সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড পুরুলিয়ায়। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হল ৭ জনের। এঁদের মধ্যে রয়েছে দুটি শিশুও। বৃহস্পতিবার রাতে পুরুলিয়ার মহাদেবপুরে ঘটেছে এই মর্মান্তিক ঘটনা। এই ঘটনায় এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতেরা পুরুলিয়ার কাশীপুর অঞ্চলের ধঁতলা গ্রামের বাসিন্দা। মৃতের পরিবার পেশায় শিউলি। শীতের মরশুমে তাল ও খেজুর রস সংগ্রহ করাই তাঁদের কাজ। সেজন্যই মাসখানেক আগে মহাদেবপুরে অস্থায়ী শিবির তৈরি করে বসবাস করছিল ওই শ্রমিক পরিবার। গতকাল রাতে খাবার খেয়ে শুয়ে পড়েছিলেন সকলেই। তারপর ঘটে অগ্নিকাণ্ড। ঘুমন্ত অবস্থাতেই মৃত্যু হয় ৭ জনের। পুলিশের অনুমান, উনুন বা লম্ফ থেকেই আগুন লাগে। প্রতিবছরই মহাদেবপুরে অস্থায়ী ছাউনি করেন কালিপদ চৌধুরি। শীতের মরশুমে তাল ও খেজুর রস সংগ্রহ করাই পেশা শিউলি কালিপদবাবুর। সেই রস ফুটিয়ে গুড় তৈরি করেন তিনি। এবারেও এসেছিলেন একই কাজে। তবে নিয়তির পরিহাসে পালটে গিয়েছে তার জীবন। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে কালিপদবাবুর দুই শ্যালিকা, স্ত্রী ও চার শিশুর।
জানা গিয়েছে, রাত ১টা থেকে ১.৩০ মিনিটের মধ্যে ঘটনাটি ঘটে। সেদিনই ওই ছাউনিতে কালিপদবাবুর আত্মীয়রা আসেন। রাতে মাংস রান্না করে খাওয়া দাওয়া হয়। তারপর শুয়ে পরেন সকলেই। ওই অভিশপ্ত তাল পাতার ছাউনিতে ঘুমাতে যান কালিপদবাবুর স্ত্রী, দুই শ্যালিকা ও তাঁদের চার শিশু। বরাত জোরে পাশের একটি বেদিতে শ্যালক ও দুই বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে শুতে যান কালিপদবাবু। আগুন লাগার ঘটনা প্রথমে নজরে আসে শিশু দু’টির। তারাই বাবা ও মামাকে ঘুম থেকে তোলে। প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠে আত্মীয়দের বাঁচাতে গিয়ে জখম হন কালিপদবাবুও। স্থানীয়রা খবর দিলে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকল ও পুলিশ। ভোর ৩টে নাগাদ মৃতদেহ উদ্ধার করে পুরুলিয়া সদর হাসপাতাল পাঠানো হয়। এদিকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কালিপদবাবুর চিকিৎসা চলছে। রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া| ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে তদন্তের আশ্বাস দেন তিনি।
[মর্গে বাবা, কনেকে লগ্নভ্রষ্টা হতে না দিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে শোকে বিহ্বল ছেলে]