সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকা থেকে জল নামতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি মালদা ও দুই দিনাজপুরে। বন্যার কারণে আগামী শনিবার পর্যন্ত উত্তর দিনাজপুরের সমস্ত, স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা। এদিকে, বন্যার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার রাতে বালুরঘাটে পৌঁছেছেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার প্রশাসনিক বৈঠক করার পাশাপাশি, বন্যা কবলিত এলাকাগুলি পরিদর্শন করবেন তিনি। অন্যদিকে, বন্যার কারণে বুধবারও কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গগামী বহু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। বিপাকে যাত্রীরা। এরইমধ্যে অবশ্য কিছুটা স্বস্তির খবর শুনিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। যে ঘূর্ণাবর্তের কারণে বানভাসি উত্তরবঙ্গ, সেটি আপাতত বিহারের দিকে সরতে শুরু করেছে। তাই উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি কিছু কমবে। তবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ-সহ দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
[উত্তরবঙ্গে একদিনে মৃত্যু ৯ জনের, আরও ঘোরাল বন্যা পরিস্থিতি]
একদিকে যখন কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি জল নামতে শুরু করেছে, তখন উলটো ছবি মালদা ও দুই দিনাজপুরে। সেখানে বন্যা পরিস্থিতি এখনও কোনও উন্নতি হয়নি। বরং বিহারের ধবল বাঁধ ভেঙে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠেছে। উত্তর দিনাজপুরের অনেক জায়গায় এখনও জলমগ্ন জাতীয় সড়ক। ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। কিষাণগঞ্জে জল জমে থাকায় বাতিল বহু ট্রেন। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় ডালখোলা, করণদিঘি ও বিলাসপুরে। করণদিঘির দোমোহনায় সুধানি নদীর জল ঢুকে নতুন করে প্লাবিত বহু এলাকা। বন্যায় আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করতে গুয়াহাটি থেকে ডালখোলা পর্যন্ত বিশেষ ট্রেন চালানোর কথা ঘোষণা করেছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। আগামী শনিবার পর্যন্ত উত্তর দিনাজপুরের সমস্ত স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাও।
[বিচ্ছিন্ন উত্তরবঙ্গ, ১৬ আগস্ট পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ মালদহ-কাটিহারে]
একই অবস্থা দক্ষিণ দিনাজপুরেরও। বালুরঘাটে আত্রেয়ী ও পূর্নভবা নদীর জল বাড়ছে। এদিকে, মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচোল, রতুয়ায় ৩০টি গ্রাম জলে তলায়। বালুরঘাটের আত্রেয়ী ও পূর্নভবা নদীর জল ঘুরপথে গিয়ে ঢুকে পড়ায় ভেসে গিয়েছে বামনগোলা। ভাঙন বাড়ছে বৈষ্ণবগর ও মানিকচকেও। অন্যদিকে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে ঠিকই। তবে বিপদ বাড়িয়েছে ভাঙন। জলপাইগুড়ি রাজগঞ্জে তিস্তার ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে একটি বৃদ্ধাশ্রম। ভাঙন বেড়েছে গজলডোবাতেও। অন্যদিকে কোচবিহার শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ক্রমশই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে তোর্সার ভাঙন। ভাঙনের কবলে দিনহাটার গীতালদহ এলাকাও।
[টানা বৃষ্টিতে দক্ষিণে বিপর্যস্ত জনজীবন, উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি]
বন্যা কারণে এখনও সড়ক ও রেলপথে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন। বুধবারও কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গগামী বহু ট্রেন বাতিল হয়েছে। চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা। বিভিন্ন কারণে কলকাতা এসে আটকে পড়েছেন উত্তরবঙ্গের বহু মানুষ। তবে এই ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গের উপর সক্রিয় ঘুর্ণাবর্তটি বিহারের দিকে সরতে শুরু করেছে। তাই বৃষ্টি কিছু কমবে। তবে বুধবার ও বৃহস্পতিবার কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমহবঙ্গ ও উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.