দেবব্রত মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: লুঙ্গিই কাড়ল প্রাণ। বাড়ি ফেরার তাড়া ছিল। সেই তাড়াহুড়োই ডেকে আনল বিপদ। রেললাইন টপকে ট্রেনে উঠতে গিয়ে পায়ে জড়িয়ে গেল লুঙ্গি। তড়িঘড়ি ছাড়াতে গিয়ে লুঙ্গির কোণে আটকে রেললাইনে আছড়ে পড়লেন প্রৌঢ়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। মৃতের নাম যুধিষ্ঠির গায়েন(৫৮)। মঙ্গলবার সকাল আটটা নাগাদ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে শিয়ালদার দক্ষিণ শাখার জয়নগর স্টেশনে।
জানা গিয়েছে, মৃত যুধিষ্ঠিরবাবুর বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর থানা এলাকার লালপুরের নাটাবেড়িয়া গ্রামে। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি দুরারোগ্য ক্যানসারে ভুগছিলেন। প্রথমে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি কেমোও নিয়েছেন। তবে শারীরিক অসুস্থতা ও দূরত্বের কারণে এসএসকেএমে যেতে চাইছিলেন না তিনি। তাই জয়নগরের একটি নার্সিংহোমে চলছিল চিকিৎসা। এদিন সকালে হাসপাতাল থেকেই মথুরাপুরের বাড়িতে ফিরছিলেন যুধিষ্ঠিরবাবু। তিনি যখন জয়নগর স্টেশনে পৌঁছান তখন বাড়ি ফেরার ডাউন ট্রেন দু’নম্বরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। নিত্য যাতায়াতের কারণে ট্রেনের সময়সূচি তাঁর মুখস্ত হয়ে গিয়েছিল। তাই দ্রুত দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনটি ধরার চেষ্টায় এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের রেললাইনে নেমে পড়েন। রেললাইন পেরিয়ে ট্রেনে উঠতে যেতেই ঘটে বিপত্তি। পরনের লুঙ্গি আচমকাই পায়ে জড়িয়ে যায়। তা ছাড়িয়ে উঠতে না উঠতেই হর্ন মেরেছে ট্রেন। এরমধ্যে সামান্য ঝাঁকুনিতে লুঙ্গির কোণ আটকে যায় চাকায়। শেষপর্যন্ত ট্রেনে উঠতে পারেননি ওই প্রৌঢ়। লুঙ্গির কারণে প্রৌঢ়কে বেশ খানিকটা টেনে নিয়ে যায় ডাউন লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল। তারপর লুঙ্গির কোণ আলগা হতেই রেল লাইনের উপরে আছড়ে পড়েন যুধিষ্ঠিরবাবু। সেই সময় জয়নগর প্ল্যাটফর্মে থাকা যাত্রীরা তড়িঘড়ি তাঁকে স্থানীয় নিমপীঠ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
[মাদকের টাকা মেটাতে বাবাকে ‘বন্ধক’ রাখল গুণধর ছেলে]
সাত সকালে এমন মর্মান্তিক ঘটনার জেরে জয়নগর রেল স্টেশনে চাঞ্চল্য ছড়ায়। রেলপুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। সেই সঙ্গে যুধিষ্ঠির গায়েনের মৃত্যুর খবর পৌঁছেছে লালপুরের নাটাবেড়িয়া গ্রামের বাড়িতে। এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া।