ধীমান রায়, কাটোয়া: ট্রেনের ধাক্কায় জখম হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাচ্ছিল একটি সারমেয়। তার আর্ত চিৎকার শুনে এগিয়ে গিয়েছিলেন এক বধূ। জরুরি কাজ ফেলে শুশ্রূষা করলেন কুকুরটির। এরপর ব্যথা উপশম হতেই সারমেয়টিকে পেটভরে মাংস-ভাতও খাওয়ালেন ওই বধূ। পুর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারে ঘটেছে এই ঘটনায় মুগ্ধ সকলে।
কয়েকদিন আগেই বর্ধমানে প্রসবের সময় একটি কুকুর ও তার শাবকদের পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল এক বধূর বিরুদ্ধে। পরে পুলিশের জালে ধরা পড়ে অভিযুক্ত। সেই ঘটনার পর ভাতার বাজারের বাসিন্দা টুম্পা রায়ের পোষ্যপ্রেমে মুগ্ধ এলাকাবাসী। জানা গিয়েছে, ভাতার বাজারের বাসিন্দা টুম্পাদেবীর স্বামী বিশ্বজিৎ রায় পেশায় ব্যবসায়ী। তাদের এক ছেলে মিশনে থেকে পড়াশোনা করছে। স্বামী-স্ত্রী বাড়িতে থাকেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, টুম্পাদেবী প্রথম থেকেই কুকুর ভালবাসেন। বাড়িতে একাধিক কুকুর রয়েছে। তার পাশাপাশি এলাকার রাস্তার কুকুর দেখতে পেলেই ডেকে এনে খাওয়ান নিয়মিত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত প্রায় ৯ টা নাগাদ বর্ধমান থেকে কাটোয়াগামী লোকাল ট্রেনটি ভাতার স্টেশনে ঢোকার মুখে কুকুরটি আহত হয়। প্রত্যক্ষদর্শী সজন মিঞা, আকবর শেখরা জানান, “ট্রেনটি ভাতার স্টেশনে ঢোকার মুখে খুব ধীর গতিতেই ছিল। ভাতার রেলগেটের কাছে রাস্তা পার করার সময় কুকুরটি ট্রেনের নিচে চলে যায়। ধাক্কা খেয়ে লাইনের উপরেই আটকে পড়ে ছটফট করতে শুরু করে কুকুরটি। ট্রেন চলে যাওয়ার পরই কুকুরটি সরে আসে, কিন্তু ততক্ষণে যন্ত্রণায় চিৎকার করতে শুরু করেছে সেটি।” স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কুকুরটি প্রাণে বাঁচলেও গুরুতর আহত হয়েছে। টুম্পাদেবী বাজারে ফেরার সময় সারমেয়টিকে উদ্ধার করে। সোমবার পর্যন্ত সারমেয়টিকে নজরে রেখেছেন টুম্পাদেবী। টুম্পাদেবীর স্বামী বিশ্বজিৎ বাবু বলেন, ” আমার স্ত্রী প্রথম থেকেই কুকুরপ্রেমী। রাস্তায় কোনও অসুস্থ কুকুর দেখলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এটাই ওর অভ্যাস।”
ছবি: জয়ন্ত দাস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.