ধীমান রায় কাটোয়া: সরস্বতী পুজো এলেই বাজারে আমদানি হয় কুলের। আপেল কুলের চাহিদা বাজারে প্রচুর। তবে নারকেল কুল বা আপেল কুল বেশিরভাগ আমদানি হয় ভিন জেলা থেকে। কিন্তু এবছর আপেল কুল উৎপাদন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্রাম। ক্ষীরগ্রামের একটি দিঘির পাড়ে প্রায় ৩০ বিঘা জমির উপর আপেল কুলের চাষ করছেন দুই চাষি। তাঁদের এই চাষ এলাকায় সাড়া ফেলেছে। সুস্বাদু আপেল কুলের চাহিদাও তুঙ্গে। কাছাকাছি কাটোয়া, গুসকরা, ভাতার, মঙ্গলকোট, দাঁইহাট, মন্তেশ্বরের মতো জায়গায় বিক্রি হচ্ছে ক্ষীরগ্রামের আপেল কুল। বাইরেও পাঠানো হচ্ছে।
[কেন সরস্বতী পুজোর আগে কুল খায় না ছাত্র-ছাত্রীরা?]
ক্ষীরগ্রামের ধামাচি নামে একটি দিঘির পাড়ে রয়েছে কয়েক একর জায়গা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে এই জায়গার মালিক স্থানীয় সামন্ত পরিবার। তাঁদের কাছে লিজ চুক্তিতে দুই বন্ধু এই জায়গা নিয়েছেন বিকল্প চাষের জন্য। পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাট থানা এলাকার বাসিন্দা ছিদাম দাস ও মুরাদ আলি এই দু’জন বন্ধু যৌথভাবে ওই জায়গা লিজ নিয়ে চাষাবাদ করছেন। ছিদাম ও মুরাদ জানিয়েছেন, প্রায় ৭০ বিঘা জমি তাঁরা বার্ষিক ৬০ হাজার টাকা চুক্তিতে চার বছর আগে লিজ নিয়েছেন। আম, পেয়ারার পাশাপাশি কুলের চাষ শুরু করেছেন। গাছ লাগানোর বছর দুয়েক পর থেকে ভালই ফলন শুরু হয়েছে। তার মধ্যে বাম্পার ফলন হচ্ছে আপেল কুলের। ছিদামদের কথায় পৌষ মাসের শুরু থেকেই কুলের ফলন শুরু হয়। মাঘ মাসে কুল তোলা শুরু হয়। মাঘের শেষের দিকে ফলন কিছুটা কমে আসে। তবে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত গাছে ফল ধরে।
[তালপাতার সরস্বতী, রানিনগরে বাগদেবীর আরাধনায় চমক ]
এই আড়াই তিন মাসের মধ্যেই প্রচুর উৎপাদন হয় কুলের। ক্ষীরগ্রামের ওই দুই চাষি জানিয়েছেন, ৩০ বিঘা জমিতে কুলগাছ রয়েছে। দৈনিক প্রায় ১৪-১৫ কুইন্টাল কুল তুলেছিলেন তাঁরা। কাছাকাছি বাজার ছাড়াও কলকাতা, বীরভূম শিলিগুড়িতেও কুল রপ্তানি করেছেন। ২০-৩০ টাকা কেজি দরে পাইকারি মূল্যে তাঁরা কুল বিক্রি করছেন। কখনও তা ১০-১৫ টাকায় নেমে যায়। তাতে খুব একটা লোকসান নেই বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ধামাচি দিঘির পাড়ে কুল চাষে নজর পড়েছে স্থানীয় বহু কৃষকেরই। অন্য চাষিরাও উৎসাহিত হচ্ছেন এই বিকল্প চাষে।
ছবি: জয়ন্ত দাস