ছবি: প্রতীকী
জ্যোতি চক্রবর্তী, বসিরহাট: হাড়োয়া কাণ্ডের পর পেরিয়ে গিয়েছে দু’দিন। একাদশ শ্রেণির কিশোরীর চোখে-মুখে এখনও আতঙ্ক স্পষ্ট। বাবা হারানো মেয়েটি কবে ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে, ফের কবে পঠন-পাঠন শুরু করতে পারবে তা নিয়ে আশঙ্কায় তার মা।
শুক্রবার সন্ধেয় হাড়োয়ার এক কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল হাড়োয়ার মোহনপুর। জনতা-পুলিশের খণ্ডযুদ্ধে পুলিশের একাধিক গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে নির্যাতিতা কিশোরী ও তার মা। মেয়েকে নিয়েই তাঁর বেঁচে থাকা। স্বপ্ন ছিল বাবা হারানো মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে নিজের পায়ে দাঁড় করাবেন। তাই সামর্থের বাইরে গিয়েও মেয়েকে সবটুকু দেওয়ার চেষ্টা করতেন। লেখাপড়াও শেখাচ্ছিলেন মেয়ে। কিন্তু শুক্রবারের ঘটনার পর মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ওই মহিলা।
আদৌ মেয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে সুস্থভাবে পঠন-পাঠন করতে পারবে কি না। পারলেও কবে থেকে পারবে দিনভর সে কথাই ভেবে চলেছেন নির্যাতিতার মা। ঘটনার পর ঘর থেকে বের হতেই ভয় পাচ্ছে ওই কিশোরী। আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না কিশোরীর বান্ধবীদেরও। তারা একা স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে৷ এক ছাত্রী কথায়, পুলিশ মানেই এখন তাদের কাছে আতঙ্ক। গোটা ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে প্রতিবেশীরা। তাঁদের প্রশ্ন, যাদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা তারাই যদি ভক্ষক হয়ে ওঠেন মেয়েরা কীভাবে রাস্তায় বের হবে? সেইসঙ্গে অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
যদিও এই ঘটনার পর পুলিশ আধিকারিকরা গ্রামে গিয়ে মানুষকে ভরসা যোগানোর চেষ্টা করছেন। গ্রামে পুলিশি টহল রয়েছে। কিশোরীর স্কুলের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যদিও তাতে আপত্তি জানিয়েছেন অন্য পড়ুয়ারা। পুলিশ সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানায় তাঁরা। ঘটনায় স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। সব মিলিয়ে এখনও থমথমে এলাকা। তবে বসিরহাটের পুলিশ সুপার শংকরপ্রসাদ বাড়ি জানান, হাড়োয়ার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। অভিযুক্ত এসআইকে রবিবার আদালতে তোলা হলে তাঁকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছন বিচারক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.