দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: কথায় আছে সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার। আর সেই কারণেই জীবনের শেষপ্রান্তে পৌঁছে গঙ্গাসাগর যাত্রার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন বৃদ্ধ। দাদুর সেই মনস্কামনা পূর্ণ করতেই কার্যত হিমশিম খাচ্ছেন বছর কুড়ির দুই নাতি।
উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুরের বাসিন্দা রাম যাদব বিশ্বকর্মা। বয়স একশোর গণ্ডি পেরিয়েছে। তাঁর ইচ্ছে পূরণ করতেই এবছর তাঁকে সঙ্গে নিয়ে গঙ্গাসাগরে হাজির হয়েছেন তাঁর স্ত্রী ও নাতিরা। অন্যান্য পুণ্যার্থীদের মতো তাঁরা দল বেঁধে আসেননি। উত্তর প্রদেশ থেকে সোজা চলে এসেছেন হাওড়ায়। সেখান থেকে আউট ট্রাম ঘাট। তারপর বাসে নামখানা। সেখান থেকে লঞ্চে বেনুবন হয়ে সোজা সাগর। কিন্তু সাগরে আসার পথে তাদের প্রায় আট কিলোমিটার রাস্তা দাদুকে পিঠে নিয়ে হাঁটতে হয়েছে বড় নাতি মনু বিশ্বকর্মার। আর ছোট নাতি সামলিয়েছেন দিদিমাকে। কিন্তু শুধু তীর্থ দর্শন করানোই নয়, নাতিরা নজর রেখেছেন দাদুর শরীরের উপরও। দাদু ও দিদিমার জন্য সারাক্ষণ ঘর খুঁজেছেন দুই নাতি। কিন্তু ঘর মেলার আগেই বেশ সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। কারণ, সন্ধে থেকে তাঁরা যেখানে বসেছিলেন, রাতে হঠাৎই সেখানে জোয়ারের জল উঁকি মারতে শুরু করে। অবশেষে তাই ৩০০ টাকা দিয়ে একটা মাথা গোঁজার জায়গা জোগাড় করেছেন।
বড় নাতি মনু বিশ্বকর্মার কথায়, ‘দাদু বহুদিন ধরে গঙ্গাসাগরে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। পয়সার অভাবে আসা সম্ভব হয়নি। তাই এবার চলেই এলাম। আমাদেরও পুণ্য হল আর দাদুর মনের বাসনাও মিটল।’ প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাত বাড়তেই জনস্রোত আছড়ে পড়েছে সাগরে। যত রাত কেটে গেছে কত মানুষ যোগ দিয়েছেন পুণ্যস্নানে। বুধবার সারাদিনও প্রায় চলবে স্নান। সাগর মেলা কে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে তৈরি প্রশাসন। আর এই মহেন্দ্রক্ষনের জন্য সমস্ত রকমের পরিষেবা গত কয়েক দিন ধরে চালু রাখা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। প্রশাসনের দাবি, ইতিমধ্যে প্রায় ৩৫ লক্ষ মানুষ সাগরে ভিড় জমিয়েছেন অথবা স্নান সেরে ফিরে গেছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.