Advertisement
Advertisement

Breaking News

দু’টি হাতই অচল, পায়ে লিখে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে মুর্শিদাবাদের মোক্তার

অদম্য জেদের কাছে হার মেনেছে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা।

Handicapped student appears in Madhyamik
Published by: Tanumoy Ghosal
  • Posted:February 14, 2019 1:41 pm
  • Updated:February 14, 2019 9:51 pm

শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা:  হাত অচল, পায়ে লিখে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে মুর্শিদাবাদের সুতির লক্ষ্মীপুরের মোক্তার শেখ। তাঁর সিট পড়েছে বাড়ি থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বে আহিরণ হেমাঙ্গিনী বিদ্যায়তনে। দুই হাত অচল হলেও পায়ে লিখে অন্যান্য বন্ধুদের টেক্কা দিতে তৎপর বছর ষোলোর মোক্তার।

[অদম্য মনের জোর, বাবাকে কবরে শুইয়ে মাধ্যমিকে বসল সাবিনাচ-সালমা]

Advertisement

বিড়ি শ্রমিক অধ্যুষিত সুতি-২ ব্লকের প্রত্যন্ত এক গ্রাম লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা রাজমিস্ত্রি ফানসুর সেখের ঘরে জন্ম মোক্তারের। মা শেফালি বিবি বিড়ি শ্রমিক। ফানসুর-শেফালির পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার ছোট মোক্তার। তার দুই হাত অচল। পা দিয়ে চলাফেরা করতে পারে না। স্কুলে ব্যাগ নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে শৌচকর্ম, সব কিছুতে অন্যের উপর ভরসা করে চলতে হয় মোক্তারকে৷ ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ থাকলেও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা একসময়ে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সেই সময়ে মোক্তারের পাশে সঙ্গী হয়ে দাঁড়ান মা শেফালি বিবি। বেলা দশটা বাজলে প্রতিদিন নিজের প্রতিবন্ধী ছেলেকে কোলে করে পৌঁছে দিতেন স্কুলে। হাত অসাড় হওয়ার কারণে পা দিয়ে লিখত মোক্তার। মুখে উচ্চারণ ও পায়ে লিখেও সে স্কুলের মেধাবী ছাত্রদের পাল্লা দিতে শুরু করে। এইভাবে প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে হাইস্কুল পর্যন্ত পৌঁছে যায় মোক্তার। স্রেফ শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণেই প্রথমে মোক্তারকে হাইস্কুলের ভরতি নিতে চায়নি কর্তৃপক্ষ। শেষপর্যন্ত তার মায়ের কাতর অনুরোধ ভরতি নেওয়া হয়। কিন্তু, রোজ প্রায় তিন কিমি পথ পেরিয়ে ছেলে স্কুলে দিতে গিয়ে  বিপাকে পড়েন মোক্তারের মা। বাধ্য হয়ে মোক্তারকে ভরতি হতে হয় বাড়ির পাশে একটি বেসরকারি স্কুলে। পায়ে লিখলেও মেধার কারণে সহজে সকলের এক প্রিয় বন্ধুতে পরিণত হয় মোক্তার৷ প্রতিবন্ধকতা থাকলেও অন্যান্য বন্ধুদের মতো জোরকদমে প্রস্তুতি নিয়ে এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছে মোক্তার। 

Advertisement

মঙ্গলবার বাংলা পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে মোক্তার শেখ জানিয়েছে, “পরীক্ষা খুব ভাল হয়েছে। আশা করছি ভাল রেজাল্ট হবে।” অন্যান্য পরীক্ষার জন্যও জোরকদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে সে।  মা শেফালি বিবি বলেন, “আমরা অশিক্ষিত হলেও ছেলের জেদি মনোভাবে পড়াশোনা করাচ্ছি। কোনও বেতন দিতে পারি না। আমার ছেলে অসহায়। তাই আমরা ওকে পড়াশোনা করিয়ে অন্য প্রতিবন্ধীদের অনুপ্রেরণা করতে চাইছি। সে নিজে খাওয়া দাওয়া, শৌচকর্ম, কিছু করতে পারে না। দুটো হাত অচল। সম্পূর্ণ পরনির্ভর। আজ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিল। তার রেজাল্ট ভাল হবে এটা আশাকরি।”

[ সক্রিয় প্রাক্তন বিধায়ক, অ্যাডমিট বিভ্রাট কাটিয়ে মাধ্যমিকে বসল ছাত্রী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ