ছবি: প্রতীকী
শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: মায়ের দেহ ঘরে রেখে সম্পত্তি ভাগ-বাটোয়ারায় ব্যস্ত তিন সন্তান। এমনই মর্মান্তিক ছবি দেখা গেল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের সোহরাই মোড় এলাকায়। সকালে মায়ের মৃত্যু হলেও বিকেল পর্যন্ত বাড়িতেই পরে থাকে দেহ। দীর্ঘক্ষণ পর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পঞ্চায়েত সদস্য ও পুলিশ। তাঁদের উদ্যোগেই বৃদ্ধার দেহ সৎকারের ব্যবস্থা শুরু হয়। বৃদ্ধার সন্তানদের কীর্তিতে হতবাক স্থানীয়রা।
মৃতার নাম নিয়তি দত্ত। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন তিনি। ৭ মাস আগে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয় তাঁর। স্বামীর মৃত্যুর পর নিয়তিদেবী অসুস্থ অবস্থায় মেয়ে স্বপ্নার কাছে থাকতে শুরু করেন। পাশেই থাকেন নিয়তি দেবীর দুই পুত্র সন্তান আশিস ও কমল। বুধবার সকালে নিয়তিদেবীকে নিথর হয়ে বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন মেয়ে। এরপরই খবর দেওয়া হয় প্রতিবেশীদের। কিন্তু আদৌ তখনও নিয়তদেবীকে মৃত বলে ঘোষণা করেননি কোনও চিকিৎসক। ঘটনার পর দীর্ঘক্ষণ পেরিয়ে গেলেও কোনও চিকিৎসককে খবর দেওয়া হয়নি। উলটে মায়ের মৃত্যু হয়েছে তা বুঝতে পেরে সম্পত্তি বাটোয়ারা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন বৃদ্ধার সন্তানেরা।
জানা গিয়েছ, তড়িঘড়ি ডেকে আনা হয় জমি মাপার লোক। জমি সমান ভাগ করে দেন তিনি। এরপর সীমানায় খুঁটিও পুঁতে ফেলেন দুই ছেলে। দুপুর তিনটে পর্যন্ত এসবই চলে বৃদ্ধার দেহ কাপড়ে ঢেকে রেখে। গোটা দিনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন প্রতিবেশীরা। এরপই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পঞ্চায়েত সদস্য ও পুলিশ। তাঁদের প্রশ্নের মুখে পড়ে যদিও বোনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন আশিস ও কমল। তাঁদের অভিযোগ, বোনই তাঁদের মাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধা দিয়েছে। সূত্রের খবর, পুলিশের উপস্থিতিতে ইতিমধ্যেই বৃদ্ধার সৎকারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে এই তিন সন্তানের কীর্তিতে লজ্জায় মুখ ঢাকছেন রায়গঞ্জবাসী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.