করে পুলিশ।

[আরও পড়ুন: পরকীয়ায় লিপ্ত স্ত্রী! স্রেফ সন্দেহের বশে সন্তানদের সামনেই গৃহবধূকে ‘খুন’, গ্রেপ্তার স্বামী]

অবশেষে শিশুর ঠিকানা পাওয়া যায়। দাসপুর থানার পুলিশ অফিসার রাজকুমার দাশ জানান, শিশুটির বাবা শ্রীমন্ত রাউত একজন মদ্যপ। শনিবার চলন্ত বাসে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই মহিলার কোলে বসিয়ে মেছোগ্রাম মোড়ে নেমে যায় মদ্যপান করতে। তারপর নিজের বাচ্চার কথা বেমালুম ভুলে যায়। আসলে মেদিনীপুরে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজের মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন শ্রীমন্ত। শিশুটি এই মুহূর্তে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে শিশু বিভাগে ভরতি। তবে আপাতত সুস্থই রয়েছে সে। রবিবার দাসপুর পুলিশের সাহায্য নিজের মেয়ের হদিশ পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন তার মা সীমা রাউত। তিনি বলেন, ”আমার স্বামী প্রায় সবসময়ই মদ্যপ অবস্থায় থাকে। অনেক সময় কী করেন, তা ভুলেও যায়। আজ এমনটি যে হবে আমি ভাবতেই পারিনি।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ