রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: অতিবিরল প্রজাতির ‘গ্রিন পিট ভাইপার’ সাপ উদ্ধার হল আলিপুরদুয়ারে। শনিবার সকালে জেলার কালচিনি ব্লকের হাসিমারা বিএসএনএল অফিসের সামনের একটি ঝোপ থেকে উদ্ধার করা হয় সাপটিকে৷ বিরল প্রজাতির এই সাপটির বিশেষত্ব হল, এটি ডিম পারে না, বরং বাচ্চা প্রসব করে৷ প্রসবের সময়ই ঝোপ পরিষ্কার করতে গিয়ে সাপটিকে দেখতে পান শ্রমিকরা৷ খবর দেওয়া হয় বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কর্তৃপক্ষকে৷ তাঁরাই এসে সাপটিকে উদ্ধার করেন৷
[দেনার দায়ে ছেলেকে খুন করে আত্মঘাতী বাবা, গড়িয়ায় চাঞ্চল্য]
সাপকে বাচ্চা প্রসব করতে দেখে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে৷ সেই দৃশ্য দেখতে ভিড় জমান এলাকাবাসী৷ জানা গিয়েছে, বিষধর সাপটিকে দেখা মাত্রই শ্রমিকরা হাসুয়ার কোপে সাপটিকে মেরে ফেলতেও উদ্যত হয়। তখন পরিবেশ কিছু পশুপ্রেমী সাপটিকে মারতে বাধা দেন। খবর দেওয়া হয় বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে। ব্যাঘ্র প্রকল্পের হ্যামিল্টনগঞ্জ রেঞ্জের বনকর্মীরা সাপটিকে উদ্ধার করে সাপটিকে। তবে প্রসব করা সাপের বাচ্চার হদিশ পাওয়া যায়নি৷ বনদপ্তরের কর্মী সুমন শা বলেন, “সাপটি সুস্থ রয়েছে। বিষধর এই সাপকে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের হ্যামিলটনগঞ্জ রেঞ্জের গুদামডাবরি বিটের জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
জানা গিয়েছে, এই সাপের কামড়ে মানুষের শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে গিয়ে চামড়া ফেটে রক্ত বের হয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে, পায়ু, নাক, লোমকূপ, কান-সহ মানুষের শরীরের বিভিন্ন ছিদ্র দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। অতিবিরল প্রজাতির এই সাপ বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে এর আগেও দেখা গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। বিষয়টি নিয়ে সর্প বিশারদ মিন্টু চৌধুরি বলেন, “সাধারণত দুই প্রজাতির পিট ভাইপার দেখা যায়। গ্রিন পিট ভাইপার ও ইয়োলো পিট ভাইপার। গ্রিন পিট ভাইপার পাহাড়, চা-বাগান এবং বনাঞ্চলে দেখা যায়।” বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের হ্যামিল্টনগঞ্জ রেঞ্জের ডেপুটি রেঞ্জ অফিসার আনন্দ বিশ্বাস বলেন, “আমরা খবর পাওয়া মাত্র সাপটিকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করেছি। সাপটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ।”
[গৌরবময় সাফল্য ইসরোর, চারবছর পরও সক্রিয় মঙ্গলে পাঠানো উপগ্রহ]
উল্লেখ্য, ২০০৫-এ জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে সর্প সমীক্ষাতেও এই সাপের হদিশ পাওয়া যায়। এরপর, ২০০৯-এর গরুমারা জাতীয় উদ্যানে সাপ সমীক্ষার সময় এই সাপ প্রথমে নজরে আসে। ১৩ বছরেও হাতে গোনা কয়েকটি জায়গায় এই সাপের হদিশ পাওয়া যেত। এই সাপ লম্বায় খুব বেশি হলে সাড়ে তিনফুট৷ সাপটি দেখতে অনেকটা লাউডগা সাপের মত৷ এর মাথা টাকি মাছের মতো চ্যাপ্টা হয়।