Advertisement
Advertisement

Breaking News

জন্মদিনে হতদরিদ্র শিশুগুলির মুখে হাসি ফোটায় আমতার এই স্কুল

স্কুলে জমা দেওয়া বার্থ সার্টিফিকেট দেখে পালন করা হয় জন্মদিন।

Every student's Birth Day celebrated in this school in Amta
Published by: Tanujit Das
  • Posted:September 25, 2018 9:32 pm
  • Updated:September 26, 2018 7:56 am

সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: স্কুল নয়, বরং একে “সব পেয়েছির আসর” বলাই শ্রেয়। যেখানে শিক্ষক-শিক্ষিকারা নতুন নতুন চিন্তা ভাবনার মধ্যে দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মন থেকে স্কুল ছুটের প্রবণতা দূর করার চেষ্টা করেন। যার মধ্যে অন্যতম হল স্কুলের ভিতরেই প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর জন্মদিন পালন করা। বাড়িতে শিশুদের জন্মদিন পালনের মতই কোনও ছাত্র বা ছাত্রীর জন্মদিনে স্কুলের একটি কক্ষকে বেলুন ও “হ্যাপি বার্থডে” লেখা বোর্ড দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়। সেখানে মোমবাতি জ্বালানো থেকে শুরু করে জন্মদিনের সমস্ত রীতি পালন করা হয়।

[গরু কেন কম দুধ দিচ্ছে? বিতর্কে রক্তারক্তি কাণ্ড মালদহে]

Advertisement

আমতা থানার প্রত্যন্ত অনগ্রসর একটি গ্রাম সোনামুই। মঙ্গলবার সেখানেই সোনামুই হরিসভা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে এই অভিনব উদ্যোগ লক্ষ্য করা গেল। এদিন ছিল দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র বছর সাতের ভাস্করের জন্মদিন। তার অষ্টম জন্মদিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রী সকলের মধ্যেই ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা গেল। ক্লাসের পড়াশোনার পর্ব শেষ হতেই এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। স্কুলের ৪০ জন ছাত্র-ছাত্রী ও তিন জন শিক্ষক-শিক্ষিকা একটি শ্রেণিকক্ষে মহা ধুমধামের সঙ্গে পালন করলেন ভাস্কর পাঁজার অষ্টম জন্মদিন। সেখানে ভাস্করের মা-ও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরুণ খাঁ ও দুই শিক্ষিকা বনশ্রী ভৌমিক ও সুচেতা সাউ উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

শিক্ষিকা বনশ্রী ভৌমিক জানালেন, ওই এলাকার অধিকাংশ কৃষিজীবী মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করেন। তাঁদের অনেকেই সন্তানদের জন্মদিন কবে সেটাই মনে রাখতে পারেন না, আর মনে থাকলেও অর্থাভাবে সকলে সন্তানদের জন্মদিন পালন করতে পারেন না। তাই স্কুলে জমা দেওয়া বার্থ সার্টিফিকেট দেখেই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ছাত্র-ছাত্রীদের জন্মদিন পালন করে থাকেন। একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে তিনি আরও এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন। জানালেন, গ্রামের মানুষদের মন থেকে এখনও কুসংস্কার দূর হয়নি। তাই এখানকার অধিকাংশ অভিভাবকই তাঁদের কন্যা সন্তানদের জন্মদিন পালন করেন না। তাঁদের ধারণা মেয়েদের জন্মদিন পালন করলে তাদের ক্ষতি হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ যখন স্কুলের মধ্যে কন্যা সন্তানদের জন্মদিন পালন করেন তখন সেইসব বঞ্চিত কন্যা সন্তানদের মুখে এক অদ্ভুত পরিতৃপ্তি লক্ষ্য করা যায়।

[ফিল্মি কায়দায় ট্রেন থেকে লাফ দিয়ে পালাল কিশোর]

তিনি জানান যার জন্মদিন পালন করা হবে তাঁকে ও স্কুলের অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের দু’দিন আগে থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দেওয়া উপহার ছাড়াও অন্যান্য ছাত্র ছাত্রীরা তাদের সহপাঠীর জন্য কোনও উপহার আনতে চাইলে আনতে পারে। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্মদিনে সকলকে কেক ও চকোলেট খাওয়ান তাদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। প্রধান শিক্ষক অরুণবাবু জানান কঠোর অনুশাসন নয়, শিশুদের প্রতি স্নেহ, মায়া, মমতা আর ভালোবাসাই হল তাদের শিক্ষায় মনোনিবেশের প্রধান চাবিকাঠি। তিনি জানান প্রতি শনিবার স্কুলের শিশুদের সংগীত, নৃত্য, আবৃত্তি ও খেলাধুলার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। স্কুলে এই আনন্দের পরিবেশের জন্য পড়ুয়ারা স্কুল কামাই করতে চায় না। স্বাভাবিকভাবেই স্কুল কর্তৃপক্ষের এই ধরনের উদ্যোগে খুশি পড়ুয়ারা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ